নবীগঞ্জে টিলায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস: দুর্ঘটনার আশঙ্কা!

প্রকাশিত: ৬:৩৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩

নবীগঞ্জে টিলায় ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস: দুর্ঘটনার আশঙ্কা!

Manual6 Ad Code

নবীগঞ্জ সংবাদদাতা: সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা না ঘটলেও নবীগঞ্জের টিলায় স্থানীয়দের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসের প্রবণতা বাড়ায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন দায়িত্বশীলরা। কারণ, টানা বর্ষণ ও ঢলের কারণে এসব এলাকায় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। এমন অবস্থায় মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে বসবাস করায় শঙ্কিত তারা।

 

সিলেট বিভাগের মধ্যে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পাহাড় ধসের দিক দিয়ে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত। এরমধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা, গজনাইপুর ও দেবপাড়া ইউনিয়ন নিয়ে গড়ে ওঠা দিনারপুর পাহাড়ি অঞ্চলে এই ঝুঁকির মাত্রা বেশি। সম্প্রতি যে ভূমিকম্পের ঘটনা, তাতেও এসব এলাকায় পাহাড় ধসে প্রাণহানি ও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা বাড়ছে।

 

সূত্রে জানা যায়- ২০১৬ সালে টিলা ধসে নবীগঞ্জে দু’জনের মৃত্যু ও দু’জন আহতের ঘটনা ঘটে। ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল ও নবীগঞ্জের পাহাড়ি এলাকায় মাটিচাপা পড়ে দুটি পরিবারের ১২ জনসহ অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। সিলেটের এ দুটি উপজেলায় পাহাড় ধসে মৃত্যুর ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। তবুও ছিন্নমূল মানুষ জীবন-মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে এখানে বসবাস করছেন।

Manual6 Ad Code

 

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পাহাড় ও টিলা কেটে উজাড় করছে প্রভাবশালীরা। গত এক যুগে উপজেলার বেশকিছু সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা সম্পূর্ণ অথবা আংশিক কেটে সমান করে ফেলা হয়েছে, যার ফলে স্বাভাবিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় ঢল, বর্ষণ বা ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে এসব পাহাড়ি টিলা ধসে সেখানে বসবাসকারীদের মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ছে।

 

স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান- বাপ-দাদার আমল থেকে এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন তারা। কখন পাহাড় ও টিলা ধসে ঘরের ওপর পড়ে তা নিয়ে সব সময় আতঙ্কিত থাকেন তারা।

Manual5 Ad Code

 

পানিউমদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান জানান- সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সেখানকার পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসে ঝুঁকি রয়েছে। সরকারি উদ্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নিত করে বসবাসকারীদের পুনর্বাসন করা প্রয়োজন।

 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার জানান- যদি কেউ নিজ দায়িত্বে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসের ব্যবস্থা করে থাকে সে তথ্য তাদের কাছে নেই। পুনর্বাসনের জন্য আবেদন করা হলে তথ্য সংগ্রহ করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Manual1 Ad Code

কেন এসব পাহাড়ি এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে তা জানতে চাইলে দিনারপুর এলাকার স্থানীয়রা জানান- অবাধে পাহাড় ও টিলা থেকে মাটি কেটে নেওয়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এগুলোর বেশির ভাগই কাটা হয়েছে আবাসিক প্রকল্প, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি তৈরিতে জমি ভরাটের মাটি সংগ্রহের জন্য।

Manual6 Ad Code

 

দিনারপুরের স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়- বছরের অধিকাংশ দিনারপুর পরগনার পানিউমদা, গজনাইপুর ও দেবপাড়া ইউনিয়নে পাহাড় ও টিলা কাটা চলে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, বনগাঁও গ্রামের ওয়াহাব মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়ার ‘টু ব্রাদার’ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পাহাড় ও টিলা কেটে মাটি বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। এ ছাড়াও প্রভাবশালীদের যোগসাজশে গজনাইপুর ইউনিয়নের ছনর মিয়া, গজনাইপুর গ্রামের অলি মিয়া, সিরাজ মিয়ার মতো আরও অনেকেই এ কাজে জড়িত।

 

হবিগঞ্জ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আখতারুজ্জামান টুকু জানান- সেখানে কী পরিমাণ মানুষ বাস করছে তার সঠিক হিসাব নেই। ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমাদের জনবল কম। সবসময় ঘটনাস্থলে যাওয়া সম্ভব হয় না।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

September 2023
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সর্বশেষ খবর

………………………..