চিলাই নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি

প্রকাশিত: ৮:৫৮ অপরাহ্ণ, মে ৪, ২০২৩

চিলাই নদীর পাড় কেটে বালু বিক্রি

Manual1 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : দোয়ারাবাজার সীমান্তের চিলাই নদীর পাড় কেটে প্রকাশ্যে বালু বিক্রি করছে কয়েকজন ড্রেজার মালিক। বাংলাবাজার ইউনিয়নের চিলাই নদীর পাড়ের উরুরগাঁও-বাঘমারা এলাকায় এই বালু লুট হচ্ছে। এলাকাবাসী অভিযোগ জানালেও এসব বালুখেকোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন। পাহাড়ি ঢল থেকে ঘরবাড়ি রক্ষায় নদীর পাড় কাটা বন্ধ করতে গত রোববার মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয়রা। এতেও টনক নড়েনি প্রশাসনের।

Manual6 Ad Code

উরুরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ছিদ্দিক আহমদ বললেন, চিলাই নদীর ভাঙনে এর আগে তাঁদের অনেক রেকর্ডীয় (সরকারি রেকর্ডভুক্ত ব্যক্তিমালিকানাধীন) জমি বিলীন হয়েছে। গত কয়েক বছরে ভাঙনকবলিত এলাকায় চর পড়েছে। বর্ষায় পাহাড়ি ঢল ঠেকাতে নদীর পাড়ে নিজেদের উদ্যোগে বাঁধ দিচ্ছেন তাঁরা। অথচ ড্রেজার মেশিন দিয়ে স্থানীয় কয়েকজন নদীর পাড় কেটে বালু তুলছে। এরই মধ্যে ৫০ লাখ টাকার বালু বিক্রি করেছে। প্রথমে বালু তোলার সময় তাঁদের বলা হয়েছিল, গুচ্ছগ্রাম ভরাটের জন্য বালু নেওয়া হবে। তখন তাঁরা বাধা দেননি। এলাকাবাসী এখন দেখতে পাচ্ছেন, নদীর পাড় থেকে প্রতিদিনই শত শত ট্রলি বালু বিক্রি করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এখানের বালু যাচ্ছে।

উরুরগাঁওয়ের নান্দু মিয়া বললেন, পাহাড়ি নদীর ঢল ঠেকাতে প্রতি বছরই তাঁদের যুদ্ধ করতে হয়। এখন আবার তাঁদের বাড়ির পাশের নদীর পাড় কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। গ্রামবাসী রোববার মানববন্ধন করে ঘটনার প্রতিবাদ জানালেনও বালু বিক্রেতারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একই এলাকার বাসিন্দা ভাওয়ালি পাড়ার সুরুজ মিয়া জানান, যারা বালু তুলছে তারা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেনের নির্দেশে এটি করছে বলে এলাকাবাসীকে জানিয়েছে।

ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম বললেন, সরকারি সম্পদ ইচ্ছেমতো লুট হচ্ছে। এরই মধ্যে নদী থেকে ৫০ লাখ টাকার বালু তুলে বিক্রি করেছে স্থানীয় কিছু লোক। যারা বালু তুলছে, তারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নাম ভাঙিয়ে ব্যবসা করছে।

Manual8 Ad Code

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাদির বললেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়েছে। গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পে ১৫ হাজার ফুট বালু লাগবে না। অথচ তারা লাখ লাখ ফুট বালু নিয়ে যাচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যানের কথা বলে।

বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, চিলাই নদী থেকে বালু কারা ওঠাচ্ছে এটা তাঁর জানা নেই। আবার বালু তোলার বিরুদ্ধে কারা মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেছে, সেটিও তিনি জানেন না। কোনো ইউপি সদস্যও বিষয়টি তাঁকে জানাননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক যুবক জানিয়েছেন, বাঘমারা গ্রামে নদী থেকে বালু তোলায় জড়িত ড্রেজার মেশিনের মালিক আলম মিয়াকে রোববার এসিল্যান্ড অফিসে ডেকে নেওয়া হয়েছিল। প্রশাসন থেকে আলম মিয়াকে কী নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি জানেন না।

Manual8 Ad Code

জানতে চাইলে বাঘমারা গ্রামের ড্রেজার মালিক আলম মিয়া বলেন, বালু কেন তুলছেন– এসিল্যান্ড অফিসে ডেকে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। তিনি কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন, বাঘমারা স্কুল থেকে বাংলাবাজার সড়কের কাঁচা অংশ ভরাট করার জন্য বালু তোলা হচ্ছে। পরে তাঁকে আর কিছু বলা হয়নি।

সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) ফয়সল আহমদের ব্যক্তিগত নম্বরটি বন্ধ থাকায় কয়েকবার চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফ মুর্শেদ মিশু বলেন, চিলাই নদী থেকে বালু তোলার বিষয়ে তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। তবে সরেজমিন গিয়ে ড্রেজার মেশিন কিংবা বালু তোলায় জড়িত কাউকে পাননি। আলম মিয়া নামে এক ড্রেজার মালিককে এসিল্যান্ড অফিসে ডেকে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নেবেন তিনি।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..