সিলেট পাসপোর্ট অফিসে পরিচালক বনাম তদবির কারকের লড়াই!

প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৪, ২০২২

সিলেট পাসপোর্ট অফিসে পরিচালক বনাম তদবির কারকের লড়াই!

Manual3 Ad Code

খলিলুর রহমান:
সিলেট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ঘুষ বাণিজ্য নিয়ে পরিচালক বনাম তদবীরকারকের মধ্যে চলছে আইনী লড়াই। এক আওয়ামী লীগ নেতা মার্কার (ঘুষের) টাকা না দিয়ে পকেটস্থ করে নেওয়ায় এ লড়াই শুরু হয়েছে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।

Manual6 Ad Code

জানা গেছে- সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার মোগলাবাজার থানাধীন পাঠানপাড়ার মহিলা সাহারা খানম (৫৩)। হজ্জে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে চাইলে জনৈক ছয়েফ খানের সহযোগিতা নেন। ছয়েফ খান ২৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রটারি ও বর্তমান সভাপতি এবং একই পাঠানপাড়ার বাসিন্দা।

অভিযোগে প্রকাশ, ছয়েফ খান সাহারা খানমের কাছ থেকে সরকারি ফিঃ ৫৭৫০/- টাকার স্থলে ৮,০০০/- টাকা গ্রহণ করেন। এতে করে তিনি ২২৫০/- টাকা অতিরিক্ত নেন। অতিরিক্ত এই টাকা থেকে পাসপোর্ট পরিচালকের মার্কা (ঘুষ) না দিয়ে টাকা নিজের পকেটে রেখে দেন। সরকার দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সাহারার পাসপোর্টের জন্য তদবির শুরু করেন। সাহারা খানমের নামে পাসপোর্টের আবেদন টাইপ করিয়ে ব্যাংকে ৫৭৫০/- টাক জমা দিয়ে সাহারাকে পাঠিয়ে দেন পাসপোর্ট অফিসে। কিন্তু পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক একেএম মাজহারুল ইসলাম নাছোড় বান্দাহ। তার কাছে নির্ধারিত মার্কা (ঘুষ) ছাড়া আবেদন গৃহীত হয় না। সাংবাদিক ও সরকার দলের কোনো নেতা-হোতার বেইল নেই তার কাছে। সাহারা খানম আবেদন নিয়ে ১৩ নভেম্বর পাসপোর্ট অফিসে যান। কিন্তু মার্কা (ঘুষ) না দেওয়ায় তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে ১৪ নভেম্বর আবারো যান, এসময় তিনি ২৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ছয়েফ খানের কথা বললেও আবেদন অনলাইন ও ফিঙ্গার না করিয়ে তাকে আবারো ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে ছয়েফ খান সাহারাকে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠিয়ে তার হস্তক্ষেপ চান। বিভাগীয় কমিশনার পাসপোর্ট পরিচলকের কাছে তার কথা বলে ফিঙ্গার নিতে বলেন। তখন আওয়ামী লীগ নেতা সাহারাকে ১৬ নভেম্বর আবারো সিলেট পাসপোর্ট অফিসের পরিচালকের কাছে পাঠান। পরিচালকের কাছে গিয়ে সাহারা বিভাগীয় কমিশনারের কথা বললে তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মাজহারুল। তিনি বিভাগীয় কমিশনারের কথায় পাসপোর্ট আবেদন নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এ সময় আওয়ামী লীগ নেতা ছয়েফ খান পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহা পরিচালক উম্মে সালমা তানজিনার শরণাপন্ন হন। সাহারা খানমকে দিয়ে অতিরিক্ত মহা পরিচালকের নির্দেশের কথা জানালে আবারো রেগে ওঠেন পরিচালক মাজহারুল।

Manual1 Ad Code

এ সময় তিনি সারাহার কাছ থেকে এইমর্মে একটি লিখিত আবেদন নেন যে, ছয়েফ খান তার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকাসহ ৮,০০০/- টাকা নিয়ে তাকে দিয়ে আবেদন করিয়েছেন। সাহারা নিজ হাতে লিখে এই আবেদন দিলে পরে তার পাসপোর্ট আবেদনের অনলাইন ফিঙ্গার নেওয়া হয়।

এ ঘটনার পর জ্বলে ওঠেন ২৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ছয়েফ খান। তিনি ঘটনার বিস্তারিত লিখিয়ে ওইদিনই (১৬ নভেম্বর) সাহারা খানমকে দিয়ে তার নিরাপত্তা বিষয়ে এসএমপি’র মোগলাবাজার থানায় সিলেট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক একেএম মাজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং- ১০৩৭) করান।

Manual3 Ad Code

ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব পেয়ে থানার এএসআই আব্দুল জলিল অধর্তব্য অপরাধ মর্মে ২০ নভেম্বর সিলেট মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে তদন্তের অনুমতি চান। আদালত তদন্তের অনুমতি দিলে ওই জিডি পুলিশের তদন্তে রয়েছে। এটাকে আবার অনেকে মামলা বলেও চালিয়ে দিয়েছেন কোনো কোনো গণমাধ্যমে।

সিলেট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক একেএম মাজহারুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে জানান, দালাল ও তদবীরবাজদের অপতৎপরতা রোধে তিনি সাহারার কাছ থেকে ছয়েফ খানের বিরুদ্ধ অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের অভিযোগ গ্রহণ করেছেন।

Manual2 Ad Code

তবে ছয়েফ খান অতিরিক্ত টাকা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে এ প্রতিবদককে বলেন, সাহারা তার ভাবী হন। তার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি এ ঘটনার সুষ্টু তদন্ত দাবি করেন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2022
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..