সিলেট ১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১০ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:১৬ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৮
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় উপজেলায় জলমহালের মাছ লুটের ঘটনায় দেশীয় অস্ত্র, মাছ ধরার জাল ও পিকআপসহ ৪১ দুর্বৃত্তকে স্থানীয় জনতা বৃহস্পতিবার আটকের পর থানা পুুলিশে সোপর্দ করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার ধুবাইল গ্রুপ জলমহালের প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকার মাছ লুটের ঘটনায় জড়িত আটক দুবৃক্তদের বিরুদ্ধে জলমহালের ইজারাপ্রাপ্ত মৎসজীবী সমিতির পক্ষ থেকে মামলা দিতে গেলে মামলা না নিয়ে রাত ১১টা পর্যন্ত উল্টো বিষয়টি ধামাচাঁপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন খোদ থানার ওসি ও জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল দু’পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসির বাড়ি নেত্রকোনা জেলায় হওয়ায় সুবাধে আটককৃত দুর্বৃত্তদের বাড়িও নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় হওয়াতে মামলার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চাইছেন পুলিশের দাুিয়ত্বশীল কর্তাগণ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, সহস্রাধিক লোক নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে রণসাজে সজ্জিত হয়ে মাছ ধরার কারেন্ট জাল-পল নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা থেকে সাড়ে ১১ টার মধ্যে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার ধুবাইল গ্রুপ জলমহালের প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকার মাছ দেড় ঘন্টা ব্যবধানে লুটে নিয়ে যায়।
এদিকে, দুর্বৃত্তদের সাথে মাছ লুটে শামিল হতে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ হয়ে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সড়ক পথে দুটি পিকআপ বোঝাই করে আরো ৬০ থেকে ৭০ জন দুর্বৃত্ত ধুবাইল গ্রুপ জলমহালের নিকট পৌছার চেষ্টা করলে এলাকার লোকজন সংঘটিত হয়ে ধাওয়া করে ৪১ দুর্বৃত্তকে আটক করে রাখে।
খবর পেয়ে ধর্মপাশা থানা পুলিশ সুখাইড় রাজাপুর বাজারে আটক থাকা ওই দুবৃক্তদের গ্রেফতার করে দুপুরে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় দুবৃক্তদের হেফাজত থেকে দু’টি পিকআপ, বেশ কিছু রামদা, বল্লম, ছুলফি, লাঠি -সোটা, মাছ ধরার কারেন্ট জাল, বের জাল ও পল পুলিশ উদ্ধার করে।
এদিকে দুবৃক্তদের গ্রেফতারের পর থানায় নিয়ে আসার পর টনক নড়ে ওসি ও জেলা পুলিশের দু’কর্মকর্তার। দু’পুলিশ কর্মকর্তা ও ওসির নিজ জেলার লোকজন মাছ লুটের ঘটনায় জড়িত থাকায় বিষয়টি আপোসে নিষ্পক্তি করিয়ে দেয়ার জন্য দিনভর থেকে রাত অবধি নানা চাঁপ তৎপরতা তদবীর বাড়তে থাকে থানার ওসির প্রতি।
ধর্মপাশার ধুবাইল গ্রুপ জলমহােেলর ইজারাপ্রাপ্ত শুভপুর মৎসজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি বিষ্ণু বর্মণ বৃহস্পতিবার রাত ১১ টায় জানান, মাছ লুটে নেয়া দুর্বৃত্তরা ও পরবর্তীতে স্থানীয় জনতার হাতে আটকের পর থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া দুর্বৃত্তদের অধিকাংশই সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও পুলিশ সুুপার ও থানার ওসির নিজ জেলা নেত্রেকোনার লোকজন হওয়ায় অভিযোগ নিয়ে গেলেও থানায় মামলা নেয়া হয়নি।
তিনি আরো বলেন, ওসি সাহেব পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দোহাই দিয়ে বিষয়টি আপোসে নিষ্পক্তি করে নেয়ার জন্য আমাকে নানামুখী চাঁপ সৃষ্টি করেছেন।
ধর্মপাশা থানার ওসি সুরঞ্জিত সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বৃহস্পতিবার রাতে মাছ লুটের ঘটনায় স্থানীয় জনতা কতৃক আটককৃত ৪১ জন থানা হাজতে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে স্বীকার করলেও তাদের নাম ঠিকানা জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে তিনি বললেন, বিষয়টি আপোস নিষ্পত্তির জন্য মুছলেখা রেখে তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার জন্য উপর মহলের নির্দেশ থাকায় আমি আপাতত মামলা নিতে পারছিনা।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. হাবীবুল্লাহ জুয়েল বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, এখন যারা থানায় আটক রয়েছেন তারা মাছ ধরতে এসেছিলেন ঠিকই কিন্তু মাছ ধরেননি, তারা তো নিরীহ, তাই বিষয়টি মামলা না নিয়ে স্থানীয়ভাবে নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরককতুল্লাহ খাঁনের সাথে বৃহস্পতিবার রাতে কয়েক দফা উনার সরকারি মুঠো ফোনে কল করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় উনার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd