জৈন্তাপুর সীমান্তে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেন্ডিস করিমের বাণিজ্য

প্রকাশিত: ২:০২ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২০

জৈন্তাপুর সীমান্তে সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বেন্ডিস করিমের বাণিজ্য

Manual4 Ad Code

ক্রাইম প্রতিবেদক :: সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকা সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত-বাংলাদেশে অবাধে পাচার হচ্ছে চোরাই পন্য ও গবাদি পশু। ভারতীয় চোরাচালান কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না। বেন্ডিস করিমের নেতৃত্বে চোরাকারবারীরা দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। দৈনিক কোটি কোটি টাকা চোরাচালান পাচার করা হচ্ছে। বুঙ্গাড়ীদের নেতৃত্বে রয়েছে জৈন্তাপুর উপজেলার নিজপাট ইউনিয়নের ঘিলাতৈল গ্রামের বাসিন্ধা মছদ্দর আলীর ছেলে সীমান্তের রাজা আব্দুল করিম ওরফে বেন্ডটিস করিম। সেই বিজিবির লাইনম্যান এর কাজ করে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।

প্রতিদিন রাতে উল্লেখিত কতিপয় ব্যক্তি বেন্ডিস করিমকে লাখ লাখ টাকা চাঁদার মাধ্যমে সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিভিন্ন ধরণের অবৈধ পণ্য দেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে। পণ্য সামগ্রীগুলো হল, বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র, মাদক, শাড়ি, গরু, মহিষ, কিটের কার্টুন, ওষুধ-ইন্ঞ্জেকশন, সেনিটাইজার, মোবাইল ফোন, খেলার জুতা, সাপের বিষ, মোটরসাইকেল-টায়ার, কসমেটিকস ও স্বর্ণের বার।

Manual8 Ad Code

এছাড়া সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে কাচামালের চালানও প্রবেশ করছে অনায়াসে। এর নিরাপদ রাস্তা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে, সিলেট-তামাবিল রোড, গোয়াইনঘাট-সালুটিকর রোড, কানাইঘাট-রাজাগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ রোড, জকিগঞ্জ-সিলেট রোড ও কোম্পানীগঞ্জ-সালুটিকর রোড। সীমান্ত বিজিবির হাত ছুয়ে সিলেট জেলা পুলিশের নাকের ঢগা দিয়ে সদর এলাকা হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিঠিয়ে পড়ছে এসকল পণ্য। এতে করে সামাজের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ এরকম কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। সিলেটের লাইনম্যান এর কাজ করছেন এক প্রভাবশালী নেতার ক্যাডার যার সংবাদ ইতিমধ্যে ক্রাইম সিলেটে প্রকাশিত হয়েছে।

Manual2 Ad Code

বিজিবির অবৈধ টাকার লাইনম্যান বেন্ডিস করিম চোরাকারবারীদের কাছ থেকে নিয়মের অতিরিক্ত টাকা আদায় করার চেষ্টা করেন। ফলে চোরাকারবারীরা করিম বাহিনীর সাথে একের পর এক সংঘর্ষ করে যাচ্ছে। তবে কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না বিজিবির নামে বেন্ডিস করিমের চাঁদাবাজি। তার এমন চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট চোরাকারবারীরা। বেন্ডিস করিম তার লোকজন নিয়ে এলাকায় আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। স্থানীয় প্রশাসন করিমের বিরুদ্ধে কোন ধরণের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেন্ডিস করিমকে গ্রেফতারের বদলে স্থানীয় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের উপর মহলে চাপে পড়ে মামলা দিতে বেন্ডিস করিমের সাথে সিষ্টেম ও বুঙ্গাড়ীদের চুক্তি মাধ্যমে কিছু সংখ্যাক গরু-মহিষ এবং হাতে গুনা কয়েক বস্তা মটরশুটি আটক করে জনসাধারনের আইওয়াশ করছে বলে জানান। তাও নাম মাত্র এক দুটি চালান আটক করেন। কিন্তু স্থায়ী ভাবে বন্ধ ও বড় ধরণের কোন অভিযান দিতে দেখা যায়নি।

মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে সীমান্তের ১৯ বিজিবির অধিনে ঘিলাতৈল এলাকা দিয়ে অবাধে আসছে চোরাচালান। নিরব ভূমিকা পালন করছে স্থানীয় প্রশাসন। চোরাচালাদের বিরুদ্ধে অভিযানে মাঠে রয়েছে সিলেট র‌্যাব-৯ এর সদস্যরা। এই চোরাকারবারীদের নেতৃত্ব দিয়ে লাইনম্যান বেন্ডিস করিম বিজিবির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এই টাকার লেনদেন নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষ হচ্ছে বেন্ডিস করিম ও চোরাকারবারীদের। তবে কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে সীমান্তের চোরাচালান। অবৈধ পথে আসা ভারতীয় গরু-মহিষের বৈধতা দিচ্ছে স্থানীয় জৈন্তাপুর বাজার। এছাড়া অন্যান্য পণ্য সিলেট নগরীতে নিরবে প্রবেশ করছে। এখানেও রয়েছে চোরাকারবারীদের প্রভাবশালী লাইনম্যান।যিনি আওয়ামীলীগ নেতাদের ছত্র-ছায়ায় রয়েছেন।

ইতোমধ্যে চোরাচালানের লাইনের চাঁদা নিয়ে জৈন্তাপুর বাজারে ২টি গ্রুপের মধ্যে মারামারি ঘটনাও ঘটেছে। যেকোন মুহুত্বে চোরাচালানকে কেন্দ্রকরে উপজেলার ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা এবং এবং কমলাবাড়ী এলাকায় খুনের মত ঘটনা ঘটতেপারে এমনটা আশংঙ্কা সচেতন মহলের। আগ খেকে বেন্ডিস করিম চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন স্থানীয় এলাকাবাসী। প্রতিদিন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সীমান্ত এলাকায় মহড়া দিতে থাকে বেন্ডিস করিমের ভাগিনা রুবেল-আলিম উদ্দিন ও বাহিনীর সদস্যরা। যার ফলে স্থানীয়রা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে জীবন-যাপন করছেন।

Manual2 Ad Code

এদিকে জৈন্তাপুর বিজিবি ক্যাম্পের আওতাধীন ১২৮৬নং আন্তর্জাতিক পিলার হতে ১২৯৬নং পিলার এলাকা। অন্যান্য এলাকার তুলনায় এই এলাকার সুযোগ সুবিধা ভালো। ২ থেকে ৩ মিনিটের মধ্যে বর্ডরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় বিনা বাঁধায় ঢুকতে পারে চোরাকারবারীদের গাড়ী সমুহ। নির্ধারিত টাকা লাইনম্যান বেন্ডিস করিমের নিকট পরিশোধ করার পর পর কয়েক মিনিটের মধ্যে সীমান্তের ঘিলাতৈল, ফুলবাড়ী, টিপরাখলা, গৌরীশংক, কমলাবাড়ী, গোয়াবাড়ী, বাইরাখেল অন্যতম।

সুযোগ সুবিধা ভাল থাকায় উপজেলার এই রোড গুলোদিয়ে অন্তত ৮ হতে ১০কোটি টাকার ভারতীয় মটর সাইকেল, মোবাইল হ্যান্ড সেট, শাড়ী, মহিষ,গরু, কসমেট্রিক্স, হরলিক্স, ইয়াবা, ফেন্সিড্রিল, বিভিন্ন ব্যান্ডের অফিসার চয়েস মদ, আমদানী নিষিদ্ধ ভারতীয় শেখ নাছির উদ্দিন বিড়ি, বিভিন্ন ব্যান্ডের সিগারেট, সুপারী, বাংলাদেশ হতে ভারতে পাচার হচ্ছে হাজার হাজার বস্তা মটরশুটি, মটর ঢাল, নারী। সাথে স্থানীয় ইউপি সদস্য মনসুরসহ বুঙ্গাড়ীদের গরু-মহিষের চালান আসছে। এই গরু-মহিষের বৈধতা দিচ্ছে স্থানীয় জৈন্তাপুর বাজারের ইজারাদাররা।

Manual6 Ad Code

সীমান্তে বসাবাসরত সাধারন নাগরিকরা জানান, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়োজিত বেন্ডিস করিমের প্রায় ৩০জন সোর্সদের মাধ্যমে প্রতিদিন ২০ হতে ২৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ১০ হতে ১৫ কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য ও গবাদি পশু বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সীমান্ত বাসিন্ধারা আরও জানান কিছু কিছু সময় অনেক চোরাকারবারী নিদিষ্ট করিমকে নির্ধারিত টাকা পরিশোধ না করলে ওই চোরাকারবারীর নিয়ে আসা পণ্য ও গবাদি পশু আটক করা হয়। সীমান্তে আইনশৃংখলা বাহিনীর একমাত্র অবৈধ আয়ের হাতিয়ার হলেন সীমান্তের রাজা বেন্ডিস করিম। এর আগে ছিলেন শামছু মিয়া নামের আরেক লাইনম্যান। তাকে লাইন আউট করে করিম এখন সীমান্তের রাজা। সংবাদ চলমান

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2020
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..