লকডাউনেও ভোলাগঞ্জে চলছে পাথর লুট

প্রকাশিত: ২:২১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৬, ২০২১

লকডাউনেও ভোলাগঞ্জে চলছে পাথর লুট

Manual1 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : লকডাউনের সুযোগে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারিসংলগ্ন রেলওয়ের রজ্জুপথের (রোপওয়ে) সংরক্ষিত এলাকায় পাথর লুটপাট শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে এক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় রাতে পাথর লুটপাটের বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।

Manual5 Ad Code

নিহত শ্রমিকের নাম জহিরুল ইসলাম (২৪)। সিলেট সদর উপজেলার জালালাবাদ থানা এলাকার মানসিনগর গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে জহির। নিহত শ্রমিকের লাশ সরিয়ে ফেলা হলে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে বৃহস্পতিবার বিকেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা লাশ উদ্ধার করে পুলিশে হস্তান্তর করেন।

Manual4 Ad Code

এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির ধলাই নদ হয়ে একদল পাথরশ্রমিকের সঙ্গে জহির রজ্জুপথের সংরক্ষিত এলাকায় (বাংকার) প্রবেশ করেন। সেখান থেকে পাথর উত্তোলন করে নৌকায় করে নিয়ে যাওয়ার পথে ঝড়ে পাথরবাহী নৌকা ডুবে যায়। সকাল ১০টার দিকে জহিরের লাশ উদ্ধার করে লুকিয়ে ফেলার চেষ্টা করেন তাঁর সহযোগীরা। খবর পেয়ে ভোলাগঞ্জ ফাঁড়ির বিজিবি সদস্যরা লাশ উদ্ধার করেন। বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল পাথরশ্রমিকের লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানিয়েছেন, লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি দুর্ঘটনা না অন্য কিছু—এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

নিহত জহিরের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, জহিরসহ তার আত্মীয় চারজন শ্রমিককে দ্বিগুণ মজুরি দেওয়ার কথা বলে বুধবার রাতে ধলাই নদে নিয়ে যাওয়া হয়। পরদিন সকালে জানানো হয়, ঝড়ে নৌকাডুবিতে তার মৃত্যু হয়েছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পাথর পরিবহনে স্থল কিংবা জলযানের বিকল্প হিসেবে ভোলাগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জের ছাতকে রজ্জুপথ স্থাপন হয় ১৯৬৪ সালে। এ রজ্জুপথে ১১৯টি খুঁটি রয়েছে। ভোলাগঞ্জ রজ্জুপথের সংরক্ষিত এলাকার লোডিং স্টেশনকে ‘বাংকার’ বলে ডাকা হয়। প্রায় ৩৫৯ একর আয়াতনের ওই এলাকা ধলাই নদ ও ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির পাশে হওয়ায় সেখান থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করছে একটি চক্র।

এলাকাবাসী জানান, লকডাউন ঘোষণার পর থেকে একটি চক্র রাতের বেলা রজ্জুপথের সংরক্ষিত এলাকা খোড়াখুঁড়ি করে পাথর তুলছিল। জহির সেই চক্রের মাধ্যমে মজুরির ভিত্তিতে পাথর উত্তোলনের কাজ করতে গিয়ে মারা গেছেন। তাকে পাথর উত্তোলনের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন শাহাব উদ্দিন, কেফায়েত উল্লাহ ও রাসেল মিয়ার নেতৃত্বে একটি চক্র। প্রতিদিন রাতে রজ্জুপথ এলাকায় নৌকাপ্রতি ২০ হাজার টাকা অগ্রিম আদায় করে চক্রটি পাথর উত্তোলনের ব্যবস্থা করে দেয়।

Manual3 Ad Code

এদিকে জহিরের মৃত্যুর ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত করে এই চক্রের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশ, বিজিবি ও রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীকে (আরএনবি) নির্দেশ দিয়েছে।

Manual4 Ad Code

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য বলেন, রজ্জুপথের সংরক্ষিত এলাকার মাটির নিচে পাথর থাকায় পার্শ্ববর্তী পাথর কোয়ারিতে কাজ করার সূত্র ধরে একশ্রেণির পাথরখেকো চক্র নানা কৌশলে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে লকডাউনের সুযোগে ওই চক্রের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
সূত্র : প্রথম আলো

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..