আরিফের দুঃখ জানেন না আনোয়ারুজ্জামান

প্রকাশিত: ৪:১৯ অপরাহ্ণ, মে ২২, ২০২৩

আরিফের দুঃখ জানেন না আনোয়ারুজ্জামান

Manual4 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়িয়েছেন বিএনপির এই কেন্দ্রিয় নেতা। আরিফের এমন সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করে তাকে প্রার্থী হওয়ার অনুরাধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। একই সঙ্গে আরিফের ‘দুঃথ কি’ তা তিনি জানেন না বলেও উল্লেখ করেছেন।

 

এদিকে, আরিফের প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণায় সিলেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের জৌলুস অনেকখানিই কমে যাবে বলে মনে করছেন প্রার্থী ও ভোটাররা।

 

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ২০ মে নগরের রেজিস্টারি মাঠে সমাবেশ করে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেন গত দুই মেয়াদের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয় দাবি করে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়ান তিনি। অন্য প্রার্থী ও খোটারদেরও নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান আরিফুল হক।

Manual7 Ad Code

 

তবে বর্তমান মেয়রের এমন বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সিলেটে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তিনি রোববার বলেন, আরিফুল হক আওয়ামী লীগ সরকার ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকাকালেই দুইবার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। গত ১০ বছর উনি মেয়রের দায়িত্বে ছিলেন। কখনো কোন অভিযোগ করেননি। বরং ২০ মে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়া সমাবেশে বক্তৃতা কালেও তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক অর্থমন্ত্রী প্রয়াত আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবুল মোমেনের প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ সিলেটেচর অন্য মন্ত্রীরা তাকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন বলেও বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন আরিফ। তারপরও কেন তিনি এবার নির্বাচন বর্জন করলেন, তার দুঃখটা কি তা আমি ঠিক জানি না।

 

আরিফ প্রার্থী না হওয়ায় এবার অনেকটা প্রতিদ্বন্দিতাহীন নির্বাচনে হতে পারে বলে শঙ্কা ভোটারদের। এ ব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, আরিফুল হক শেষ মূহূর্তে ভোটের মাঠ থেকে সরে যাবেন এটি আমাদের প্রত্যাশা ছিলো না। আমি এখনো চাই আরিফুল হক ও তার দল মত পাল্টাবেন এবং ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে আসবেন। কারণ ভোট ছাড়া তো জয়ের কোন উপায় নেই।

Manual4 Ad Code

 

আনেয়াারুজ্জামান বলেন, আরিফুল হক চৌধুরীর নির্বাচনে আসলে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হবে। তিনি বিগত ১০ বছর সিলেট সিটি করপোরেশন মেয়র হিসেবে অনেক ভাল কাজ করেছেন। সিলেটের মানুষ ভোটের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করুক এটাই আমি চাই। সিলেটে নির্বাচনের পরিবেশ নাই, উনার এই বক্তব্য আসলে ঠিক না। তার এমন অভিযোগ সিলেটের দীর্ঘদিন রাজনৈতিক ঐতিহ্য ও সম্প্রীতির সাথে মাননসই না।

 

আরিফুল হক প্রার্থী না হলে নির্বাচন কিছুটা জৌলুস হারাবে বলে মনে করেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলও। তিনি বলেন, আরিফুল হকের নির্বাচন না করার সিদ্ধান্তে নগরবাসী নৌকা, ধানের শীষ ও লাঙলের ত্রিমুখি প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ নির্বাচন থেকে বঞ্চিত হলো।

 

তবে আরিফ না আসায় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির জয়ের সম্ভাবনা আরো বেড়ে গেল বলেও মনে করেন তিনি।

 

সিলেটে মেয়র পদে এ পর্যন্ত ১১ জন প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও নজরুল ইসলাম বাবুল ছাড়া বাকীরা হলেন- হাফিজ মাওলানা মাহমুদুুল হাসান (হাতপাখা), মো. জহিরুল আলম (জাকের পার্টি). এছাড়া স্বতন্ত্র প্রাথৃী হয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল হানিফ কুটু, মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান খান, সামছুন নুর তালুকদার, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মাওলানা জাহিদ উদ্দিন চৌধুরী, মো. শাহজাহান মিয়া ও মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা।

Manual8 Ad Code

 

আরিফুল হক প্রার্থী না হলে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ অনেকটা কমে যাবে উল্লেখ করে সুশাসনের জন্য নাগরিক- সুজন, সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আরিফুল হক বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতা। তিনি ও তার দল না এলে নির্বাচন অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন হয়ে পড়বে। মানুষের আগ্রহ কমবে। এ অবস্থায় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে হাজির করাই বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

Manual7 Ad Code

 

২০০২ সালে প্রতিষ্ঠার পর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রথম ও দ্বিতীয় নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। ২০১৩ সাথে তৃতীয় ও ২০১৮ সালে চতুর্থ নির্বাচনে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। চারটি নির্বাচনেই মূল প্রতিদ্বন্দিতা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর মধ্যে। অন্য দলীয় বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সামান্য প্রতিদ্বন্দিতাও তৈরি করতে পারেননি।

 

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৩ মে। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর ১ জুন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করা যাবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..