`মানবতার ফেরিওয়ালা’ বিয়ানীবাজারের জসিম মূলত শিশু যৌন নিপীড়ক

প্রকাশিত: ৭:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ৫, ২০২১

`মানবতার ফেরিওয়ালা’ বিয়ানীবাজারের জসিম মূলত শিশু যৌন নিপীড়ক

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মানবতার ফেরিওয়ালা বলে পরিচয় দেয়া সিলেটের বিয়ানীবাজারের জসিম উদ্দিন মূলত শিশু যৌন নিপীড়ক। মানব সেবার আড়ালে এবার তার পরিচয় শিশু যৌন নিপীড়ক হিসেবে। ১০ বছরের এক মেয়ে শিশুকে ধর্ষণ করে নতুন করে আলোচনা জন্মদেন জসিম। এ নিয়ে সিলেটে তোলপাড়া চলছে। জসিম উদ্দিন বিয়ানীবাজার উপজেলার বাড়ইগ্রামের সুরুজ আলী ছেলে। ফার্মেসী ব্যবসার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত। সিলেট নগরীর উপশহর এলাকাস্থ হোটেল গুলবাহারে ১০ বছরের এক মেয়ে শিশুকে ধর্ষণ করার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে। জসিম উদ্দিন মেয়েটিকে নিয়ে হোটেলে থাকাবস্থায় কৌশলে জসিম উদ্দিনের মোবাইল ফোন থেকে মেয়েটি তার পিতাকে অবস্থান সম্পর্কে তথ্য দেয়।

Manual5 Ad Code

পরে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ কৌশল অবলম্বন করে জসিম উদ্দিন ও ওয়াজিদ আলীকে দিয়ে দেহ ব্যবসায়ী হালিমার সাথে চুক্তিকরে মেয়েটিকে পূনরায় হোটেলে নিয়ে আসে। এরপর পুলিশ মেয়ে শিশুকে উদ্ধারের পাশাপাশি ধর্ষক জসিম উদ্দিন, দেহ ব্যবসায়ী হালিমা ও হোটেল গুলবাহারের ম্যানেজার ওয়াজিদ আলীকে গ্রেফতার করে। হালিমা সিলেটে ভাসমান অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে আসছেন। এছাড়া গুলবাহার হোটেলের ম্যানেজার ওয়াজিদ আলী জকিগঞ্জ উপজেলার দরিয়াপুর গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর ছেলে।

Manual6 Ad Code

সূত্র জানায়, মেয়েটির মা-বাবা দিনমজুর। সাত ভাইবোনের মধ্যে একমাদ্র মেয়েটি ৩য় শ্রেণীতে লেখা পড়া করত। হঠাৎ বাড়ি থেকে উধাও হওয়া শিশুটিকে খোঁজে না পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরাও হাল ছেড়েদেন। তাদের ধারণা ছিলো মেয়েটি আর হয়তো বেঁচে নেই। কিন্তু হঠাৎ করে মেয়েটি তার বাবার মোবাইল নাম্বরে ফোন করে তাকে উদ্ধার করার জন্য আকুতি জানানোর পাশাপাশি তাকে বিক্রি করা হয়েছে বলে তার বাবাকে জানায় সে। জসিম উদ্দিন বিয়ানীবাজারের বাসিন্দা হলে সিলেটেও তার মানবসেবা পরিচালিত হত। মানবসেবার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে জসিম নারীদের সিলেটের বিলাবহুল হোটেলে নিয়ে ভোগ করতেন। জসিম উদ্দিন আল ইনসাফ ব্লাড গ্রুপের সাথে জড়িত। এছাড়াও মা ব্লাড ফাউন্ডেশনের মডারেটরও। সেই সাথে কার্যনির্বাহী সদস্য নিরাপদ চিকিৎসা চাই বিয়ানীবাজার উপজেলার ও সহ পরিচালক কেন্দ্রীয় কমিটি গ্যালাক্সি সেচ্ছাসেবী সংগঠন।

পুলিশ জানায়, জসিম উদ্দিন দেহ ব্যবসায়ী হালিমার কাছ থেকে মেয়ে শিশুকে ভাড়া করে হোটেল গুলবাহারের ৫ম তলার ৫০৫ নাম্বার কক্ষে নিয়ে মেয়েকে ধর্ষণ করেন। এসময় মেয়ে শিশুটি জসিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে ওইদিন কৌশলে শিশুকন্যাটি তার পিতার মোবাইলে ফোন করে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে প্রযুক্তির সহায়তায় গোয়াইনঘাট থানাধীন সালুটিকর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মো. শফিকুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল (৩ জুন) দিবাগত-রাত থেকে সিলেট শহর ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় অভিযান পরিচালনা করে। এসময় বিয়ানীবাজার থানা পুলিশের সহযোগীতায় জসিম উদ্দিনকে তার বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। জসিম উদ্দিনের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিলেট নগরীর উপশহরস্থ গুলবাহার হোটেলের ম্যানেজার জকিগঞ্জ উপজেলার দরিয়াপুর গ্রামের মৃত মদরিছ আলীর ছেলে ওয়াজিদ আলীকে আটক করে পুলিশ।

Manual1 Ad Code

এরপর জসিম উদ্দিন ও ওয়াজেদ আলীকে আটকের পর শিশু কন্যাটিকে না পেয়ে তারা উভয়ের সহযোগিতা নিয়ে দেহ ব্যবসায়ী হালিমা বেগমকে মোবাইলে ওই শিশু কন্যাকে ৫ হাজার টাকায় চুক্তি করেন। হালিমা বেগম ৫ হাজার টাকার চুক্তি মতো শিশু কন্যাটিকে নিয়ে হোটেল গুলবাহারে যান। তবে এরআগে হালিমাকে বিকাশের মাধ্যমে ৫ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হয়। হোটেলে মেয়েটিকে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ হালিমাকে গ্রেফতার করে এবং শিশু কন্যাকে উদ্ধার করে। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের কচুয়ার পার গ্রামের ১০ বছর বয়সী শিশু মেয়েটি নিখোঁজ হয়েছিল গত ঈদুল আজহার ৩ দিন আগে। এ বিষয়ে ওই শিশুর পিতা গোয়াইনঘাট থানায় প্রথমে সাধারণ ডায়েরি ও পরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। প্রায় এক বছর পর অবশেষে ওই শিশুকন্যাটিকে উদ্ধার করেছেন গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ।

এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার ওসি আব্দুল আহাদ বলেন, ১০ বছরের মেয়েটির সাথে গত কয়েকমাসে যা হয়েছে তা এককথায় বর্বরতা। মেয়েটির মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে রাখা হয়েছে। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। মেয়েটিকে কাজ দেয়া ও অন্য কিছুর প্রলোভন দেখিয়ে নেয়া হয়েছে।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..