সিলেট ১০ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৬ই রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:২৩ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরে ছোট গাড়ি তথা কার মাইক্রোবাস দুই প্রকার সার্ভিস ও প্রাইভেট। সরকারী হিসাবমতে সার্ভিস গাড়ির সংখ্যা দুশ’র মত। আর বাকি সব প্রাইভেট। কিন্তু বাস্তবে বেআইনী সার্ভিস দিচেআছ কয়েক হাজার প্রাইভেট কার মাইক্রেবাস। রাস্তা দখল করে গড়ে তুলেছে শত শত অবৈধ স্ট্যান্ড। খোদ নগর সংস্থা সিলেট সিটি কর্পোরেশনও (সিসিক) জানে না নগরে গাড়ির অবৈধ স্ট্যান্ডের সংখ্যা কত। সিটি কর্তৃপক্ষ বাসাবাড়ি দোকানপাট, মার্কেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেঙ্গে এবং উচ্ছেদ করে রাস্তা সম্প্রসারন করতে পারলেও উচ্ছেদ করতে পারেন নি অবৈধ স্ট্যান্ড। অবৈধ স্ট্যান্ড ব্যবসায়ীরা যেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে সিটি মেয়রের প্রতি। আর এ চ্যালেঞ্জে হার মানতে হচ্ছে নগর পিতাকে। কয়েক মাস আগে এই অবধৈ স্ট্র্যান্ড নিয়ে মেয়রের সাথে পরিবহণ শ্রমিকদের সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৬জন। বন্দুক নিয়ে মেয়রকে গুলি করতে এগিয়ে আসে পরিবহন শ্রমিক নামধারী এক সন্ত্রাসী। যদিও তাৎক্ষণিক পুলিশের হাতে ধরা গড়ে সে। এ ঘটনায় মামলা হয়েও শেষ পর্যন্ত আপোসে যেতে হয়েছে। স্ট্যান্ডবাজদের কাছে হার মানতে হয়েছে নগরপিতাকে।
ফলে ব্যস্ততম সকল পয়েন্টসহ নগরে যেখানেই রাস্তা সেখানেই অবৈধ স্ট্যান্ড। নগরের যে সড়কই সম্প্রসারিত হচ্ছে, সেখানেই গড়ে উঠছে অবৈধ স্ট্যান্ড। এসব স্ট্যান্ড থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদাও তোলা হয়। আর এই চাঁদার টাকা ভাগ-বাটোয়ারা করে প্রশাসনসহ অন্যদের ম্যানেজ করেই চলছে অবৈধ স্ট্যান্ডগুলো। পরিবহন শ্রমিক নামধারীরা বিভিন্ন সমিতি নাম দিয়েই এই স্ট্যান্ডগুলো বসিয়ে দেদারছে করছেন চাঁদাবাজি।
সিলেট নগরের ব্যস্ততম চৌহাট্টা ও ভিআইপি রোড ঘিরে গড়ে ওঠেছে কার ও মাইক্রোবাসের ৫টি অবৈধ স্ট্যান্ড। একইভাবে আম্বরখানা পয়েন্টের চার মোড়ে চারটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড। আম্বরখানার আশপাশে আছে আরো একাধিক স্ট্যান্ড। শুধু আম্বরখানা থেকে মজুমদারি পর্যন্ত রয়েছে চারটি অটোরিকশা স্ট্যান্ড। কোর্ট পয়েন্ট ও সুরমা পয়েন্ট ঘিরে রয়েছে ছোট ৭টি স্ট্যান্ড। নগরভবনের সামনে রয়েছে নৈশকালীন সিএনটি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড, একইভাবে রংমহল পয়েন্ট, আম্বরখানা, মেডিক্যাল রোড, সোবহানীঘাট, উপশহর, টিলাগড়, মদিনা মার্কেট, ওসমানী এয়ারপোর্ট এলাকায় ১১টি স্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার মোড়ে গড়ে উঠেছে অটোরিকশা ও টেম্পো স্ট্যান্ড। নগরের সোবহানীঘাট, মেন্দিবাগ, সরকারি পাইলট স্কুলের সামনে, শেখঘাট, সার্কিট হাউস রোড, সুরমা পয়েন্ট, দর্শনদেউড়ি এবং আলমপুরে রয়েছে ট্রাকের অবৈধ স্ট্যান্ড। ওসমানী উদ্যান শাহী ঈদগাহ মদিনা মার্কেট, টিলাগড়,দক্ষিণ সুরমার বাবনা পয়েন্ট, স্টেশন রোড, কদমতলী শাহজারাল ব্রিজমোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব পয়েন্টে একাধিক স্ট্যান্ড রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। নগরের সুনামগঞ্জ রোডের সুবিদবাজার, চৌহাট্টা, নাইওরপুল, শাহজালাল ব্রিজ, কদমতলী, ওসমানী এয়ারপোর্ট এবং শহরতলীর কুমারগাঁও, শাহপরান ও চণ্ডিপুল রয়েছে কুড়িটিরও বেশি অবৈধ স্ট্যান্ড রয়েছে।
যত্রতত্র অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে ওঠা ও চাঁদাবাজির ফলে যানজট এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। প্রবাসীবহুল সিলেটে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এখন গাড়ির বহুমুখী ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় পরিস্থিতির আরো অবনতি হচ্ছে। নগরে প্রাইভেট কারগুলোও এখন অবৈধভাবে গাড়ি ভাড়া ব্যবসায় ঝুঁকে পড়েছে। ফলে একের পর এক অবৈধ স্ট্যান্ড গড়ে উঠছে। অবস্থাদৃষ্টে পাইভেট আর সার্ভিস গাড়ি বলতে এখন আর পৃথক কিছুই নেই।
সিলেটের অন্যতম ব্যস্ততম চৌহাট্টা-আম্বরখানা সড়কের দুই পাশও সিভিল সার্জনের অফিসের সামন দখল করে কমপক্ষে ৩০০ প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস রাখা হয়। সুবিদবাজারে প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের সামনেও একটি স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। এখন এখানে গাড়ির সংখ্যা ৬০ থেকে ৬৫টি। এসব স্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রণ করে পৃথক সমিতি।
সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরাও ভাবছি। এরই মধ্যে ট্রাক টার্মিনাল বড় করে অন্যত্র নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও উন্নয়নকাজ করে বড় করা হয়েছে। ছোট গাড়িগুলোর জন্য এরই মধ্যে চারটি জায়গা নির্ধারণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি গাড়ি চলাচলের ক্ষেত্রে আমরা ভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছি। আশা করছি, শিগগিরই এসবের সমাধান করা যাবে।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd