ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: ডিএনএ প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্টতা মিলেছে আসামিদের

প্রকাশিত: ১২:১২ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৩০, ২০২০

ছাত্রাবাসে গণধর্ষণ: ডিএনএ প্রতিবেদনে সংশ্লিষ্টতা মিলেছে আসামিদের

Manual5 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের মুরারিচাঁদ কলেজ (এমসি) ছাত্রাবাসে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনার দুই মাস পর আসামিদের ডিএনএ প্রতিবেদন মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এসে পৌঁছেছে। ডিএনএ প্রতিবেদনে তাদের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। তবে আট আসামির ডিএনএ নমুনার মধ্যে পরীক্ষায় কতজনের নমুনায় সংশ্লিষ্টতা রয়েছে তা এখনো জানা যায়নি।

রোববার (২৯ নভেম্বর) রাত সোয়া ১০টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের।

Manual5 Ad Code

তিনি বলেন, ডিএনএ প্রতিবেদন শাহপরাণ (রহ.) থানার পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা ইন্দ্রনীল ভট্রাচার্যের হাতে এসে পৌঁছেছে। এখন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয়া হবে।

আশরাফ উল্যাহ তাহের বলেন, আলোচিত এ ঘটনার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও ডিএনএ প্রতিবেদন না আসায় চার্জশিট দেয়া সম্ভব হয়নি। ডিএনএ প্রতিবেদন হাতে আসায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই চার্জশিট দেয়া হবে এবং বিস্তারিত তথ্য সবাইকে জানানো হবে।

Manual8 Ad Code

এর আগে গত ১ অক্টোবর ও ৩ অক্টোবর দুই দিনে এ মামলায় গ্রেফতার ৮ জনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারের ডিএনএ ল্যাবে নমুনা সংগ্রহের পর পাঠানো হয় ঢাকার ল্যাবে। সেখান থেকে নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন প্রথমে আদালতে এসে পৌঁছায়। পরবর্তীতে এ প্রতিবেদন রোববার তদন্ত কর্মকর্তার হাতে এসে পৌছেছে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে সিলেট এমসি কলেজের ছাত্রাবাসের ভেতরে একটি রাস্তায় প্রাইভেট কারের মধ্যেই গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেন ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। অভিযুক্ত এসব কর্মীরা সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিৎ সরকারের অনুসারী বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় ৬ জনকে আসামি করে ওইদিন রাতেই মহানগর পুলিশের শাহপরাণ (রহ.) থানায় নির্যাতিতা নারীর স্বামী বাদি হয়ে মামলা করেন। এ মামলায় আরও ২-৩ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।

মামলার প্রেক্ষিতে র‌্যাব ও রেঞ্জ পুলিশের অভিযানে মামলার এজাহারনামীয় ৬ জনসহ মোট ৮ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতাররা হলেন- মামলার এজাহারনামীয় আসামি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রনি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের বাসিন্দা ও মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ এমসি কলেজ শাখার সভাপতি রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)।

এছাড়া সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার করা হয় মিসবাহ উর রহমান রাজন ও আইনুদ্দিনকে। পরে গ্রেফতার আটজনকেই ৫ দিন করে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। রিমান্ড শেষে তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে তারা সবাই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বর্তমানে তারা জেলহাজতে আটক রয়েছেন। এর সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, হাইকোর্টের নিদের্শে গঠিত তদন্ত কমিটি সিলেটের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের হলরুমে গত ৪ অক্টোবর থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত এ ঘটনায় গণশুনানি করে। পরে কমিটির সদস্যরা এমসি কলেজ ছাত্রাবাসের গণধর্ষণের ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সাক্ষীদের জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করে গত ১৬ অক্টোবর ১৭৬ পৃষ্ঠার একটি তদন্ত প্রতিবেদন হাইকোর্ট বেঞ্চে জমা দেয়া হয়েছে, যার শুনানি হয় ২০ অক্টোবর। এদিন শুনানি শেষে প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন হাইকোর্ট বেঞ্চ।

Manual2 Ad Code

এদিকে গণধর্ষণের এ ঘটনার পর কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে ২৬ অক্টোবর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিলেও কলেজের অধ্যক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের দোহাই দিয়ে কলেজ কমিটির এ প্রতিবেদনটি সিলগালা করে রাখেন।

Manual7 Ad Code

এছাড়া গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত চার আসামির ছাত্রত্ব এবং সনদ বাতিল করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি তাদের স্থায়ীভাবে এমসি কলেজ থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। বহিষ্কৃতরা হলেন- সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, মাহফুজুর রহমান মাসুম ও রবিউল হাসান।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2020
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..