হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ!

প্রকাশিত: ৪:০২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২৩

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ!

Manual1 Ad Code

ডেস্ক রিপোর্ট: হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসা নিতে আসার রোগী ও ভর্তি রোগীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি আইন অনুযায়ী বহির্বিভাগের টিকিটের মূল্য ৫ টাকা হলেও এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতি রোগীর কাছ থেকে ১০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। এছাড়া রোগী ভর্তিতে ১০টার পরিবর্তে ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে রোগীদের কাছ থেকে।

 

সূত্র বলছে- ৫ টাকার টুকেন ১০ এবং ১৫ টাকার টুকেন নেয়া হয় ২০ টাকা। কোন কোন ক্ষেত্রে আরও বেশি রাখার অভিযোগ করেছেন সেবাগ্রহীতারা। কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন থেকে এই অতিরিক্ত টাকা আদায় করে আসলেও জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সাধারণ রোগীরা প্রতিবাদ কারার সাহস পান না।

 

এদিকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা অকপটে স্বীকার করেছেন জরুরী বিভাগের ব্রাদার ইনচার্জ হিমাংশু রঞ্জন দাস। তার ভাষ্যে, ‘ভাংতি না থাকলে অতিরিক্ত ৫ টাকা রাখতে হয়।’

 

গত রোববার দুপুরে একজন ব্যক্তিকে বুকে ব্যথার রোগী সাজিয়ে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার একটি টুকেন ধরিয়ে চাওয়া হয় ১০ টাকা। রোগীকে ভর্তি করাতে চাইলে চাওয়া হয় ২০ টাকা। এক পর্যায়ে সাংবাদিকের উপস্থিতি বুঝতে পেরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থনা করেন।

Manual8 Ad Code

 

দুপুর দেড়টায় শাওনের সাথে টিকিটের দাম নিয়ে কথা বলার সময় আরও ৩/৪ জন নারী সেবাগ্রহীতারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। টিউবওয়েলে পড়ে পায়ে আঘাত পাওয়ায় ১৬ বছরের মেয়েকে চিকিৎসা করাতে আসা রুজিনা আক্তার বলেন, ‘উপরে লিখা রোগীর টিকিট ফি ৫ টাকা, কিন্তু আমার কাছ থেকে রাখা হয়েছে ২০ টাকা। অতিরিক্ত টাকার বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে ব্রাদার জানান মন চাইলে চিকিৎসা নেন, না হয় চলে যান!’

Manual5 Ad Code

 

খুদেজা বেগম নামে আরেকজন বলেন, ‘আমি একটি টিকিট দিতে বলেছি। নাম লিখে ৫০ টাকার নোট দিয়েছি। তিনি আমাকে ৩০ টাকা ফেরত দিয়েছেন। টিকিটের মূল্য কত টাকা সেটা আমার জানা নেই।’

 

হাসপাতাল সূত্র জানায়, জরুরী বিভাগে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ রোগী সেবা নিতে আসেন। সেই হিসাবে রোগী প্রতি ৫ টাকা বেশি নিলে প্রতিদিন আড়াই হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হচ্ছে।

 

সূত্রটি জানায়, এসব টাকার ভাগবাটোয়ারা হয় হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়কের প্রধান সহকারী তৌহিদ ও সিনিয়র ব্রাদার হিমাংশু রঞ্জন দাসসহ ৮ জনের মধ্যে। তবে যেদিন যার ডিউটি থাকে না সেদিন তিনি এই টাকা থেকে বঞ্চিত হন। অন্যান্য ব্রাদারদের নামমাত্র দিয়ে তৌহিদ এবং হিমাংশু নেন মোটা অংক।

 

এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান সহকারী মো. তৌহিদুর রহমান তৌহিদ বলেন, ‘যারা এটার দায়িত্বে আছেন তাদের সাথে কথা বলেন। আমি এই বিষয়ে কোন কিছু জানি না।’ টাকার ভাগ পাওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এখান থেকে কোন টাকা পাই না। আপনি স্যারের সাথে কথা বলেন।’

 

Manual5 Ad Code

ব্রাদার ইনচার্জ হিমাংশু রঞ্জন দাস অতিরিক্ত টাকা আদায়ের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘অনেক সময় ভাংতি থাকে না, তাই ৫ টাকা ফেরত দেয়া সম্ভব হয় না।’

 

Manual6 Ad Code

অতিরিক্ত টাকাগুলো কি করা হয়? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যে যখন দায়িত্বে থাকেন টাকা তিনি নিয়ে যান।’

 

জরুরী বিভাগের চিকিৎসার দায়িত্বে থাকা ডা. সুস্মিতা সাহা বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি। এর আগেও তাদেরকে অতিরিক্ত টাকা না রাখতে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা আমাদের কোন কথা শুনে না।’

 

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. দেবাশীষ দাস বলেন, ‘অতিরিক্ত টাকা রাখার তো কোন নিয়মই নাই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিবো।’

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

January 2023
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..