সিলেট ৯ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১০ই জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:১৭ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০২৩
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হবিগঞ্জের চুনারুঘাট পৌর শহরের উত্তর বড়াইলে একই রাতে দুই বাসায় চুরির ঘটনা ঘটেছে। চুরের দল চেতনানাশক স্প্রে করে বাসার সিদকেটে ভেতরে প্রবেশ করে ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ২লাখ ৮০ হাজার টাকা ৩টি মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায় । চেতনানাশক স্প্রে করায় দুই পরিবারের নারী ও শিশুসহ ৮ সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েন।
বুধবার (১৯ জুলাই) সকালে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তারা হলেন- পৌর শহরের ২ নং ওয়ার্ডের রৌশন মঞ্জিলের মালিক আব্দুল হাই (৭০), তার ঘরের ভাড়াটিয়া আলোনিয়া এলাকার বাসিন্দা ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাছিমা (৪১), তার পুত্র শিপন মিয়া (২৫), তুহিন মিয়া (২৩), তার ভাগনী, নাপি (৭)। এইচএসবি শান্তিনিকেতনের মালিক গোগাউড়া এলাকার বাসিন্দা মৃত মিটু মিয়ার পুত্র হাবিবুর রহমান মুসলিম (৬৫),তার স্ত্রী তার স্ত্রী মাহিরা খাতুন( ৫২), পুত্র মাজহারুল ইসলাম (২৫)।
এর মধ্যে মুমূর্ষু অবস্থায় শিপন মিয়া ও তুহিন মিয়া দুইভাইকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এইচএম শান্তিনিকেতনের বাসার মালিক হাবিুর রহমান মুসলিম ও তার পুত্র মাজহারুল ইসলাম জানান, রাত ১২টার দিকে পরিবারের লোকজন ঘুমিয়ে পড়লে বাসার সিদকেটে ভেতরে ঢুকে প্রতিটি কক্ষে চেতনানাশক স্প্রে নিক্ষেপ করে বাড়ির লোকজনকে অচেতন করে দেয়। চেতনা নাশক স্প্রে ব্যবহার করায় বাসার সকল অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে চোরের দল বাসায় সবকটি রুম তছনছ করে ঘরে রক্ষিত ৩ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ৩ টি স্মার্ট মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। পরে সকালের দিকে মুসলিম উদ্দিন সহ দুই বাসার লোকজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয় লোকজন।
রৌশন মঞ্জিলের মালিক আব্দুল হাই জানান, মুসলিম মিয়ার বাসা ছাড়া অন্য বাসার কোনো মালামাল খোয়া যায়নি। খবর পেয়ে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাশেদুল হক বলেন, পুলিশের সহায়তায় দুইজনকে সিলেট পাঠানো হয়েছে এবং অপরাধীদের আটক করতে তৎপর রয়েছে পুলিশ। এর আগে ১১ জুলাই বুধবার গভীর রাতে শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে কুটিরগাঁও গ্রামের শহিদ মিয়ার বাসায় জানালার লোহার গ্রিল কেটে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে আলমারি ভেঙে ২ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ১ লাখ টাকা, ৩ টি স্মার্ট ফোনসহ বিভিন্ন কাগজপত্র নিয়ে গেছে। ওই বাসার দুই পরিবারের মধ্যে বাসার মালিক শহিদ মিয়াসহ একই বাসার পাশের রুমে ভাড়াটিয়া পরিবারের ৩ জনকে ঘুমন্ত অবস্থায় ডাকাতরা চেতনানাশক ওষুধ স্প্রে করে অচেতন করে বলে শহীদ মিয়া জানান। গেল বছর ২১ ফেব্রয়ারী চুনারুঘাট পৌর শহরের ক্রস রোডের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ফজলুল হকের বাসার রান্নাঘরের ভেন্টিলেটর ভেঙে চোরেরা ঘরে প্রবেশ করে ১৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা, ঘরে থাকা মূল্যবান আসবাপত্র চোরেরা লুটে নিয়ে যায়। একই দিনে পৌর শহরের উত্তরবাজার এলাকায় সাংবাদিক নুর উদ্দিন সুমনের বাসায় জানালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কার, নগদ ২০ হাজার টাকা, ১টি ল্যাপটপসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিয়ে যায়।
অপরদিকে, পৌর শহরের উত্তর বাজারের বাসিন্দা মো. জাকারিয়া হোসেনের মালিকানাধীন বাড়ির চুনারুঘাট হাসপতালের এক সেবিকার বাসা থেকে চোরেরা নগদ ৬৫ হাজার টাকা, ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, আসবাপত্র ও দামি কাপড়চোপড় লুটে নিয়ে যায়। তিনটি বাসায় এক রাতে চুরির এ ঘটনা ঘটে।
চুনারুঘাট পৌর শহর সহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে দিন দিন চুরি-ডাকাতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একের পর এক চুরির ফলে ব্যবসায়ী সহ জনসাধারণ চরম আতঙ্ক ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। বেশ কয়েকটি আলোচিত চুরি-ডাকাতির ঘটনার সাথে জড়িতরা ধরা না পড়ার কারণে চুরি-ডাকাতির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। চুরির পর থানা পুলিশের পরিদর্শন, সংশ্লিষ্টদের সভা-সেমিনার ছাড়া আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থার কোন অগ্রগতি না পাওয়ায় দিনদিন শংকা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসব চুরির ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd