সিলেট সদরে হরিলুটের ভুয়া প্রকল্প বাড়ির উঠান হলো সরেআম রাস্তা

প্রকাশিত: ৯:৫৭ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৪, ২০২১

সিলেট সদরে হরিলুটের ভুয়া প্রকল্প বাড়ির উঠান হলো সরেআম রাস্তা

Manual6 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : উন্নয়নের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থ-সম্পদের হরিলুট জাতীয় পর্যায় থেকে এখন উপজেলা, ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায় পৌঁছে গেছে। সিলেট সদর উপজেলায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের নামে রাষ্ট্রের ৩ কোটি ২৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা লোপাটের এক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Manual7 Ad Code

সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের ১৪ জানুয়ারি ২০২১ খ্রিঃ তারিখের ২১তম মাসিক সাধারণ সভায় এ প্রকল্পগুলো উপস্থাপন ও অনুমোদন করা হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আশফাক আহমদের সভাপতিত্বে এ সাধারণ সভায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য উপস্থাপিত ১৪৪ টি ছোটবড় প্রকল্পের অনেকটাই ভুয়া এবং সাজানো, যা রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের নিমিত্তেই হাতে নেওয়া হয়েছে।

Manual8 Ad Code

উপস্থাপিত ও অনুমোদিত এই ভুয়া প্রকল্পগুলোর ১টি হচ্ছে- সিলেট সদর উপজেলার ৭ নং মোগলগাঁও ইউনিয়নের অন্তর্গত ‘নোয়াগাঁও এলজিইডি রাস্তা হইতে সমুজ মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা উন্নয়ন। পিআইসি’র প্রকল্পটি একেবারে ভুয়া ও সাজানো। সরেজমিনে এলজিইডি রাস্তা থেকে সমুজ মিয়ার বাড়ি পর্যন্ত মধ্যখানে কোন রাস্তাই নেই। বাস্তবে সমুজ মিয়ার বাড়িটি একেবারে এলজিইডি রাস্তার সাথেই। রাস্তা থেকে নেমেই সমুজ মিয়ার বাড়ির উঠান। ব্যক্তি মালিকানা বাড়ির উঠানকে রাস্তা বানিয়ে দেড়লাখ টাকার প্রকল্প সাজানো হয়েছে। বস্তুত সমুজ মিয়ার বাড়ি ও উঠোনে জনস্বার্থে সরকারী রাস্তা করার কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ নেই। ব্যক্তি মালিকানা বাড়ির উঠানে রাস্তা করার নামে এই উন্নয়ন প্রকল্প রাষ্ট্রের অর্থ লুটপাট বৈ কিছু নয় বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
অপরটি ভুয়া প্রকল্প হচ্ছে একই ৭ নং মোগলগাঁও ইউনিয়নের মোগলগাঁও গ্রামের আবু বকরের ব্যক্তি মালিকানা বাড়ির রাস্তা সংস্কার। এলজিইডি রাস্তা হতে মোগলগাঁও গ্রামের আবুবকরের বাড়ির একক মালিকানা রাস্তাটির দৈর্ঘ মাত্র ৪০ থেকে ৫০ ফুট। এ রাস্তার আশপাশে অন্য কারো বাড়িঘর নেই এবং এটি কোন সরেআম রাস্তাও নয়। পাশাপাশি রাস্তাটি বাড়ির সমান করেই নির্মিত এবং অক্ষত। জনস্বার্থে আবুবকরের বাড়ির ব্যক্তি মালিকানা রাস্তাটি সংস্কারের আদৌ কোন প্রয়োজন নেই।

Manual1 Ad Code

এ ছাড়া এ রাস্তার উপর মাত্র আধফুট পরিমান মাটি পড়লে রাস্তাটি বাড়ি থেকে উঁচু হয়ে পড়বে। আর এতে করে ব্যায় হতে পারে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা মাত্র। অথচ আবু বকরের বাড়ির রাস্তা সংস্কার নামে এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে দেড় লাখ টাকা।

এই দুই প্রকল্পের অনুমোদন সম্পর্কে সিলেট সদর উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো: মনিরুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, নোয়াগাওঁয়ের সমুজ মিয়ার বাড়ির রাস্তা উন্নয়ন নামের প্রকল্পটি তিনি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছেন এটা ‘বাড়ি পর্যন্ত’ মধ্যখানের কোন রাস্তা নয়, এটা সমুজ মিয়ার ঘরের রাস্তা মানে ঘর থেকে উঠানে বের হওয়ার রাস্তা প্রকল্প। আর মোগলগাঁও গ্রামের আবু বকরের বাড়ির রাস্তার যে প্রকল্প দেওয়া হয়েছে সেটি তিনি এখনো পরিদর্শনে যান নি। প্রতিটি প্রকল্পে দেড়লাখ টাকা করে প্রক্কলিত ব্যয় ধরা হলেও সরেজমিনে কত টাকার স্টিমিট আসবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না বলে জানান তিনি।

এবিষয়ে মোগলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান মো: হিরণ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি এ তারিখের সাধারণ সভায় উপস্থিত ছিলেন না বলে সাংবাদিকদের জানান। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জানান যে এই প্রকল্পটি ইউনিয়নের আওতাধীন নয়। এটা সরাসরি উপজেলা থেকে বরাদ্দকৃত।

Manual5 Ad Code

উল্লেখিত দু’টি প্রকল্প ছাড়াও সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের ১৪ জানুয়ারি ‘২১ তারিখের সাধারণ সভায় আরো বেশ ক’টি ভুয়া প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যা সরেজমিন অনুসন্ধ্যানে বেরিয়ে এসেছে। পরবর্তী যে কোন সময় তা’ গণমাধ্যমে প্রকাশ পাবে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..