সিলেট ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১লা জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:০৯ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মুক্তিযুদ্ধ একটি জাতির জীবনে পরম গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। সে মর্যাদার অধিকারী প্রত্যক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারীরা। যে যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন বাঙালি সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি অংশ নেন এ দেশের অকুতোভয় কয়েক লাখ বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধা। দেশকে হানাদারমুক্ত করতে নিজের জীবন বাজি রেখে তারা অস্ত্র ধরেছিলেন। স্বাধীনতার পর সে বিজয়ী বীরদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সরকার কর্তৃক দেয়া হয় একটি সনদ। তৈরি করা হয় মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা।
সম্প্রতি অভিযোগ উঠেছে সে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কিছু সনদধারীদের নিয়ে। সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার এক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে যাবৎ ব্যাপক আনাগোনা শুরু হয়েছে। জকিগঞ্জ উপজেলার ওই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কারণে বিচলিত আসল মুক্তিযোদ্ধারা। মৃত আরজদ আলীর পূত্র আমির আলী ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা তাকে কখনও যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে দেখেনি ও তাকে কেউ চেনে না এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। স্থানীয়রা বলেন, আমির আলীর বিরুদ্ধে দুদকে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে থলের বিড়াল।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানয়িছেন, আগামী ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করা হবে। এর ফলে, বেসামরিক ক্ষেত্রে শুধুমাত্র লাল মুক্তিবার্তায় নাম এবং ভারতীয় গেরিলা বাহিনীর তৈরী করা তালিকার বাইরে যারা সনদ নিয়েছেন তাদের সনদ বাতিল বলে গণ্য হবে। এরকম বাতিলযোগ্য ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা কমবেশি ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার হতে পারে বলে মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে। এখন পর্যন্ত তদন্ত হয়নি জকিগঞ্জের ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আমির আলীর।
সূত্রে জানায়, জকিগঞ্জ উপজেলার সকড়া গ্রামের মৃত আরজদ আলীর পূত্র মো. আমির আলীকে নিয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে নানা গুঞ্জন বিরাজ করছে। অভিযোগ রয়েছে,আমির আলী ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধের সময় ছিলেন রাজাকার। সে হিন্দু বাড়ী লুটপাট সহ হানাদার বাহিনীর গোয়েন্দা হিসাবে কাজ করেছে। বাংলাদেশে স্বাধীন হওয়ার পর সে দীর্ঘদিন ভারতে থাকে এবং পরে সে যখন দেশে ফিরে তখন মুক্তিযুদ্ধের ১০ বছর পার হয়ে গেছে। ১৯৮১ সালের পরে সে হাল গাট গ্রামে খলিল মিয়ার বাড়িতে ঘরের মেরামতের কাজ করতে গিয়ে উপর থেকে পড়ে তার পা ভেঙ্গে যায়এবং সে খোড়া হয়ে যায়। এই পা নিয়ে সে আর্থিক সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে থাকে। সে একজন চিহিৃত সন্ত্রাসী হিসাবে এলাকায় তার পরিচিতি ছিলো এবং ১৯৭১ সালের আগে সে কয়েকবার এলাকার চিহিৃত অপরাধী প্রমানীত হয়ে কারাভোগ করে। তার প্রমাণ হয়তো এখন পর্যন্ত থানা-আদালতে খোঁজ নিলে পাওয়া যাবে। বর্তমানে আমির আলী রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন কাজে জড়িত রয়েছে। গত জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি জামায়াতে পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
স্থানীয়দের দাবি সে কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হল, তাকে কারা সহযোগিতা করে গেজেটে নাম উঠিয়েছে। সে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের অর্থের বিরাট একটা অংশ হাতিয়ে নিচ্ছে। বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। দুদকের তদন্তে বেরিয়ে আসবে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আমির আলীর সব তথ্য। তাই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী কাছে এলাকাবাসীর জোর দাবি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd