ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের প্রধান রুট সীমান্তবর্তী কানাইঘাট!

প্রকাশিত: ২:৪৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০২২

ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের প্রধান রুট সীমান্তবর্তী কানাইঘাট!

Manual5 Ad Code

ক্রাইম প্রতিবেদক: ভারতীয় পণ্য চোরাচালানের প্রধান রুট সিলেটে সীমান্তবর্তী উপজেলা কানাইঘাট। কানাইঘাট পৌর এলাকাধীন বায়মপুরের শিব্বির আহমদ ও একই গ্রামের রিয়াজের নেতৃত্বে ২০ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট ভারতীয় পণ্য চোরাচালীতে জড়িত। আর এ সিন্ডিকেটে মিডিয়া পার্টনার হচ্ছেন পৌর এলাকার শিবনগরের মোঃ আব্দুল হান্নান (এম এ হান্নান) এবং পুুলিশ পার্টনার কনেস্টবল সুলতান।

স্থানীয় সূত্রে প্রকাশ, কানাইঘাট উপজেলার সুরমার উত্তর অংশের লক্ষ্মীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড় রয়েছে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের পাহাড়ি স্থল সীমান্ত। পূর্বে কারাবাল্লা থেকে পশ্চিমে লোভানদী ও দক্ষিণে সুরমানদী পর্যন্ত পুরো ইউনিয়নে কোনো সড়ক যোগোযোগ ব্যবস্থা নেই। ফলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবি’র কার্যকর ও দ্রুততর সময়ে অভিযানের কোনো ব্যবস্থাই নেই। আর এ সুযোগে সীমান্তের এই এলাকা দিয়ে অবাধে নামানো হয় ভারতীয় চোরাই পণ্য। আবার ফিরতি পাচার করা হয় স্বর্ণ, মটরসুটি, রসুনসহ বিদেশ থেকে আমদানী করা বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সামগ্রী।

কানাইঘাটে কারাবাল্লা, ডোনা ও মূলাগুল সীমান্ত দিয়ে আমদানীকৃত চোরাই পণ্য আটগ্রাম, মমতাজগঞ্জ ও লোভাছড়া থেকে সুরমা নদী দিয়ে কানাইঘাট পৌরসদরের খেওয়াঘাটে ও কানাইঘাট বাজারে নিয়ে আসা হয়। অপরদিকে লোভাছড়ার পশ্চিম সীমান্ত এলাকার সূরইঘাট, কালীনগর চতুল, দরবস্ত ও জৈন্তাপুরের স্থল সীমান্ত দিয়ে আনিত খভারতীয় চোরাই পন্য সিলেট নগর এড়িয়ে দরবস্ত-কানাইঘাট সড়ক দিয়ে কানাইঘাট বাজার ও কানাইঘাটস্থ সুরমা ব্রীজের পূর্বপাশের বায়মপুরের নিয়ে আসা হয়ে থাকে। সারী-দরবস্ত হয়ে বালু ও পাথর ভর্তি ট্রাকের মধ্যদিয়েও কানাইঘাটে নিয়ে আসা হয় ভারতীয় চোরাই পন্য।

Manual3 Ad Code

সূত্রমতে কানাইঘাটের খেওয়াঘাটের দক্ষিণ বাজারে রয়েছে চোরাকারবরী রিয়াজের তত্বাবধানে ভারতীয় চোরাই পণ্যের ৪টি গুদাম। বায়মপুর মহিলা মাদ্রাসার কাছে রয়েছে একটি গুদাম, বায়মপুরের চোরাচালানী শিব্বিরের বাড়িতে ২টি এবং খোদ কানাইঘাট দক্ষিণ বাজারে চোরাচালানী সিন্ডিকেট সদস্য আব্দুর রহমান ও আলী আকবরের তত্ব¦ধানে রয়েছে পৃথক আরো ২ চোরাই মালের গোদাম।

মাসখানেক আগে (নভেম্বরে) র‌্যাবের একটি ইউনিট কানাইঘাট বাজারের দুই গোদামে পৃথক দুই দিন অভিযান চালায়। এসময় ভারতীয় চোরাইপণ্য চিনির চালানসহ চোরাই সিন্ডিকেট সদস্য আব্দুর রহমান ও আলী আকবরকে আটক করে। এ দুই অভিযানে র‌্যাব বাদী হয়ে কানাইঘাট থানায় পৃথক দুটি মামলা করে। আটক আব্দুর রহমানের নামে দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করছেন থানার এসআই মিজানুর রহমান এবং আলী আকবরের নামে দেওয়া মামলাটি তদন্ত করছেন থানার এসআই মাসুম। পরে ওই দুই সিন্ডিকেট সদস্য আদালত থেকে পৃথক জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত ২২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০ টায় কানাইঘাট পৌরসভার বায়মপুর মহিলা মাদ্রাসার সামনের গুদাম থেকে ৬০ বস্তা ভারতীয় চোরাই চিনিসহ শিব্বির সিন্ডিকেটের একটি ট্রাক আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাদাপোষাকীরা। সাদা পোষাকীরা রাত ৯টার দিকে গিয়ে গাড়ি নিয়ে ওইখানে অবস্থান নেয়। আটকের পর তাৎক্ষনিকনভাবে চোরাচালানী সিন্ডিকেটের মিডিয়া পার্টনার হান্নানের মাধ্যমে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রফাদফা করে ট্রাকভর্তি ভারতীয় চিনির চালান ছাড়িয়ে নেওয়া হয়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে গাড়ি মানুষ ও মাল কিছুই পায়নি।

ওইদিন চালান আটকের বিষয়ে কানাইঘাট থানার মোবাইল ডিউটিরত এসআই রাম চন্দ্র দেব জানান, ভারতীয় চিনিভর্তি ট্রাক আটকের খবর পেয়ে ওসি সাহেবের নির্দশে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাইনি। এমনটা জানিয়েছেন কনেস্টবল সুলতান। তবে ফোন করলে কানাইঘাট ওসি তাজুল ইসলাম এ প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ করেননি। পুলিশই ভালো বলতে পারবে। আমি শুধু তত্বাবধান করে থাকি।

Manual3 Ad Code

বৃহস্পতিবারের অভিযানের বিষয়ে সিলেট গোয়েন্দা শাখার ওসি রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি ওইদিন ভোলাগঞ্জ ছিলাম,আমাদের গোয়েন্দা শাখার কোনো টিম অভিযানে গেছে বলে আমার জানা নেই। সাদা পোষাকী আমাদের গোয়েন্দা শাখা ছাড়াও অন্যান্য সংস্থারও রয়েছে। এ বিষয়ে ওই দিন সিলেট বাণীর সাংবাদিক এমএ হান্নান সাহেবও তার কাছে ফোন করেছিলেন বলে জানান তিনি।

র‍্যাবের পৃথক অভিযানের তারিখ ও মামলা সম্পর্কে তথ্য জানতে চাইলে কানাইঘাট থানার এস আই মিজানুর রহমানকে ফোন দিলে তিনি মামলা দুটির সত্যতা নিশ্চিত করলেও ঘটনার তারিখ ও মামলা দুটির নাম্বার জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, আমি থানার বাইরে আছি। মামলা দুটির বিষয়ে কানাইঘাট প্রেসক্লাব সেক্রেটারী নিজাম উদ্দিনের কাছে তথ্য রয়েছে। উনি মামলাগুলো ডিল করছেন, উনার কাছ থেকে জেনে নিন।

Manual6 Ad Code

অভিযোগের বিষয়ে শিব্বির আহমদের সাথে মুঠোফোনে যোগাযেগ করা হলে তিনি নিজেকে পাথর ব্যবসায়ী দাবি করে তার বিরুদ্ধে আনিত চোরাচালানীর অভিযোগ সত্য নয় বলে জানান।

গত বৃহস্পতিবারের অভিযান বিষয়ে রিয়াজের কাছে ফোন দিলে তিনি ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন-শোনেছি কানাইঘাট-শাহবাগ সড়কের ঘাটের বাজারে সাদা পোষাকীরা চোরাই চিনিভর্তি একটি ট্রাক আটক করেছিল। পরে কি হয়েছে তা আমি জানি না।

Manual6 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2022
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..