নারী ও শিশু নিরাপদ নয় কোথাও, এখন সময় প্রতিরোধের

প্রকাশিত: ৯:২৪ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১০, ২০২০

নারী ও শিশু নিরাপদ নয় কোথাও, এখন সময় প্রতিরোধের

Manual7 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : নারী ও শিশু নিরাপদ নয় কোথাও। পাহাড়ে-সমতলে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, কলকারখানায়, পথেঘাটে বা পরিবহনে- সর্বত্রই নির্যাতিত হচ্ছে তারা। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে সারাদেশের প্রতিটি এলাকায় এখনই প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে সংহতি মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

Manual8 Ad Code

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকালে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে নারী সংহতির উদ্যোগে সাম্প্রতিক সময়ে আলোচিত নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালিত হয়।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অপরাজিতা চন্দের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নারী সংহতির জান্নাতুল মরিয়ম, ইকরামুন্নেসা চম্পা, সুমি রেক্সোনা, রেবেকা নীলা ও অপরাজিতা চন্দ। এছাড়া সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক মিথিলা মাহফুজ, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, রাবেয়া রফিক রিমি, গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির প্রবীর সাহাসহ অনেকে।

Manual8 Ad Code

বক্তারা বলেন, বর্তমান সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা জনগণের মধ্যে এক ভয় ও দিশেহারা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সারাদেশে নারী ও শিশুদের এ নিরাপত্তাহীনতা প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে।

তারা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ধর্ষণসহ, কাফরুলে পোশাকশ্রমিক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ও সবজুবাগে শিশু ধর্ষণ এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা জনমনে আতঙ্ক তৈরি করেছে। পাহাড়ে-সমতলে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, কলকারখানায়, পথেঘাটে কিংবা পরিবহনে, কোথাও নারীর নিরাপত্তা দিতে সক্ষম নয় এ রাষ্ট্র। এ নিরাপত্তাহীনতা জনগণের মধ্যে এক ভয় ও দিশেহারা পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সারাদেশে নারীর এ নিরাপত্তাহীনতা রাষ্ট্রের ভূমিকা-কে প্রশ্নের মুখোমুখি করেছে।

nari-002

বক্তারা আরও বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং সমাজের পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি সমাজে ধর্ষণের সংস্কৃতি জিইয়ে রেখেছে। অবিলম্বে ধর্ষণের বিচার ত্বরান্বিত করা এবং ধর্ষণের সংস্কৃতি প্রতিরোধে জনগণকে প্রতিরোধ ও সংগঠিত আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয় এ কর্মসূচি থেকে।

‘কেবল গ্রেফতারের মধ্যেই ধর্ষণ-নিপীড়ন মোকাবিলা সম্ভব নয়। অবিলম্বে ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের সঙ্গে জড়িত দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

Manual7 Ad Code

তারা বলেন, হাজারও ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের খবর গণমাধ্যমে এসেছে গোটা বছরজুড়ে। কোথাও কোথাও প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ফেটে পড়া মানুষকে শান্ত করতে লোক দেখানো কিছু ‘রাষ্ট্রীয় তৎপরতা’ চোখে পড়লেও আদতে ধর্ষক-নিপীড়কদের বিচারের মুখোমুখি করার চেয়ে সরকারি ব্যর্থতা চাপা দেয়াটাই অগ্রাধিকার পেয়েছে। উল্টো ক্ষমতাবান নিপীড়কদের নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতার নজিরই বেশি। গোটা রাষ্ট্র ও সমাজ ধর্ষণ, যৌন নিপীড়নের বিষয়ে এতটাই নির্লিপ্ত হয়ে পড়েছে যে, বিক্ষুব্ধ মানুষ কোন ঘটনা রেখে কোনটির প্রতিবাদ করবে তার কিনারা করতে পারছে না।

Manual7 Ad Code

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, কেবল বিচার চাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার সময় শেষ হয়েছে। এখন দরকার নগরিক সমাজের আরও সক্রিয় প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ। কারণ একদিকে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ এবং অন্যদিকে অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র- এ দুইয়ে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে যে, এ সমাজে শিশু-নারী-পুরুষ কেউই আর নিরাপদ নয়।

বিদ্যমান অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রশ্নের ঊর্ধ্বে রেখে বিচ্ছিন্নভাবে ধর্ষণ-নিপীড়ন বা অন্য যেকোনো সমস্যার সমাধান হবে না। তাই ‘সহ্যের সীমা ভেঙে, রুখে দাঁড়ানো’র আহ্বানে এলাকায় এলাকায়, পাড়া-মহল্লায় সংগঠিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার এবং ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নবিরোধী ঐক্যবদ্ধ নারী আন্দোলন গড়ে তোলার কথা জানান বক্তারা।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..