নগরীতে ভিক্ষুক গ্যাংয়ের ভয়ংকর সদস্য

প্রকাশিত: ৪:২৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০১৯

নগরীতে ভিক্ষুক গ্যাংয়ের ভয়ংকর সদস্য

Manual5 Ad Code

জহিরুল ও জোৎস্না কথিত স্বামী-স্ত্রী। এরা ছোট শিশুদের সংগ্রহ করে গরম ছ্যাঁকা দিয়ে শরীরে দগদগে ঘা করে। এরপর তাকে ঘুমের ওষুধ দিয়ে অচেতন করে নগরীর সিগন্যালে সিগন্যালে ভিক্ষা করে তারা।

দীর্ঘদিন ধরে এ পেশায় থাকলেও কয়েক দিন আগে সানজিদা নামে ৭ মাসের এক শিশুকে অচেতন করে ভিক্ষাবৃত্তির সময় ফেঁসে যায় জহিরুল ও জোৎস্না। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে তারা এখন কারাগারে। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলছে শিশুটির চিকিৎসা।

পুলিশ বলছে, এরা ভয়ংকর ভিক্ষুক গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য। ভিক্ষাবৃত্তির নেপথ্য নায়কদের খুঁজে বের করতে এদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

পুলিশ সদর দফতরের সিনিয়র এএসপি সুলতানা ইশরাত জাহান বলেন, ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় আমার গাড়িটি শিক্ষাভবন সিগন্যালে থামে। এ সময় ৭ মাস বয়সী ওই শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় কোলে নিয়ে ভিক্ষা করতে করতে আমার গাড়ির কাছে আসে জহিরুল নামের লোকটি।

Manual8 Ad Code

শিশুটিকে অচেতন এবং পিঠে পোড়া দগদগে ঘা দেখে আমি জিজ্ঞাসা করলাম বাচ্চাটার কি হয়েছে? সে বলল পুড়ে গেছে। জিজ্ঞেস করলাম, কিভাবে পুড়ল। সে জবাবে বলল, আমার বাচ্চা। তারপর বললাম, বুঝেছি তোমার বাচ্চা, তুমি গাড়িতে উঠ। তোমাকে আমি হাসপাতালে নিয়ে যাই।

বাচ্চার অবস্থা কিন্তু ভালো না। তার চিকিৎসা দরকার। আমি তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেই। তখন ‘চিকিৎসা লাগবে না’ বলে ওই লোক বাচ্চা নিয়ে দৌড় দেয়। এতে আমার সন্দেহ হয়।

আমি হাইকোর্ট মাজারের সামনে গাড়ি রেখে শাহবাগ থানার টহল পুলিশের সহায়তা নেই। এরপর জহিরুল ও তার কথিত স্ত্রী জোৎস্নাকে আটক করি।

Manual2 Ad Code

শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাই। এ ব্যাপারে শাহবাগ থানায় একটি মামলা হয়। এরপর জহিরুল ও জোৎস্নাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার বাদী শাহবাগ থানার এসআই শফিউল আলম বলেন, জহিরুল ও জোৎস্না জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, শিশুটি তাদের নয়। এক মহিলা হাইকোর্ট মাজার এলাকায় থাকত। ৭-৮ মাস আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওই নারী বাচ্চাটি প্রসব করে।

এর কয়েকদিন পরে তাদের বাচ্চাটি দিয়ে ওই নারী সেখান থেকে চলে যায়। তিনি বলেন, তার কথায় যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। তাছাড়া শিশুটির শরীর কিভাবে পুড়েছে তা তারা স্পষ্ট করেনি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, তারাই গরম কোনো কিছুর ছ্যাঁকা দিয়ে ওই ঘা করেছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার এসআই জসিম উদ্দিন বলেন, জহিরুল ও জোৎস্নার কথাবার্তায় যথেষ্ট অসংলগ্নতা রয়েছে।

এরা ভিক্ষুক গ্যাংয়ের সক্রিয় সদস্য হতে পারে। কারা নেপথ্যে থেকে এদের দিয়ে এভাবে ভিক্ষা বাণিজ্য করাচ্ছে, তা অনুসন্ধান করতে জহিরুল ও জোৎস্নাকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

Manual5 Ad Code

তবে সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, জহিরুল ও জোৎস্না শিশু সংগ্রহ করে ওই শিশুকে উচ্চমাত্রার ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে সিগন্যালে সিগন্যালে ভিক্ষাবৃত্তি করে।

এরা এক সিগন্যালে ৭ থেকে ১০ দিন অবস্থান করে, এরপর সেখান থেকে কেটে পড়ে। এ চক্রের আরও অনেক সদস্য রাজধানীতে সক্রিয় রয়েছে।

Manual5 Ad Code

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশু সানজিদা নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তাছাড়া অতি মাত্রায় ঘুমের ওষুধ খাওয়ানোর কারণে শিশুটির শরীরে আরও নানা ব্যাধি রয়েছে।

সূত্রঃযুগান্তর

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..