জগন্নাথপুর প্রতিনিধি :: জগন্নাথপুরে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাওরের ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের কাজ শেষ না করে প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকেলে হাওরপাড়ের কৃষকরা উপজেলার কাবিটা কমিটির সভাপতি জগন্নাথপুরের ইউএনও’র বরাবর লিখিতভাবে এমন একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন ।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়, উপজেলার নলুয়ার হাওর বেষ্টিত চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া তার নিজ নামীয় প্রকল্প নং ১০৮ ও তার আপন ভাগ্না মিলন মিয়ার প্রকল্প নং ২৯, ভাতিজা মিজানুর রহমান প্রকল্প নং ২৮ ও আরেক ভাতিজা রইছ উদ্দিন প্রকল্প নং ১৭ এই চারটি প্রকল্পে গত রবিবার পর্যন্ত কোন কাজ শুরু করেননি। এই চার বাঁধে সময়ক্ষেপণ করে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের চেষ্টা চলছে। প্রকল্পগুলোর কাজ যথাসময়ে না হওয়ায় নলুয়ার হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন কৃষকরা।
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের বেরী জামে মসজিদ থেকে গোপরাপুরের নদী পর্যন্ত প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান ও মিলন মিয়া এখনও কোন কাজ শুরু করেন নি। ফলে পুরো নলুয়ার হাওর অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। একইভাবে ইউপি সদস্য জুয়েল মিয়ার প্রকল্প থেকে নোয়াখালী বাঁধ পর্যন্ত বেরীবাঁধে নামমাত্র কাজ করে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তারা।
সরেজমিন পরির্দশনকালে দেখা যায়, নলুয়া হাওরের পোল্ডার-১ এর ১০৮ নম্বর প্রকল্পের মইয়ার হাওরস্থ বেড়িবাঁধের প্রায় এক কিলোমিটার প্রকল্পের মধ্যে শুধু একটি ভাঙা অংশে মাটি ভরাটের কাজ হয়েছে। ওই বাঁধের অধিকাংশ স্থানে মাটি পড়েনি।
একটি সূত্র জানিয়েছে এরই মধ্যে এ প্রকল্পের ৫০ ভাগ অর্থ উত্তোলন করা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়েছে নামমাত্র। এখন পর্যন্ত বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় স্থানীয় কৃষকরা হাওরের ফসল নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এছাড়াও ওই প্রকল্পের পাশের ১১০ নম্বর পিআইসির কাজ এখনও শেষ হয়নি।
চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী কৃষকদের নিয়ে পিআইসির (প্রকল্প বাস্তবায়ক কমিটি) গঠন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সব প্রকল্পেই কাজ চলছে। হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাচাঁও আন্দোলন কমিটির জগন্নাথপুর উপজেলার কমিটির আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের দ্বিতীয় দফা সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ার চারদিন (গতকাল পর্যন্ত) অতিবাহিত হওয়ার পরও বেড়িবাঁধগুলোর কাজ শেষ না হওয়ায় চরম হতাশ হয়েছি আমরা।
তিনি, দ্রুত অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার আহবান জানিয়েছেন।
উপজেলা কাবিটা কমিটির সভাপতি ও জগন্নাথপুরের ইউএনও মাসুম বিল্লাহ বলেন, যে সব প্রকল্পের কাজ শেষ হয়নি। সেই সব প্রকল্পের পিআইসিদের কারণ দশার্নোর নোটিশ এরই মধ্যে দেওয়া হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।