ফের বন্যায় সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশিত: ৪:৫৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৫, ২০২২

ফের বন্যায় সিলেটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

Manual7 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: এক মাসের ব্যবধানে সিলেটে ফের বন্যা দেখা দিয়েছে। গেল কয়েকদিনের টানা বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার পাঁচ উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। পানি ঢুকে পড়েছে নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে।

সুরমা ও কুশিয়ারাসহ জেলার সবকটি নদীর পানি বৃদ্ধিও অব্যাহত রয়েছে। সুরমার পানি একাধিক পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে গত ১৫ থেকে সিলেটজুড়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছিল। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছিলেন জেলার প্রায় চার লাখ মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গেল কয়েকদিন থেকে সিলেটে অবিরাম বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া সিলেটের উজানে ভারতের মেঘালয় ও আসামের পাহাড়ী এলাকায়ও ভারী বর্ষন হয়েছে। এতে সিলেটের প্রধান দুই নদী সুরমা ও কুশিয়ারায় পানি বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে কোথাও নদীর ডাইক ভেঙ্গে আবার কোথাও তীর উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করা শুরু করে। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

Manual3 Ad Code

গোয়াইনঘাট উপজেলার বেশ কয়েকটি সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন স্থানে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার সদর, পূর্ব ও পশ্চিম জাফলং, মধ্য জাফলং, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, রুস্তুমপুর, তোয়াকুল ও লেংগুড়া ইউনিয়নের ৯০ শতাংশ এলাকা বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান জানান, এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বন্যায় বিপুল সংখ্যক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বন্যা কবলিত এলাকায় ৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে পানিবন্দি মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর ও দক্ষিণ রনিখাই এবং পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নেরও ৯০ শতাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। উপজেলা সদরের সরকারি অফিসেও পানি উঠেছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।

দক্ষিণ রনিখাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন এমাদ জানান, তাঁর ইউনিয়নের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। একমাসের মধ্যে দুইদফা বন্যায় এলাকার মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছেন। ত্রাণ তৎপরতাও অপ্রতুল।

Manual8 Ad Code

এদিকে, মঙ্গরবার রাত থেকে কানাইঘাট পৌরশহরে পানি প্রবেশ শুরু হয়েছে। সুরমা নদীর পানি তীর উপচে পৌরশহরে ঢুকছে। ক্রমেই পানি বাড়ছে। ইতোমধ্যে পৌরশহরের দোকানপাটে পানিতে উঠে গেছে। এছাড়া উপজেলার পূর্ব ও পশ্চিম লক্ষ্মীপ্রসাদ, সাতবাঁক, চতুল ও সদর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

Manual7 Ad Code

সারি ও পিয়াইন নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জৈন্তাপুর উপজেলারও বিস্তৃণ এলাকা তলিয়ে গেছে। ব্যহত হচ্ছে গ্রামীণ যোগাযোগ।

Manual1 Ad Code

সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর, জালালাবাদ, টুকেরবাজার ইউনিয়নসহ নদী তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে। খাদিমনগর ইউনিয়নের ঘোড়ামারা, আলীনগর, ছয়দাগ ও সাতগাছিসহ বিভিন্ন গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এদিকে, সুরমা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেট শহরের পানি নিষ্কাশন ব্যহত হচ্ছে। ছড়া ও খালের চেয়ে নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উল্টো সুরমার পানি শহরে প্রবেশ করা শুরু করেছে। ফলে নগরীর সোবহানীঘাট, কালিঘাট, ঘাসিটুলা, উপশহর ও ছড়ারপাড়সহ বিভিন্ন স্থান পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঢুকে মানুষের বিড়ম্বনা বাড়িয়ে দিয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বুধবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা, সারি, লোভা ও ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট ও সিলেট পয়েন্টে যথাক্রমে বিপৎসীমার ১১৪ ও ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এই দুই পয়েন্টে সুরমার পানি দ্রুত বাড়ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কুশিয়ারা নদীর পানি ফেঞ্চুগঞ্জে বিপৎসীমার ১৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমলসীদ, শেওলা ও শেরপুরেও কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমা ছুঁইছুঁই। সারিঘাটে সারি নদীর পানি ৫৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। লোভা ও ধলাই নদীর পানিও বেড়ে চলছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2022
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..