সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:০৭ অপরাহ্ণ, জুন ১, ২০২২
বিশেষ সংবাদদাতা :: সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শহিদ স্মৃতি টুকের বাজার উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে হামলার মদদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। হামলায় মামুন মিয়া ও নাঈমুল ইসলাম নামে নবম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ভিকটিমের আত্মীয় মোঃ শাহ জাহান বাদী হয়ে কোম্পানীগঞ্জ থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ১০ টার সময় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনকে ইস্যু করে দুই শিক্ষার্থীকে গালাগাল এবং আক্রমণ করার চেষ্ঠা করেন অধ্যক্ষ শাহ মোঃ গোলাম নবী ও তার অনুগত ২০/২১ বখাটে। এক পর্যায়ে দুই শিক্ষার্থী প্রাণ ভয়ে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে আশ্রয় নিলে সেখানেও হামলা করেন বহিরাগত বখাটেরা। অধ্যক্ষ ও তার বাহিনী কতৃক দুই শিক্ষার্থীকে লাঞ্চিত করার এক পর্যায়ে সজিব নামে আরেক শিক্ষার্থী অধ্যক্ষকে তার কলেজ ভর্তির বিষয়ে জানতে চাইলে তাকেও লাঞ্চিত করেন অধ্যক্ষ ও তার বাহিনী। ঘটনার খবর পেয়ে মামলার বাদী শাহ জাহান ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাকেও লাঞ্চিত করেন অধ্যক্ষ বাহিনী। এক পর্যায়ে মামুন,নাঈমুল ও সজিবকে অধ্যক্ষ শাহ গোলাম নবীর কক্ষ থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্ঠা করলে বহিরাগত ১৫/১৬ জন বখাটে দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রের ভয় দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। প্রাণ ভয়ে দুই শিক্ষার্থী পরের দিন বিদ্যালয়ে যায়নি। তাদেরকে হামলার উদ্দেশ্যে বখাটেরা অস্ত্রসজ্জিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করলে এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। একপর্যায়ে বুধবার ০১ জুন দুপুর সারে বারটায় মামুন ও নাঈমকে একা পেয়ে রড দিয়ে পিটিয়ে ঘোরতর আহত করেন বখাটেরা। আহত দুই শিক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
এর আগেও অধ্যক্ষ শাহ মোঃ গোলাম নবীর বিরুদ্ধে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনে দূর্ণীতির অভিযোগ উঠেছিল। দীর্ঘদিন ধরে কারচুপির মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনের প্রতিবাদে অধ্যক্ষের অপসারনের দাবীতে এলাকায় বিভিন্ন সময় মিছিল মিটিং সমাবেশ হয়েছে। সম্প্রতি বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠনে কারচুপি ও নিজস্ব ব্যক্তি দিয়ে কমিটি গঠনের চেষ্টা এবং দূর্ণীতির অভিযোগে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরা লিখিত অভিযোগ করেন স্থানীয় এক সংবাদকর্মী।
অধ্যক্ষ শাহ মোঃ গোলাম নবীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ দায়ের ও নির্বাচনী ইস্যুতে অভিযোগকারীর ছোট ভাই ও ভাতিজার উপর হামলা হয় বলে জানান স্থানীয় সংবাদকর্মী তারিকুল ইসলাম।
মামলার বাদী শাহ জাহান বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে আমার দুই চাচাতো ভাই ও ভাতিজাকে তাদের জিম্মি দশা থেকে উদ্ধার করতে বখাটেরা আমার উপরও হামলার চেষ্টা ও হত্যার হুমকি দেয়। প্রাণ ভয়ে আমার ভাতিজা ও চাচাতো ভাই পরের দিন বিদ্যালয়ে না গেলেও বখাটেরা ফাদ পেতে হত্যার জন্যে হামলা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করি।
উল্লেখ্য,হামলায় আহত নাঈমুল ইসলামের মা জরিনা বেগম বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির চলমান নির্বাচনে অভিভাবক সদস্যপ্রার্থী হয়েছিলেন। শাহ মোঃ গোলাম নবীর অনুগত স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মী জরিনা বেগমকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্যে চাপ সৃষ্টি করেন। নির্বাচনে শাহ মোঃ গোলাম নবী তার অনুগত প্রার্থীদের হারের ভয়ে অসৎ উপায়ে কমিটি গঠনের চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নির্বাচনে অসৎউপায় অবলম্বন ও দূর্ণীতির অভিযোগ এনে জরিনা বেগমসহ তিন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
অধ্যক্ষ শাহ মোঃ গোলাম নবী জানান, গতকালের ঘটনাটি মিটমাট করে দেওয়া হয়েছে। আজকের ঘটনার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। যদি এইরকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকে তবে থানায় মামলা হবে কেন? ম্যানিজিং কমিটিকে জানালেই তো হতো।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ফয়েজ আহমদ জানান, অভিযোগ দায়ের করার সাথে সাথে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd