প্রতারনার টাকায় কোটিপতি স্বামী-স্ত্রী দম্পতি

প্রকাশিত: ১২:৫৯ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১২, ২০২৪

প্রতারনার টাকায় কোটিপতি স্বামী-স্ত্রী দম্পতি

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :: চাঁদাবাজি, ব্ল‍্যাকমেইলার, জাল দলিল সৃজন ও বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের জাল নথি পত্র তৈরির গডফাদার এবং ভয়ংকর প্রতারক স্বামী – স্ত্রী দম্পতি। মাদারীপুর সদর উপজেলার কাজীবাড়ি আমিরাবাদ বর্তমানে ১৩/এ/২, দবির বিল্ডিং, (৫ম তলা), কে,এম, দাস লেইন, টিকাটুলী, ওয়ারী ঢাকার বাসিন্দা মৃত কাজী আনোয়ারের ছেলে কাজী মশিউর হোসেন দিপু ও তার স্ত্রী মিসেস শারমিন আক্তার।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন পন্থায় ব্ল‍্যাকমেইলিং, প্রতারনার ও চাঁদাবাজির অভিযোগে পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলো কাজী মশিউর হোসেন দিপু। বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে চাঁদা দাবি ও প্রতারনার দায়ে তাকে বেশ কয়েকবার জেলহাজতে যেতে হয়েছিলো। তার প্রথম লক্ষবস্তু থাকে অনেক জমি জমার মালিক কিন্ত আর্থিক ভাবে দুর্বল ও জমি জমা সংক্রান্ত বিষয়ে একদম বুঝে না এরকম ব্যক্তি বর্গ। দিপু সে নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে আদালতে আসা সাধারণ মানুষের সাথে প্রথমে সখ্যতা গড়ে তুলে এবং বিভিন্ন ভাবে মামলা মোকদ্দমায় সহায়তার কথা বলে তাদের সমস্ত দলিল পত্র নিজের দখলে নিয়ে নেয় এবং মামলা মোকদ্দমা পরিচালনার কথা বলে তাদের কাছ থেকে নিজ নামে বা বেনামে ক্ষমতাপত্র নেয়। এইভাবে তার প্রতারণার সুত্রপাত ঘটে। গাজীপুর জেলার টঙ্গী থানার অর্ন্তগত পাগাড়, মরকুন মৌজার ও নারায়নগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ থানার গৌতায়াব মৌজার প্রায় ৭৪ একর সম্পত্তি এবং ঢাকা জেলা ভাটারা থানার ভাটারা মৌজায় প্রায় ২০ একর ও রাজারবাগ মৌজায় প্রায় ২১৩ শতাংশ সম্পত্তি মালিক ছিলেন কাজী আবদুল হালিম। ইহা হইতে কিছু সম্পত্তি তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের নিকট বিক্রয় করেন।

পরবর্তীতে কাজী আবদুল হালিম বিগত ০৩/০৮/১৯৯১ইং তারিখে মৃত্যু বরণ করিলে তাহার অবশিষ্ট অবিক্রিত ত্যাজ্যবিত্ত সম্পত্তিতে স্থলাবর্তী ওয়ারিশক্রমে মালিকানা লাভ করেন তাহার ৪ পুত্র যথাক্রমে ১) কাজী মুহাম্মদ নাছিরুল হক, ২) কাজী নঈমুল হক, ৩) কাজী আলী আজম, ৪) কাজী আলী আজিম ও তিন কন্যা ৫) সাঈদা আক্তার, ৬) জাফরিন আক্তার কাজল, ৭) সেলিনা আক্তার। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, কাজী মশিউর হোসেন দিপু উক্ত কাজী আবদুল হালিমের সাথে থাকাবস্থায় তাহার মৃত্যুর পর কিছু দলিলপত্রাদী ও খালি স্ট্যাম্প নিজ জিম্মায় নিয়ে যায়।

পরবর্তীতে উহা ব্যবহার করিয়া বিগত ১৭/০১/১৯৮৯ ইং তারিখে কাজী আবদুল হালিমের স্বাক্ষর জাল করিয়া তার স্ত্রী শারমিন আক্তারকে গ্রহিতা ও কাজী আবদুল হালিমকে দাতা উল্লেখ করিয়া পাগাড় মৌজার প্রায় ৩৪ একর সম্পত্তির একটি আন রেজিস্ট্রার্ড দলিল সৃজন করিয়া নেন। এবং বিগত ৫/২/৮৬ইং তারিখে কাজী আবদুল হালিমের স্বাক্ষর জাল করিয়া আর একটি আন রেজিস্ট্রার্ড দলিল সৃজন করিয়া ঢাকার ভাটারা মৌজার প্রায় ২০ একর সম্পত্তি আত্মসাত করেন। এসব অবৈধ ও জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পত্তি বৈধ করার জন্য একের পর এক মিথ্যা মোকদ্দমা ও জাল দলিলাদি সৃজন করেন পরবর্তীতে উক্ত সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যক্তি / প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রয় করিয়া বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেন।

নরসিংদী জেলার শিবপুরের স্থায়ী বাসিন্দারা জানান, কাজী মশিউর হোসেন দিপু ও মিসেস শারমিন আক্তার নরসিংদী জেলায় কয়েকশত বিঘা জমি খরিদ করিয়াছেন।

এদিকে মাদারীপুর সদরের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, দীপু ও তার স্ত্রী শারমিন কয়েক বছরে আমাদের এলাকায় প্রায় শত বিঘা জমি কিনেছেন। এছাড়াও সিটি ব্যাংক সহ বিভিন্ন ব্যাংকে ও শেয়ার বাজারে তাদের বিপুল পরিমাণ অর্থ ডিপোজিট ও বিনিয়োগসহ মাদারীপুর ও ঢাকার বাসায় বিপুল নগদ অর্থ রয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। মালিবাগের প্রবীণ বাসিন্দা জহুর উদ্দিন বলেন ” দিপু একটা সময় এডভোকেট কাজী আবদুল হালিমের চেম্বারে চা টেনে খাওয়াইছে এবং তার বাসার বাজার থেকে শুরু করে প্রায় সব কাজ করে দিয়েছে এবং তার মহুরী হিসেবেও কাজ করেছে” কিন্তু লোকে মুখে শুনি সে কাজী আবদুল হালিমের সম্পত্তির মালিক বনে গেছে।” দিপু ও তার স্ত্রী শারমিন আক্তারের অবৈধ কর্মকান্ডে অনেক ব্যক্তি ও পরিবার আজ নিঃস্ব এবং তাদের ভয়ে অনেকে এলাকা ছাড়া। তাদের এসব অবৈধ কাজে সহযোগীতা করছে কিছু অসাধু সাংবাদিক, আইনজীবি ও ২০-২৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল। তাদের বিরুদ্ধে ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়নগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার আদালতে একাধিক মামলা চলামান আছে। কাজী মশিউর রহমান দিপুর বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে বার বার ফোন করলে বন্ধ পাওয়া যায়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2024
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সর্বশেষ খবর

………………………..