হত্যার পর আফিয়ার মােবাইল নিয়ে বানিয়াচংয়ে চলে যান মাজেদা

প্রকাশিত: ১০:৪৭ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০২২

হত্যার পর আফিয়ার মােবাইল নিয়ে বানিয়াচংয়ে চলে যান মাজেদা

Manual7 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেট নগরের উত্তর বালুচরের সোনার বাংলা আবাসিক এলাকায় আফিয়া বেগম সামিহা (৩১) হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করার কথা জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)-৯।

Manual2 Ad Code

র‍্যাব বলছে- আফিয়াকে খুন করেছেন মোছা. মাজেদা খাতুন মুন্নি (২৯) নামের এক নারী। পাওনা টাকার দ্বন্দ্বে এ খুনের ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত মুন্নিকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এমনটি জানিয়েছে র‍্যাব-৯।

র‍্যাব-৯ এর মিডিয়া অফিসার এএসপি আহসান-আল-আলিম জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে উত্তর বালুচর এলাকার ফোকাস-৩৬৪ নম্বর পাঁচতলা বাসা সিকান্দর মহলের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে আফিয়া বেগম সামিহা নামের এক গৃহবধূর রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

Manual7 Ad Code

চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সিলেটের শাহপরাণ থানায় গত ২৪ আগস্ট ভিকটিমের মা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলা সূত্র ধরে রহস্য উদঘাটনে র‍্যাব-৯-ও গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে আফিয়া হত্যাকাণ্ডে মোছা. মাজেদা খাতুন মুন্নির সংশ্লিস্টতার চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়।

পরে গােয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র‍্যাব-৯ আভিযান চালিয়ে মুন্নিকে বৃহস্পতিবার ভোরে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। মুন্নি হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার সারংপুর গ্রামের আব্দুল গনির মেয়ে।

মুন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এই র‍্যাব কর্মকর্তা জানান, আফিয়ার সঙ্গে টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিলো মুন্নির। আফিয়ার বাসায় মুন্নি সাবলেট থাকতেন। কিন্তু বেশিরভাগ দিন তিনি বাসায় অবস্থান করতেন না। আফিয়ার নিকট মুন্নি বিভিন্ন সময় টাকা-পয়সা গচ্ছিত রাখতেন। একপর্যায়ে মুন্নির পাওনা টাকা আফিয়া দিতে অস্বীকার করেন। ফলে আফিয়ার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মুন্নি।

Manual2 Ad Code

ঘটনার দুইদিন আগে ১৮ আগস্ট আফিয়ার বাসায় আসে মুন্নি। ঘটনার দিন (২০ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে আফিয়া ও মুন্নির মধ্যে পাওনা টাকা নিয়ে ঝগড়া হয়। পরে রাত ১২টার দিকে অকস্মাৎ রান্নাঘর থেকে শীল (মসসলা গুড়ো করার শীল) নিয়ে এসে আফিয়ার মাথার বাম পাশে সজোরে পরপর ২টি আঘাত করেন মুন্নি।

আঘাতের ফলে তৎক্ষণাৎ আফিয়া বিছানায় লুটিয়ে পড়েন। পরে ২১ আগস্ট ভাের আনুমানিক ৬টার দিকে মুন্নি ওই বাসা থেকে বের হয়ে একটি রিকশা ভাড়া করে নিয়ে আসেন এবং বাসার দরজা বাইরে থেকে তালা মেরে তিনি তার মালামাল ও আফিয়ার মােবাইল ফোন নিয়ে বানিয়াচংয়ে নিজ বাড়িতে চলে যান।

Manual8 Ad Code

এ ঘটনায় আশ্চর্যজনকভাবে বাসায় আটকা পরা আফিয়ার শিশুকন্যা বেঁচে যায়। পরে তাকে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। গ্রেপ্তারকৃত মাজেদাকে শাহপরাণ থানায় হস্তান্তর করেছে র‍্যাব-৯।

এরআগে এই ঘটনায় নিহতের স্বামী ইসমাইল নিয়াজ খানকে গ্রেপ্তার করে শাহপরান থানা পুলিশ। এ তথ্য জানিয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আমিনুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি একই এলাকার ইসমত খানের পুত্র।

গত মঙ্গলবার রাতে সিলেট নগরীর শাহপরান থানার বালুচর এলাকা থেকে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিন রাতে এলাকার সেকান্দর মহলের বাসার তালা ভেঙে লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় ঘরের ভেতর থেকে ওই নারীর প্রায় দুই বছর বয়সী এক শিশু কন্যাকে জীবিত উদ্ধার কর হয়। পরে ওই শিশুকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় বুধবার তার মা কুটিনা বেগম বাদী হয়ে শাহপরান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়। এই মামলায় ইসমাইলকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।

ওসি জানান, ‘ওই নারীর স্বামী ওমানপ্রবাসী বলে শোনা গেলেও আসলে ইসমাইল প্রবাসে ছিলেন না। আফিয়ার সঙ্গে তার যে বিয়ে, সেটার কাগজপত্রও নেই। মৌলভী ডেকে নাকি তাদের বিয়ে পড়ানো হয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।’

এছাড়া, আশরাফ নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে আফিয়া বেগমের আগে আরেকটি বিয়ে হয়েছিল বলে জানা গেছে। কিন্তু ওই সংসার বেশিদিন টিকেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

August 2022
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..