বিশ্বনাথে ইটভাটা শ্রমিক সুলতান খুনের নেপথ্যে প্রথম স্ত্রী!

প্রকাশিত: ৫:৫৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৯

বিশ্বনাথে ইটভাটা শ্রমিক সুলতান খুনের নেপথ্যে প্রথম স্ত্রী!
মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ থেকে :: পারিবারিক কলহের জেরেই সিলেটের বিশ্বনাথে ইটভাটা শ্রমিক সুলতান মিয়া খুন হয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছেন তার প্রথম স্ত্রী রোজিনা বেগম! এই বিষয়কে সামনে রেখেই এগিয়ে চলছে চাঞ্চল্যকর এ খুনের তদন্ত কাজ। এছাড়া, এই খুনে ঠিক কারা বা কতজন অংশ নিয়েছে-তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। ঘটনার তিনমাসের মাথায় এসে এমনটিই জানিয়েছে তদন্ত সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্র। সূত্রটি আরও বলছে, ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে কোথাও খুন করে সুলতানের লাশ ইটভাটার অদূরে ফেলে যায় দুর্বৃত্তরা। এদিকে, তদন্তের প্রথম ধাপ হিসেবে ঘটনার পরপরই রোজিনা ও সুহেল আহমদ নামে এক ইটভাটা শ্রমিককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। রোজিনা কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার শিমুলকান্দি গ্রামের মতি মিয়ার মেয়ে।
গত বছরের ৩ নভেম্বর শনিবার সকালে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা (দক্ষিণপাড়া) গ্রামের ইছরাব আলীর বাড়ির সামনে বিশ্বনাথ-রামপাশা সড়ক থেকে স্থানীয় আজিজনগরস্থ এআর ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিক, সুনামগঞ্জ জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার দুর্বাকান্দা পাতাইরা গ্রামের আলকাছ মিয়ার পুত্র সুলতান মিয়ার মাথা বিচ্ছিন্ন লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরদিন রবিবার রাতে তার বড়ভাই লোকমান মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী রেখে বিশ্বনাথ থানায় মামলা (নং-৪) দেন।
জানা গেছে, প্রথম স্ত্রী রোজিনা বেগম বিয়ের এগারো বছরে এসেও নিঃসন্তান থাকায় তার সম্মতিতেই দ্বিতীয় বিয়ে করেন সুলতান। কিন্তু দ্বিতীয় বিয়ের পরেই দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হওয়ায় রোজিনার রোষানলে পড়েন সুলতান ও তার দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী। বিভিন্ন সময়ে নানা ধরণে হুমকী ও অপ্রীতিকর কর্মকান্ড ঘটাতে থাকেন রোজিনা। এমনকি সুলতানকে ‘বাপ’ ডাক শোনারও সুযোগ দেবেন না বলে হুমকী দিতেন তিনি। ঘটনার আগের দিন ২ নভেম্বর শুক্রবার সকালে স্বামীর বাড়ি সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার দুর্বাকান্দা পাতাইরা গ্রাম থেকে আপন ছোটভাই শফিকুলকে সাথে নিয়ে সিলেট শহরে আসেন রোজিনা। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিশ্বনাথের স্থানীয় আজিজনগরস্থ এআর ব্রিক ফিল্ডে কর্মরত সুলতানকে শহরে নিয়ে গিয়ে পরে ভৈরবে যান তারা। পরদিন সকালে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা (দক্ষিণপাড়া) গ্রামের ইছরাব আলীর বাড়ির সামনে বিশ্বনাথ-রামপাশা সড়কে মেলে তার মাথাবিচ্ছিন্ন লাশ।
সে সময় তার সাথে কাজ করা শ্রমিকরা সাংবাদিকদের জানান, সুলতান ২ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ১০টায় সিলেট শহরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে নিজ কর্মস্থল এআর ব্রিক ফিল্ড থেকে বের হয়।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ঘটনার পরপরই সুলতানের স্ত্রী রোজিনার সাথে কথা বললে তার কথার ধরণ রহস্যের সৃষ্টি করে। রোজিনা দাবী করেন, সুলতান তাকে ও তার ভাইকে ভৈরবের বাসে তুলে দিয়ে কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। কিন্তু তাদের মোবাইল ফোনের কল ডিটেইলস রেকর্ড (সিডিআর) ঘেটে দেখা যায়, সুলতান তাদের সাথে ভৈরব পর্যন্ত গিয়েছেন। পরদিন বিশ্বনাথের অই ইটভাটার অদূরে মেলে তার মাথা বিচ্ছিন্ন লাশ। ঘটনার পর থেকেই লাপাত্তা রয়েছেন রোজিনার ছোটভাই শফিকুল।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2019
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
232425262728  

সর্বশেষ খবর

………………………..