সিলেট ৮ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪৮ অপরাহ্ণ, জুলাই ৩১, ২০১৯
‘আপনি কি মিডিয়াকর্মী? হাসপাতাল পরিচালকের অনুমতি নিয়ে এসেছেন? আপনার সঙ্গে হাসপাতালের কর্মকর্তা কে এসেছেন? কেন আপনি রোগীর সঙ্গে কথা বলছেন? আপনাকে এক্ষুণি এখান থেকে চলে যেতে হবে।’
আজ বুধবার দুপুর ১টায় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদককে ছয়তলায় একজন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখে ঘিরে ধরেন জনা পাঁচেক আনসার বাহিনীর সদস্য।
এ প্রতিবেদক তার পরিচয় দিলেও রোগীর অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলায় বারবার বাধা দেন আনসার সদস্যরা। হাসপাতালে অবস্থান কিংবা কথা বলার ব্যাপারে কবে থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো জানতে চাইলে তাদের সাফ কথা, ‘আপনাকে পরিচালকের অনুমতি নিয়েই কথা বলতে হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু এ প্রতিবেদককে একাই নয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের ডেঙ্গু রোগীদের তথ্য সংগ্রহে বাধা দেয়া হচ্ছে। হাসপাতালে কর্তব্যরত আনসার সদস্যদের মিডিয়াকর্মীদের ওপর কঠোর নজরদারির নির্দেশ দিয়েছেন হাসপাতাল পরিচালক।
জানা গেছে ঢামেক হাসপাতালে গত কয়েক দিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত একাধিক রোগীর মৃত্যু সংবাদসহ বিভিন্ন তথ্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় হাসপাতাল পরিচালক এ ধরনের নির্দেশনা দিয়েছেন।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে একাধিক গণমাধ্যমকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘বর্তমানে বিরাজমান ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। এ ধরনের ইতিবাচক তথ্য সংগ্রহেও বাধার সৃষ্টি করা হচ্ছে।’ তারা বলেন, রোগী ও অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলতে হলেও যদি পরিচালকের অনুমতি নিতে হয় তাহলে কাজ করা মুশকিল।
আজ দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, ঢামেক-২ হাসপাতালের নিচতলায় রক্তের নমুনা সংগ্রহ কক্ষের সামনে অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুর লম্বা লাইন। তারা কেউ রক্তের নমুনা কেউ রক্তের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট সংগ্রহ আবার কেউ রিপোর্ট দেখিয়ে ভর্তির অপেক্ষায় রয়েছেন। রোগী বা অভিভাবক কারও সঙ্গে কথা বলতে দেখলেই আনসার সদস্যদের বাধা দিতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে কথা হয় ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. এ কে এম নাসির উদ্দীনের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আনসার সদস্যদের এমন নির্দেশনা দেয়া আছে। দু-এক বছর ধরে আমরা সাংবাদিকদের ঢামেকের ভেতরে ঢুকে ফ্রিলি (নির্বিঘ্নে) কথা বলতে দিচ্ছি না। কারণ একসঙ্গে ১০০-২০০ সাংবাদিক হাসপাতালে হাজির হলে রোগীদের সেবায় ব্যাহত হবে। এ ছাড়া অনেক সময় সাংবাদিক সরাসরি রোগীর কাছে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তারা মারধরের শিকার হতে পারে, ক্যামেরা ছিনতাই হতে পারে। এ কারণে আমরা সরাসরি কাউকে সংবাদ সংগ্রহ করতে দেই না।’
তিনি আরও বলেন, ‘কারও যদি কোনো সংবাদ সংগ্রহের প্রয়োজন থাকে তাহলে সে আমার কাছে আসবে। আমি বিষয় শুনে প্রতিনিধির মাধ্যমে তাদের রোগীদের সঙ্গে কথা বলার ব্যবস্থা করে দেব।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd