সিলেটে মহামারী আকারে ভারতীয় শিলং তীর : ধ্বংসের পথে যুব সমাজ

প্রকাশিত: ১০:২৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটে মহামারী আকার ধারণ করেছে ভারতীয় শিলং তীর খেলা। এ খেলার শুরুতে শুধু সীমান্তবর্তী এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন সীমান্ত পেরিয়ে সিলেটের প্রতিটি অলিগলিতে বিস্তার লাভ করেছে তীর খেলা। এমনকি এ খেলা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে সিলেটের বিভিন্ন উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। এ ‘তীর খেলা’য় বিপুল সংখ্যক মানুষ অংশ নিচ্ছে। সিলেটের যেকোন স্থানে বসে অনলাইনের মাধ্যমে তারা শিলং জুয়ায় বাজি ধরছে। এ খেলাটি সপ্তাহের ছয়দিনই বসছে। প্রতিদিন দুইবার এ খেলার ড্র অনষ্টিত হয়ে থাকে। সিলেটে তাদের এজেন্টের মাধ্যমে এদেশীয় এজেন্টরা ভারতের এজেন্টেদের সাথে জুয়ার আসরের সমন্বয় করে থাকে। আর ভারতীয় এ ভাগ্যের খেলায় স্কুল কলেজের ছাত্র, শিক্ষক, দিনমজুর, রিকশাচালক, যানবাহনের চালক-শ্রমিকসহ বেকার যুবকরা অংশ নিচ্ছে। আর এতে করে অনেক স্কুলগামী ছাত্ররা স্কুল ফাঁকি দিয়ে এ খেলায় অংশ নিচ্ছে এতে করে ছাত্রদের মনযোগ বইয়ের পরিবর্তে তীর খেলার দিকেই বেশী ঝুঁকছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেও দমন করা যাচ্ছে না এ জুয়া। ¯্রফেতারের পর জামিনে বের হয়ে আবারও এ খেলায় জড়িয়ে পড়ছে জুয়াড়িরা।

জানা যায়, ২০ থেকে ২৫ বছর পূর্বে ভারতীয় ধনকুবেররা এ রকম খেলাটি আবিস্কার করে। এর নাম রাখে মেঘালয়ের আঞ্চলিক ভাষায় ‘তীর খেলা’। স্থানীয় ভাবে খেলাটিকে অনেকেই শিলং তীর, ডিজিটাল নাম্বার খেলা ইত্যাদি নামে অবহিত করে থাকেন। খেলাটি ধরণ হচ্ছে এ রকম যে এদেশের এজেন্টদের মাধ্যমে ১-৯৯ পর্যন্ত নাম্বার বিক্রয় করা হয় যে কোন মূল্যে। লটারিতে ০ থেকে ৯৯ পর্যন্তযে কোনো সংখ্যা কিনে নেওয়া যায়। সর্বনিম্ন ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত বাজি ধরা যায়। যত মূল্যে সংখ্যাটি বিক্রয় হবে তার ৭০ গুণ লাভ দেয়া হবে বিজয়ী নম্বরকে। অথাৎ ১০ টাকায় ৭০০ টাকা। একই নম্বর একাধিক লোকও কিনতে পারেন। সবাই কেনা দামের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি টাকা পাবেন। প্রতিদিন বিকাল সোয়া ৪টায় ও সাড়ে ৫টায় দুবার এ লটারির ড্র অনুষ্টিত হয়ে থাকে। খেলার ফলাফল দেওয়া হয় অনলাইনে। ভারতের শিলং থেকে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে জুয়ার আসরটি পরিচালনা করা হয়। আর এ ওয়েব সাইটের মাধ্যমে ফলাফল জানাও যায়।

সিলেট নগরীর প্রায় ৫০টির বেশী স্পটে চলছে তীর শিলং নামীয় ভারতীয় জুয়ার নেটওয়ার্ক। দক্ষিণ সুরমার কদমতলীস্থ বালুর মাঠ, কীন ব্রীজের আশপাশ এলাকার কর্মাসিয়াল (কাপাশিয়া) মার্কেটের ভিতর হয়ে নদীরপাড়, হুমায়ুন চত্তর-চন্ডীপুল ও জিঞ্জির শাহ’র মাজার এলাকায় একাধিক গ্রুপ ভারতীয় তীর খেলার নেটওয়ার্ক গড়ে তোলেছে। জানা গেছে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনপ্রতিনিধির পছন্দ না হলে অথবা জনপ্রতিনিধিদের চেলা-চামুন্ডারা সন্তুষ্ট না হলে ভারতীয় তীর খেলার স্পট খোলা যায়না।
সূত্র আরো জানায়, “কাজির বাজার মৎস্য আড়তের আশেপাশে মদ জুয়ার আসর বসিয়ে এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছে, এলাকার যুবকরা তাদের এরূপ কার্যকলাপে মদ, জুয়ায় আসক্ত হয়ে পারিবারিক জীবন ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2017
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031  

সর্বশেষ খবর

………………………..