সিলেটে নরুল-আবুলের টোকেন বাণিজ্য: দেদারছে চলছে নাম্বার বিহীন সিএনজি

প্রকাশিত: ১:১৩ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২০

সিলেটে নরুল-আবুলের টোকেন বাণিজ্য: দেদারছে চলছে নাম্বার বিহীন সিএনজি

Manual8 Ad Code

আফজালুর রহমান চৌধুরী :: সিলেট জেলার উপজেলাগুলোতে নাম্বার বিহীন অটোরিক্সা (সিএনজি) গাড়ীতে সংবাদপত্র বহন ও জাতীয় জরুরী সংবাদপত্র লাগানো স্টীকার বা সাইন আর্ট লিখিত গাড়ীগুলো আটক করতে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ট্রাফিক পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

Manual1 Ad Code

সেই সাথে সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন বলেছিলেন, সাংবাদিক পেশার ভাবমূর্তি ক্ষন্ন করে যারা সিএনজি গাড়িতে জরুরী সংবাদপত্র পরিবহন লিখে অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে লিপ্ত রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এসব গাড়ি আটকের জন্য জেলার সকল থানার পুলিশ প্রশাসন ও জেলা ট্রাফিক পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

পুলিশ সুপারের সেই নির্দেশ অনুযায়ী কিছুদিন সিলেট জেলা ট্রাফিক পুলিশ সংবাদপত্র স্টীকার লাগানো সিএনজি গাড়ী আটক অভিযান শুরু করেন। কিন্তু বর্তমানে সকল অভিযান বন্ধ রয়েছে।নতুন সড়ক পরিবহন আইনের বেলায় দেখা গেছে জেলা পুলিশ সদস্য এখন পর্যন্ত কোন নাম্বার বিহীন অটোরিক্সা (সিএনজি) আটক করেননি।

এসকল নাম্বার বিহীন অটোরিক্সা (সিএনজি) আটক না করার মূল কারণ হচ্ছে টোকেন বাণিজ্য। আর বাণিজ্যের বাগ পাচ্ছে নির্ধারিত এলাকার অসাধু পুলিশ সদস্যরা।

Manual1 Ad Code

সিলেট জেলার জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ সড়কে হাজার হাজার অবৈধ রেজিস্ট্রেশনবিহীন (নম্বরবিহীন) সিএনজি চালিত অটোরিক্সা বিশেষ টোকেনের মাধ্যমে দেদারছে চলাচল করছে। মাঝেমধ্যে প্রশাসনের অভিযানে দু’চারটি নম্বরবিহীন অটোরিক্সা আটক হলেও অদৃশ্য কারণে অভিযানগুলো থেমে যায়! ফলে এই তিন সড়কে নম্বরবিহীন অটোরিক্সা চলাচলে বাধা থাকছে না কোথাও।

সরেজমিন অনুসন্ধান নামে টিম। উটে আসে সিলেটের জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চার সড়কের টোকেন বাণিজ্যের প্রদানসহ সিন্ডিকেটের কয়েকজনের নাম।

Manual4 Ad Code

জানা গেছে, এই তিন সড়কে রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি অটোরিক্সার সংখ্যা প্রায় আড়াই হাজারেরও বেশী। আর অবৈধ গাড়িগুলো চলছে বিশেষ টোকেন’র মাধ্যমে। টোকেন বাণিজ্য করে মাসে লাখ লাখ ও বছরে কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। অবৈধ এই কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে এ্যাকশন নিতে সাহস যেন কারই নেই!

টোকেন সিন্ডিকেট প্রদানের নাম নুরুল হক উরফে টোকেন নুরুল আর অপরজন হলেন  আম্বরখানা অটোরিকশা সালুটিকর শাখার সভাপতি আবুল হোসেন খান। নরুল জৈন্তাপুর উপজেলার ৫নং ফতেহপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের বালিপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মনাফের পুত্র। তাদের ইশারায় এই চার সড়কে দীর্ঘদিন দিন থেকে চলছে নম্বরবিহীন অটোরিক্সা। পরিচিতি শুধু টোকেন।

জানা যায়, এই সড়কগুলোতে রেজিস্টেশনবিহীন অটোরিক্সা চলতে প্রতিটি সিএনজি অটোরিক্সাকে প্রতি মাসে কিনতে হয় ৫শ’ থেকে ১৫শ’ টাকার টোকেন। আদায়কৃত এই চাঁদা থেকে নম্বর ও রেজিষ্ট্রেশনবিহীন অবৈধ সিএনজি অটোরিক্সা চলাচলের জন্য বিআরটিএ এবং প্রশাসনের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করা হয়ে থাকে বলে বিশ্বস্থ একটি সূত্র তা নিশ্চিত করেছে।

Manual3 Ad Code

সরেজমিন অনুসন্ধান ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টোকেন বাণিজ্যের মূলহোতা নুরুল হক ও আবুল তাদের গড়ে তোলা সিন্ডিকেটের কয়েকজন মিলে তাদের বড় একটি সিন্ডিকেট। এই তিন উপজেলার সব ক’টি সড়কের নিয়ন্ত্রকরা রেজিস্টেশনবিহীন সিএনজি অটোরিক্সা (অনটেষ্ট) গাড়িতে টোকেন লাগিয়ে দিলে সেটি চলাচলের জন্য বৈধ হয়ে যায়! সিএনজি অটোরিক্সা তাদের মাধ্যমে চলাচলে প্রথমে এককালীন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা চাঁদা নেওয়ার পর সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সিএনজি অটোরিক্সার জন্য একটি টোকেন বরাদ্দ দেওয়া হয়। এই টোকেন অটোরিক্সার সামনের গ্লাসে লাগিয়ে দিলে গাড়িগুলো সড়কে চলতে আর কোনো অসুবিধা থাকেনা।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বিআরটিএ’র পক্ষ থেকে নতুন সিএনজি চালিত অটোরিক্সার নিবন্ধন বন্ধ থাকায় চার উপজেলার সব সড়কের নম্বরবিহীন অটোরিক্সা চলাচলের জন্য টোকেন বাণিজ্য গড়ে তুলেন নুরুল হক ও আবুল বাহিনী।

শুধু তাই নয় তাদের দাবী করেন সিলেটের প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ থানা পুলিশের সব সেক্টরে টোকেন বাণিজ্য করে আদায়কৃত টাকার ভাগ দিয়েই টুকেন ব্যবসার অনুমতি নিয়েছেন। তাই তাদের দেয়া পরিচিতি টোকেন নিতে পারলেই জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট , কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ রোডে অবৈধ নম্বরবিহীন অটোরিক্সা চলতে বাধা থাকেনা। অন্যথায় কেউই রেজিস্ট্রেশনবিহীন সিএনজি অটোরিক্সা চালাতে পারেবে না বলে জানায় কয়েকজন চালক। তবে, থানা পুলিশের সাথে এব্যাপারে কথা হলে তারা টোকেন বাণিজ্যের বিষয়টি জানেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তারা।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..