আত্মীয়ের বাসায় ব্যর্থ হয়ে বই মেলায় অভিজিৎ রায়কে খুন

প্রকাশিত: ১০:০৫ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২০

আত্মীয়ের বাসায় ব্যর্থ হয়ে বই মেলায় অভিজিৎ রায়কে খুন

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : বিজ্ঞান মনস্ক লেখক ও মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়কে খুনের টার্গেট ছিল আত্মীয়ের বাসায়। সেটা ব্যর্থ হয়ে বই মেলায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে জঙ্গিরা। আর সেই পরিকল্পনায় সফলও হয় তারা।

অভিজিৎ রায় হত্যা মামলায় দেয়া চার্জশিটে এমনটাই উল্লেখ করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম।

এ মামলার আসামি মোজাম্মেল হুসাইন সায়মনের দেয়া জবানবন্দি উল্লেখ করে চার্জশিটে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালের জুলাই/আগষ্ট মাসে নাহিদের মাধ্যমে আশফাকসহ আনসার আল ইসলামের সদস্য হয় সায়মন। সেপ্টেম্বর মাসে সায়মনকে ইউনুস মাসুল মেজর জিয়ার সাথে পরিচয় করে দেয়। মেজর জিয়া তাকে প্রোটেক্টেড টেক্সড আইডি খুলে দেয়। এরপর থেকে সায়মন মেজর জিয়ার কাছে রিপোর্ট দিত।

Manual2 Ad Code

সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে সায়মনকে মেজর জিয়া শেওড়া পাড়ায় একটি বাসায় যেতে বলে। সায়মন সেখানে গিয়ে আবির, হাসান, সোহেল ওরফে শাহাবদের সাথে পরিচিত হয়। সেখানে মুলত বেসিক আইটি ট্রেনিং হয়। এরপর দক্ষিণখানের একটি বাসায় বেসিক ট্রেনিং করে। ট্র্রেনিং এর বিষয় বস্তু ছিল গেরিলা যুদ্ধের কৌশল, বাসা ভাড়া নেয়ার কৌশল, বাসায় বসবাসের নিয়ম, নিরাপত্তা কৌশলসহ এলমি শিক্ষা। এছাড়াও কিভাবে কাউকে অনুসরণ করতে হবে এবং ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারে সতর্কতা বিষয়ে ট্রেনিং।

Manual8 Ad Code

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে সায়মন, আবির, সোহেল, হাসান এলিফ্যান্ট রোডে বাসা ভাড়া নেয়। সেখানে তারা দুই মাস থাকেন। মেজর জিয়া সেখানে মাঝে মাঝে আসতো। এই বাসা থেকে ব্লগার অভিজিৎ রায়কে তারা অনুসরণ করে। অভিজিৎ রায়কে হত্যা করার লক্ষ্যে অনুসরণ করতো এবং কিভাবে কোথায় হত্যা করা যায় তা রেকি করতো। সর্বশেষ ২০১৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি অভিজিৎ রায়কে ইন্ধিরা রোডে তার আত্মীয়ের বাসায় অনুসরণ করে, ব্যর্থ হলে মেজর জিয়ার নির্দেশ করে বই মেলায় তাকে হত্যা করতে হবে।

Manual3 Ad Code

চার্জশিটে বলা হয়, ২৫ ফেব্রুয়ারি মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আবু সিদ্দিক সোহেল, আকরাম হোসেন ওরফে আবির ওরফে আদনান ও হাসান বই মেলায় অভিজিৎ রায়কে না পেয়ে ফেরত চলে যায়। পরদিন চারজনসহ মেজর জিয়া, সেলিম, মুকুল রানা এবং অ্যাপস শাখার মো. আরাফাত রহমান, আলী ওরফে খলিল, আনিক, অন্তু বই মেলায় যায়। আসামি মোজাম্মেল হুসাইন প্রথমে অভিজিৎ রায়কে দেখে এবং আকরাম, হাসান ও আবু সিদ্দিক সোহেলের সাথে বিষয়টা নিয়ে পরামর্শ করে। মোজাম্মেল হুসাইন মেজর জিয়ার নির্দেশ মোতাবেক মুকুল রানাকে জানায়। অভিজিৎ রায়কে এ্যাপস শাখার লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে কোপানোর সময় মোজাম্মেল হুসাইন অন্যান্যদের সাথে চারপাশে অবস্থান করে যেন হত্যাকারীরা সহজে পালিয়ে যেতে পারে। কেউ তাদের ধরে ফেলতে না পারে।

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, আবু সিদ্দিক সোহেল, আকরাম হোসেন এবং হাসান ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যার অভিপ্রায়ে অনুসরণ এবং রেকি করাসহ হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী আসামিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। আরাফাত রহমান, আলী, আনিক ও অন্তু আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের অপারেশন শাখার সদস্য। সাংগঠনিকভাবে তাদের দায়িত্ব হচ্ছে টার্গেট ব্যক্তিকে হত্যা করা। অভিজিৎ রায়কে চারজন আসামি হত্যার উদ্দেশ্যে চাপাতি দিয়ে নির্মমভাবে কোপায়। অভিজিৎ রায় এর স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা অভিজিৎকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাকেও কুপিয়ে বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলী কেটে ফেলে এবং মারাত্মক আহত করে। অপারেশন শাখার চারজন আসামি যেন হত্যাকাণ্ড সংগঠিত করে নিরাপদে পালিয়ে যেতে পারে তার জন্য তাদের চারপাশে মেজর জিয়া, সেলিম, মুকুল রানা, সায়মন, আবু সিদ্দিক সোহেল, আকরাম হোসেন এবং হাসান অভিজিৎ রায়কে কোপানোর সময় কর্ডন করে রাখে। মামলরার অপর আসামি শফিউর রহমান ফারাবীকে অভিজিৎ রায়কে হত্যার ঘটনা সংঘটনে প্ররোচনা দানের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2020
S S M T W T F
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
29  

সর্বশেষ খবর

………………………..