সিলেটে আমেরিকান কন্যা মৌসুমীর বিয়ে-প্রতারণা

প্রকাশিত: ২:১৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১

সিলেটে আমেরিকান কন্যা মৌসুমীর বিয়ে-প্রতারণা

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের আমেরিকান কন্যা মৌসুমীর বিয়ে-প্রতারণা নিয়ে মামলা হয়েছে। নিজেকে ‘কুমারী’ দাবি দ্বিতীয় বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি। এরপর নানা টালবাহানা করে স্বামীর কাছ থেকে ২১ লাখ টাকার মালামাল হাতিয়ে নিয়েছেন। এদিকে- প্রথম স্বামীও প্রতারণায় পড়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে- দ্বিতীয় স্বামীর মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। আমেরিকান কন্যার পুরো নাম শারমিন সুরভী মৌসুমী। পিতা-মাতা সহ সবাইকে নিয়ে তিনি বসবাস করেন আমেরিকায়। ২০১২ সালে প্রথম বিয়ে হয়েছিল এক চিকিৎসকের সঙ্গে।

Manual2 Ad Code

রয়েছে ৫ বছর বয়সের ফুটফুটে পুত্র সন্তান। সবকিছু গোপন রেখে কুমারী সেজে ২০২০ সালে করেছেন দ্বিতীয় বিয়ে। তার দ্বিতীয় স্বামী সিলেটের গোলাপগঞ্জ ভাদেশ্বর দক্ষিণভাগ গ্রামের আব্দুল কুদ্দুছের ছেলে জাকের আহমদ। তিনি বাদী হয়ে চলতি মাসেই মামলা দায়ের করেন সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায়। মামলার আসামিরা হলেন- জৈন্তাপুর থানার নিজপাট চুনাহাটি গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে রফিকুর আর এমএ মুনিম, তার স্ত্রী ইমামা বেগম চৌধুরী ও আমেরিকান কন্যা শারমীন সুরভী মৌসুমী। জাকের আহমদ তার মামলায় উল্লেখ করেন, তিনি সাইপ্রাস প্রবাসী। দেশে এলে ২০২০ সালের ১৫ই জানুয়ারি ইসলামী শরীয়াহ্‌ মোতাবেক সিলেট নগরীর হাউজিং এস্টেট ৭ নম্বর লেনের ৫৬ নম্বর বাসায় মৌসুমীর সঙ্গে বিয়ে হয়।

Manual3 Ad Code

তখন কন্যার বাবা-মা ও আত্মীয়-স্বজন সবাই উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের ১৩ দিন পর মৌসুমী তার মা-বাবাকে নিয়ে আমেরিকা চলে যান। তখন বরের পিতা-মাতাকে বলেন, কয়েক মাসের মধ্যে জাকেরকে আমেরিকা নিয়ে যাওয়া হবে। আমেরিকা যাওয়ার পর মৌসুমী ফোনে ও সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন জাকেরের সঙ্গে। গত ২১শে নভেম্বর মৌসুমী ফোন করে জাকেরকে বলেন তোমাকে আমেরিকা আনতে হলে ২৫ লাখ টাকা লাগবে বলে স্বামীকে জানান। এতে টাকা দিতে রাজি হননি জাকের। পরে মৌসুমী ২৫শে নভেম্বর ফোন করে দ্বিতীয় স্বামীকে বলেন- দেশে এলে তাকে নিয়ে উপশহরে বাসা ভাড়া করে থাকতে হবে। সে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে থাকবে না। এই কথায় রাজি হননি জাকের। তখন মৌসুমীর মা ফোনের মাধ্যমে বলেন- তার মেয়ের কথা না শুনলে, বিয়ের সম্পর্ক রাখা যাবে না। এদিকে- মৌসুমী তার পরিবারের এ ধরনের কথা বার্তায় রহস্য দেখা দেয় জাকেরের পরিবারে। তারা গত ২৮শে ডিসেম্বর আমেরিকান কন্যার গ্রামের বাড়ি জৈন্তাপুরে গিয়ে আসামিপক্ষ বিষয়টি অনুসন্ধান করেন। তখন জানতে পারেন মৌসুমীর মা-বাবা ২০১২ সালের ৩০শে ডিসেম্বর মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থানার পৃত্থিমপাশা সুজাপুর গ্রামের মো. শফিক মিয়ার ছেলে ডা. মো. ফরিদ আহমদের সঙ্গে বিয়ে হয়।

Manual4 Ad Code

বিয়ের পর ২০১৫ সালের ৩রা মার্চ এক পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করেন। খবর পেয়ে প্রথম স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন দ্বিতীয় স্বামী। তখন বেরিয়ে আসে চ্যাঞ্চল্যকর তথ্য। তখন প্রথম স্বামী জানান- তার সঙ্গে বিয়ের পর ২০১৮ সালের ১৯শে জুলাই মৌসুমী বাদী হয়ে মোহরানার জন্য সিলেটের জৈন্তাপুর পারিবারিক আদালতে দাখিল করেন। যা গত বছরের ১৫ই মার্চ সোলেনামা দাখিলের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হয়। মৌসুমী ও তার পিতা-মাতা প্রতারক। জাকের তার মামলায় আরও উল্লেখ করেন, তার সঙ্গে মৌসুমীর বিয়ের জন্য উভয়পক্ষের আলোচনায় ১৫ লাখ টাকার স্বর্ণ ও দেনমোহর বাবদ ৬ লাখ টাকা মু’আজ্জল রেখে কাবিন সাব্যস্তে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের কাবিননামা তুলে দেখা যায়- সেখানে ২১ লাখ টাকার কাবিননামা ও ১ লক্ষ টাকার স্বর্ণালঙ্কার বাবদ পরিশোধ দেখানো হয়েছে। তাছাড়া প্রথম বিয়ে গোপন রেখে ‘কুমারী’ সেজে বিয়ে হয়েছে।

যা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ করা হয়েছে। মামলার বাদী জাকের আহমদ জানিয়েছেন- তার বিশ্বাস ভঙ্গ করে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার আত্মসাৎ এবং প্রথম বিয়ে গোপন করেন মৌসুমী। তিনি বিয়য়টি জানতে পেরে সিলেটের অতিরিক্ত মুখ্য হাকিম আদালতে মামলা দাখিল করেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে এফআইআর গণ্যের আদেশ প্রদান করেন। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আব্দুর রহমান আফজাল জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে মামলা চলাকালীন সময়ে এবং প্রথম বিয়ে গোপন রেখে জাকেরকে বিয়ে করেন মৌসুমী। এ ঘটনায় আদালতে মামলা দাখিল করলে আদালত তা গ্রহণ করে এফআইআর গণ্যে প্রেরণের জন্য এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানা পুলিশকে নির্দেশ প্রদান করেন। ফলে এয়ারপোর্ট থানায় গ্রহণ করেন।

Manual7 Ad Code

এয়ারপোর্ট থানার ওসি খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির জানান, আদালতের নির্দেশ মতো মামলাটি রের্কড করা হয়েছে। মামালাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2021
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728  

সর্বশেষ খবর

………………………..