কুলাউড়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে রাখেন স্বজনরা, গ্রেপ্তার ৬

প্রকাশিত: ১২:২৭ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৭, ২০২০

কুলাউড়ায় ব্যবসায়ীকে হত্যার পর লাশ মাটিতে পুঁতে রাখেন স্বজনরা, গ্রেপ্তার ৬

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : কুলাউড়ায় পূর্ব বিরোধের জেরে আব্দুল মনাফ (৩২) নামে এক ব্যবসায়ীকে তারই স্বজনরা নির্মমভাবে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে রাখেন। নিখোঁজের চারদিন পর মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে ওই ব্যবসায়ীর বাড়ির পাশ থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। বাড়ির ২০ গজ দূরের একটি স্যাফটিক ট্যাঙ্কের পাশে গর্তে মাটিচাপা দেওয়া অবস্থায় লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত আব্দুল মনাফ উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের বাসিন্দা মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আজির উদ্দিন ঘটনার সাথে জড়িত ৭ জনকে অভিযুক্ত করে বুধবার কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

Manual5 Ad Code

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে শাহিনুর রহমান শাহিদ (৪০), মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে নিহত মনাফের খালাতো ভাই সামছুদ্দিন (৪২), মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে আতিকুর রহমান চান মিয়া (৫০), মোঃ ফজলু মিয়া (৪৫), ফজলু মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহমদ (২২), মৃত চুনু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৩)। তাঁরা সবাই নিহত ব্যবসায়ী আব্দুল মনাফের স্বজন।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়ার উত্তরবাজারের মিলিপ্লাজাস্থ মনাফ টেলিকমের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মনাফ। গত ১২ ডিসেম্বর শনিবার রাত ৯টার দিকে শহর থেকে বাজার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন তিনি। পরে তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজির পর মনাফের কোন খোঁজ না পাওয়ায় তাঁর ভাই আজির উদ্দিন কুলাউড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপর পুলিশ গোপন তথ্য মতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মামলার প্রধান আসামী ও নিহত মনাফের চাচাতো ভাই শাহিনুর রহমানের বসত ঘরের পিছনের টয়লেট ট্যাংকির ভেতর থেকে নিহত মনাফের ব্যবহৃত ম্যানিব্যাগ, জাতীয় পরিচয়পত্রসহ কিছু আলামত উদ্ধার করে। তখন সন্দেহজনক ভাবে শাহিনুরসহ ৪জনকে থানায় এনে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা মনাফকে হত্যার কথা স্বীকার করে।

শাহিনুরসহ আটককৃতরা পুলিশকে জানায়, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘটনার সাথে জড়িত সবাই মিলে ঘটনার দিন শনিবার রাত আনুমানিক ১০টায় মনাফ বাড়ি ফেরার পথে তাকে পথরোধ করে এবং দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মনাফের মাথায় স্বজোরে আঘাত করলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। এরপর সবাই মিলে তার লাশ শাহীনুরের ঘরের পিছনে ট্যাংকির পাশে একটি গর্তে মাটি চাপা দিয়ে পুঁতে রাখে। এ ঘটনার সাথে কারা জড়িত সেটাও আটককৃতরা জানায়। পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে আরো ২জনকে আটক করে। সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাদের দেয়া তথ্যমতে রাত ১১টার দিকে মাটি চাপা অবস্থায় গর্ত থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

Manual5 Ad Code

এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিনয় ভূষণ রায়, ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলামসহ থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Manual7 Ad Code

এদিকে লাশ উদ্ধারের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত মনাফের বড় ভাই মজির উদ্দিন জানান, ৫/৬ মাস আগে তাদের গ্রামে বৈদ্যুতিক খুটি বসানো নিয়ে জড়িতদের সাথে মনাফের দন্ধ হয়। সেটা নিয়ে শাহিনুরদের ক্ষোভ ছিলো মনাফের ওপর। ওই ক্ষোভের জেরে পরিকল্পনা করে আমার ভাই মনাফকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করে মাটি চাপা দিয়ে রাখে হত্যাকারীরা।

এছাড়াও নিহত মনাফের স্বজন ও এলাকাবাসীরা জানান, বছর দেড়েক আগে শাহিনুরের ভাই মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হোন। এ দুর্ঘটনার জন্য মনাফকে দায়ী করেন শাহিনুরসহ তার পরিবার।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ বিনয় ভূষণ রায় জানান, পূর্ব বিরোধের জেরে মনাফকে হত্যা করা হয়েছে বলে আটককৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে অভিযুক্ত করে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। জড়িত বাকি একজনকে ধরতে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2020
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..