সিলেট চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

প্রকাশিত: ৯:২২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২, ২০১৮

সিলেট চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

Manual4 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হলো সিলেট চিড়িয়াখানার। শুক্রবার বিকেলে টিলাগড় ইকোপার্কে এ চিড়িয়াখানার উদ্বোধন করেন জাতীসংঘের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবুল মোমেন।

এদিকে, উদ্বোধনের দিনই চিড়িয়াখানায় ঢল নামে দর্শনার্থীদের। বিকেল থেকে দলে দলে দর্শনার্থীরা জড়ো হন চিড়িয়াখানায়।

বন বিভাগের মালিকানাধিন নতুন চালু হওয়া এই চিড়িয়াখানার ইজারা নিয়েছে তালহা এন্টারপ্রাইাজ। এই প্রতিষ্ঠানের অংশীদার সুবেদুর রহমান মুন্না বলেন, প্রথমদিনে আমরা প্রচুর সাড়া পেয়েছি। শুক্রবার ৮ থেকে ১০ হাজার দর্শনার্থী চিড়িয়াখানা দেখতে আসেন। প্রথমদিন হওয়ায় ও দর্শনার্থী চাপ বেশি থাকায় শুক্রবার আমরা কোনো ফি ছাড়াই সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেই।

তিনি জানান, শনিবার থেকে টিকিট কেটে চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করতে হবে। টিকিট ফি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ১০টাকা, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৫টাকা ও শিক্ষার্থীদের জন্য ২টা নির্ধারণ করা হয়েছে। সপ্তাহে সাতদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত এই চিড়িয়াখানা উন্মুক্ত থাকবে।

Manual2 Ad Code

শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আবুল মোমেন ছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সিলেট প্রেসক্লাব সভাপতি ইকরামুল কবির, সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ প্রমুখ। বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এসএম মনিরুল ইসলাম অতিথিদের নিয়ে এই চিড়িয়াখানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।

Manual7 Ad Code

এরআগে গত মঙ্গলবার ভোরে গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে সিলেট চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয় দুটি জেব্রাসহ ৯ প্রজাতির প্রাণী। এরমধ্যে দুটি জেব্রা ছাড়াও রয়েছে- হরিণ ২টি, ময়ূর ১২টি, গোল্ডেন ফিজেন্ট পাখি ১টি, সিলভার ফিজেন্ট পাখি ৩টি, ম্যাকাও পাখি ৩টি, আফ্রিকান গ্রে পেরট ৪টি, সান কানিউর ৪টি, ছোট লাভ বার্ড ৩০টি ও অজগর ১টি।

Manual8 Ad Code

বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার ৫৮টি প্রাণী নিয়ে আসা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে আরও দুটি হরিণ আসবে। বাঘ নিয়ে আসা হবে ডিসেম্বরে।

সিলেট বিনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৬ সালে নগরীর টিলাগড়ে শুরু হয় টিলাগড় ইকো পার্কের নির্মাণ কাজ। পাহাড় টিলা বেস্টিত ও ঘন সবুজে আচ্ছাদিত ১১২ একর আয়তনের এই ইকোপার্ক তৈরিতে প্রথম পর্যায়ে ব্যয় হয় এক কোটি ১৮ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ টাকা।

এরপর ২০১২ সালের ৩ অক্টোবর মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভায় সিলেটে দেশের তৃতীয় বৃহত্তম চিড়িয়াখানা নির্মানের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। টিলাগড়ের ওই ইকোপার্কে সে চিড়িয়াখানা নির্মানের সিদ্ধান্ত হয়। চিড়িয়াখানা নির্মানের জন্য সে বছর ৯ কোটি ৯৯ লাখ ৯৬ হাজার টাকা বরাদ্ধও দেওয়া হয়। ওই প্রকল্পের কাজ তিন বছরের মধ্যে শেষ করার কথা ছিলো।

Manual6 Ad Code

তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি সংশ্লিস্টরা। নির্ধারিত সময়ে বরাদ্ধের প্রায় ১০ কোটি টাকার মধ্যে ব্যয় হয় ৬ কোটি টাকা। মেয়াদ শেষ হওয়ায় বাকী টাকা ফিরিয়ে নেয় অর্থ মন্ত্রনালয়।

২০১৬ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রটি সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়।

এদিকে, বণ্য প্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রের কাজ শুরুর দিকে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে বণ্যপ্রাণী কেনা হয়। এদের মধ্যে রয়েছে- বাঘ, জেব্রা, ময়ুর, গোল্ডেন ফিগল প্রভৃতি। প্রায় ছয় বছর ধরে এগুলো গাজীপুরে সাফারি পার্কে ছিলো। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র পুরো প্রস্তুত না হওয়ায় এগুলো সিলেটে আনা যায় নি।

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পের মেয়াদকালেই টিলাগড় ইকোপার্কে প্রাণীদের জন্য ১১টি শেড নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এরমধ্যে রয়েছে ময়ুর শেড, গন্ডার শেড, হরিণ শেড, হাতি শেড প্রভৃতি। শেডে থাকা ও বিভিন্ন সময় উদ্ধারকৃত বন্যপ্রাণীর জন্য পুণর্বাসন কেন্দ্র এবং হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..