সিলেট ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১:২০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০২২
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনায় দীর্ঘ ৯ বছর ধরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধত্ব নিয়ে দিন কাটছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা প্রলয় কান্ত দে বিপ্লব (৩৫)’র মানবেতর জীবন। এসময় সরকারি দলের তুকুড় নেতা হিসেবে বিপ্লব রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও অন্ধত্বের নিদারুণ কষ্টের জীবনে কেউ এগিয়ে আসেনি তার সাহার্য্য।ে সাবেক ছাত্রনেতা বিপ্লব সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের কালীজুরি গ্রামের বারিন্দ্র দেবের জ্যেষ্ট পুত্র।
আওয়ামী লীগ পরিবারের ছেলে হিসেবেই ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন বিপ্লব। লেখাপড়া করাকালীন সময়েই দারিদ্ররতায় বড় হওয়া শান্ত-সৃষ্ট ছেলেটি ছাত্র রাজনীতির পাশাপাশি একটি দোকানে চাকরি নিয়েছিল। ইচ্ছে ছিল পরিবারের দারিদ্রতা কাটিয়ে উঠার পাশাপাশি ছোট তিন ভাইয়ের দায়িত্ব নেওয়ার। মনের মধ্যে ছিল কতনা স্বপ্ন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে ছুটে চলেছিল সে।
দরিদ্র কোটায় আটকে পড়া ছাত্রনেতার যৌবনের সব সংগ্রাম ব্যর্থ করে দিল একটি মাত্র অনাকাঙ্খিত ঘটনা। আর এতেই শেষ হয়ে যায় বিপ্লবের জীবনের সব। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বিগত ৯ বছর ধরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে অন্ধত্বের নিদারুণ কষ্টে জীবন কাটছে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লবের।
ছাত্রনেতা বিপ্লবের জীবনের মতো তার পরিবারটিতেও এখন কষ্ট আর দুঃখ যেন নিত্যসঙ্গী। ৫ বছরের একমাত্র পুত্র সন্তানের মুখটাও দেখা হয়নি বিপ্লবের। আর নিজের আয় উপার্জন না থাকায় বেকার হয়ে জীবনযুদ্ধে ছোট ভাইয়ের সামান্য উপার্জনের উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে অন্ধ বিপ্লবের। এ অবস্থায়ও দলীয় কোন নেতাকর্মীও এতদিন কোন খোঁজ খবর নেননি তার। ফলে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে পরিবারটি। জীর্ণ-শীর্ণ চালার ঘরে থাকছে অসহায় এ পরিবারটি।
জানা গেছে, বিগত ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বিশ্বনাথ শহরের পুরান বাজারস্থ সুসমিতা লাইব্রেরীতে চাকরি করতো বিপ্লব। ওইদিন সন্ধ্যায় ওই দোকানে ফ্লেক্সিলোড নিয়ে এক ছাত্রলীগ নেতার সাথে বাক-বিতন্ডা হয় দোকান মালিকের। এরপর কিছুক্ষণ পর ছাত্রলীগ নেতারা দলবল নিয়ে দোকানে হামলা চালিয়ে দোকান ভাংচুর করতে থাকে।
এসময় দোকানে থাকা বিপ্লবের মাথার পিছনে রড দিয়ে ও বাম চোখের উপড়ে চাইনিজ কোড়াল দিয়ে আঘাত করে তারা। এতে গুরুতর আহত হয় বিপ্লব। এ ঘটনায় দোকান মালিক বাদি হয়ে মামলা করেছিলেন। আবার কিছুদিন পরে আপোষে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। কিন্তু ঘটনার শিকার বিপ্লব দীর্ঘদিন চিকিৎসা করালেও ধীরে ধীরে তার দুটি চোখ নষ্ট হয়ে অন্ধ হয়ে যায়।
গত ৫ বছর ধরে অন্ধ হয়েই জীবন কাটাতে হচ্ছে তার। অন্ধ হওয়ার আগে সংসারও গড়েছিলো সে। একটি ফুটফুটে পুত্র সন্তানও হয় তার। কিন্তু পুত্রের মুখ দেখার ছয় মাস পূর্বেই পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যান বিপ্লব। দেশের সব বড় বড় হাসপাতালে দু’দু বার চোখের অপারেশন করলেও চোখ ভাল হয়নি। এখন চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে অপারেশন করলে চোখ দুটি ঠিক হয়ে যাবে চিকিৎসকের এমন পরামর্শে অপারেশন করতে চাইলেও টাকার অভাবে তা আর করতে পারছেন তার পরিবার।
চেন্নাইয়ে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫ লাখ টাকা। এখন তার পরিবার প্রবাসী ও বিত্তবানদেরর কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে। মাত্র ৫ লাখ টাকা হলেই আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবে বিপ্লব। অসহায় এ পরিবারটির কষ্ট লাঘবে ও বিপ্লবের চিকিৎসায় মানবিক সহায়তার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রাও।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd