সিলেট ২৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৮ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:২৮ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২৯, ২০১৯
সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে ঈদের পূর্বে নগরীর মাছিমপুর ‘ল’ কলেজের পাশে বসানো হয়েছিলো অবৈধ পশুর হাট। গেইটে টানিয়ে দেওয়া হয়েছিলো সিলেট জেলা পরিষদের সাইনবোর্ড। সে সময় পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমানের স্বাক্ষর যুক্ত একটি অনুমতিপত্রে স্বাক্ষর নিয়ে পাওয়া গিয়েছিলো পক্ষে-বিপক্ষে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। তিনি হজ্বে থাকায় বিষয়টির স্পষ্ট কোন বক্তব্য পাওয়া না গেলে প্রধান নির্বাহী জানিয়েছিলেন সাক্ষরটির জালিয়াতির কথা। তার সাথে একই সুরে বক্তব্য দিয়েছেল পরিষদের কয়েকজন সদস্যও। সম্প্রতি চেয়ারম্যান হজ্ব থেকে দেশে ফিরলে বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) বসে জেলা পরিষদের মাসিক সভা। সেই সভায় পশুর হাটের বিষয়টি তুলে ধরেন পরিষদের সদস্য ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য নুরুল ইসলাম ইচন মিয়া, ২নং ওয়ার্ড সদস্য ইমাম উদ্দিন, ১০ নং ওয়ার্ড সদস্য সাইয়্যেদ আহমদ সুহেদ, ১ নং ওয়ার্ড সদস্য শাহানুর আহমদ, ১০ নং ওয়ার্ড সদস্য আলমাছ উদ্দিন, ৮নং ওয়ার্ড সদস্য আশিক মিয়া, ১২ নং ওয়ার্ড সদস্য নজরুল ইসলাম, সংরক্ষিত ৫নং ওয়ার্ড সদস্য সাজনা সুলতানা হক চৌধুরী। কারা বসিয়েছিলো সেই পশুর হাট এমন বক্তব্যে উত্তপ্ত হয়ে উঠে পরিষদের মাসিক সভা। চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর জাল করে জেলা পরিষদের নামে কারা সেই পশুর হাট বসিয়ে ছিলেন এর সঠিক তদন্ত দাবী করেন তারা।
এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান বলেন, আমি কোন পশুর হাটের অনুমোদন দেই নি বা কোন কাগজে স্বাক্ষর করি নি। এই বক্তব্য দিয়েই তিনি সভাস্থল ত্যাগ করলে পরে পরিষদের সদস্যদের শান্ত করতে প্রধান নির্বাহী দেবজিৎ সিংহ আশ্বাস দেন, বিষয়টি আলোচনা সাপেক্ষে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে পরিষদের চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরযুক্ত অনুমতিপত্র নিয়ে বৈধ পশুর হাট বসিয়েছে বলে ইজারাদার দাবী করেছিলেন অ্যাডভোকেট গিয়াস নামের জনৈক ব্যক্তি। সে সময় তিনি বলেছিলেন, প্রতি বছর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন জায়গায় বৈধভাবে গরুর হাট বসিয়ে আসছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে গিয়াস নামের ঐ ব্যক্তি কার কাছ থেকে কত টাকার বিনিময়ে এই পশুর হাট ইজারা নিয়ে থাকেন। স্বাক্ষর সম্বলিত একটি কাগজ কোতোয়ালি থানার ওসি সেলিম মিয়াকেও হাট কর্তৃপক্ষ দেখিছেন বলেও জানিয়েছিলেন ওসি।
হাটের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছিলেন জেলা পরিষদের ১০ নং সদস্য স্যায়িদ আহমদ সুহেদ, ৮ নং সদস্য আশিক মিয়া, ৪ নং সদস্য মুহিবুল হক, ৭ নং সদস্য লোকন মিয়া ও ১ নং সদস্য মোহাম্মদ শাহনুরসহ অন্যরা। তারা জানিছিলেন, পরিষদ থেকে কোনো হাট ইজারা দেয়া হয়নি বা এ সংক্রান্ত বিষয়ে পরিষদের কোনো সভায় আলোচনা হয়নি। এ সময় পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেবজিৎ সিংহ ঈদের আগে এ বিষয়ে বলেছিলেন, আমাদের কোনো গরুর বাজার নেই, আইনগত দিক দিয়ে কাউকে অনুমতি দেয়ার সুযোগও নেই। চেয়ারম্যান সাহেব ইজারার কোনো কাগজে স্বাক্ষর করার কথা না, স্বাক্ষর নাম্বারও নাই।
বিষয়টি আমি মেয়র, পুলিশ ও জেলা প্রশাসককে জানিয়ে দিয়েছি আমাদের কোনো গরুর হাট নেই। যারা আমাদের নাম ব্যবহার করে বাজার বসিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে, সে যদি পরিষদের কেউ হয় তাকেও ছাঁড় দেয়া হবেনা। চেয়ারম্যান সাহেব হজ থেকে আসার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। গত ২৫ আগষ্ট পরিষদের চেয়ারম্যান হজ থেকে দেশে ফিরার পর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় নিয়মিত মাসিক সভায় সদস্যদের নিয়ে পরিষদের প্রথম বৈঠকে বসেন চেয়ারম্যান। কিন্তু সেই পশুর হাটের প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান কোন বক্তব্য দিতে না চাইলে বিষয়টি উপস্থান করেন পরিষদের প্রায় ১০ জন সদস্য, এরপরই শুরু হয় হট্টগুল।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, পরিষদের সদস্যরা দাবী তুলেছেন তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের। তাই পরবর্তীতে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ব্যাপারে সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বুধবার রাতেই বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের ঘাঁটাঘাটি না করার জন্য বলেন। স্বাক্ষর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন স্বাক্ষর দেইনি, আর এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই। এরপরও তিনি বলেন, একমাত্র বৈধ পশুর হাট কাজিরবাজার ছাড়া ছাত্রলীগ-টাত্রলীগ, যুবলীগসহ সব পশুর হাট’ই অবৈধ ছিলো।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd