সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: ভূমি মন্ত্রণালয় আইন বিধি মোতাবেক সড়কের খাল রাস্তা ইজারা যোগ্য ভূমি নয়। সর্বসাধারনের ব্যবহার্য ভূমি পরিবেশ আইন ও বিধি রক্ষায় সুপ্রিম কোর্ট রীট মোকদ্দমা সমূহে সড়কের খাল-নালা-নদী, রাস্তা ভরাট বা বাণিজ্যিক স্থান ইজারা প্রদান বাধ্যতামূলক নিষেধ জারী করেছেন। অনেক মামলায় উচ্চ আদালত খাল, নদী, নালা, রাস্তা সংরক্ষণে আদেশ জারী করেছেন।
কিন্ত সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জে সরকারি সম্পদ মাটি ভরাট করে পূর্ব রামপুর মৌজা জে, এল ২৪৬ এর সরকারি ১নং খতিয়ান ভূক্ত সড়কে খাল (নয়ন জুলি) ৩৩ দাগ ১.১০ একর অর্থাৎ ১১০ শতক খাল (নয়ন জুলি) সড়কের খাল ইজারা নেওয়ার পায়তারা করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা ভূমি প্রশাসনের যোগসাজেসে স্থানীয় গোবিন্দগঞ্জের কতপিয় ভূমি খেকো চক্র গত ২২ সেপ্টেম্বর ৯৮৭ নং স্মারকে ইজারার জন্য গোপনে প্রস্তাব করা হয়। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বন্দোবস্ত প্রদান প্রক্রিয়া বাতিল করার জন্য গত ১৩ সেপ্টেম্বর গোবিন্দনগর গ্রামের মৃত. মো. আব্দুর রবের ছেলে মো. মামুনুর রশীদ ও ১৬ আগষ্ট উপজেলার গোবিন্দগঞ্জের আশরাফুর রহমান চৌধুরীর ছেলে এমদাদুর রহমান চৌধুরী (ছামী) সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বরাবর পৃথক পৃথক আবেদন করা হয়।
আবেদন সুত্রে জানা যায়, সরকারি মূল্যবান সম্পত্তি উপজেলার পূর্ব রামপুর মৌজার জে, এল নং ২৪৬, দাগ নং ৩৩ সড়কের খাল সরকারি ১নং খতিয়ান ভূক্ত ভূমি। ৩৩ নং দাগে সড়কের খাল (নয়নজুলি) জলাধার ও মৌজা নকশায় রাস্তা শ্রেণী যাহা মহাসড়কের ৩৪ নং দাগ সংলগ্ন নিকটবর্তী ভূমি ১নং সরকারি খতিয়ানের ৩৩, ৫, ১০, ও ২৮ নিকটবর্তী অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
আইনানুগ উচ্ছেদের মাধ্যমে সরকারি সম্পত্তি জলাধার সংরক্ষণ ও পানি নিস্কাশন বিঘিœত হওয়ায় বৃহত্তর এলাকায় মারাত্মক অসুবিধা সৃষ্টি হয়। উচ্ছেদ কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য লিখিত আবেদন করা হয়। আবেদনের প্রেক্ষিতে কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং ৮৮৬৫/২০১৯ দায়ের করা হয়। ডিভিশন ব্যাঞ্জ কার্যত: ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সদয় আদেশ প্রদান করেন। বর্ণিত আদেশ কার্যকর করার জন্য গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ইং তারিখে উপপরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে “জরুরি ব্যাবস্থা” নেওয়ার জন্য মামলার পক্ষ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ছাতককে পত্র প্রেরণ করা হয়।
সরকারি সম্পত্তি সংরক্ষণে উদাসীনতা ও আদালত অবমাননা জনিত কারনে সুপ্রিম কোর্ট বিভাগের সিনিয়র আইনজীবী বিকাশ পাল স্বাক্ষরিত ডিমান্ড ফর জাষ্টিস জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আদালত অবমাননা হচ্ছে মর্মে বিজ্ঞ আইনজীবি তার ডিমান্ড নোটিশের ৪নং ও ৫নং অনুচ্ছেদ সদয় অবলোকন করিতে মর্জি হয়। অনুরূপ রুহুর আমিন, এডভোকেট সুপ্রীম কোর্ট জাষ্টিস ডিমান্ড প্রেরণ করেন। বর্নিত ডিমান্ড নোটিশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, ছাতক কার্যালয়ে সংরক্ষিত আছে।
সরকারি মূল্যবান সম্পত্তি এবং অ-ইজারাযোগ্য বন্দোবস্ত বহির্ভূত ৩৩ নং দাগ সড়কের খাল (নয়নজুলি) নালার উপর হইতে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ না করায় জনস্বাস্থ্য ও সর্বসাধারনের বাণিজ্যিক ও আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। ৩৩, ৫, ১০ ও ২৮ দাগ ১নং খতিয়ান ভূক্ত সরকারি সম্পত্তি হইতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করায় সরকার ১৪২৭ বাংলা সনে কোন ইজারামুল্য থেকে বঞ্চিত। রীট পিটিশন নং ৮৮৬৫/২০১৯ এবং সরকারি সম্পত্তি আইনানুগ উচ্ছেদে অধীনস্থ জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতি এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ বলে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, সিলেট পূর্ণবাসনের ভূমি রাস্তা ৩৪ দাগ চলমান মহাসড়কে পার্শবতী ৩৩ দাগ খাল ও রাস্তা ব্রিজের গোড়া পাশে ২ ব্রিজের গোড়ায় কোন ভূমি ইজারা যোগ্য নয় মর্মে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিদের্শনা রয়েছে। সড়কের পাশে ১০মিটার এলাকায় কোন ধরনের স্থাপনা থাকবে না। এ মর্মে উচ্চ আদালত ১৫৪৬/২০১১ নং রীট মোকাদ্দমায় কার্যকর আদেশ প্রদান করেন। জনসাধারণের সংরক্ষণে ৩৮৫৫/২০০৩ রীট মোকাদ্দমায় রায় মান্য করে দেশের সকল জেলা প্রশাসককে স্বাক্ষরিত পত্র প্রদান করা হয়।

Sharing is caring!