আড়ংকে বয়কটের ডাক দিয়েছে সিলেটের আলেম সমাজ

প্রকাশিত: ৫:২৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৫, ২০২১

আড়ংকে বয়কটের ডাক দিয়েছে সিলেটের আলেম সমাজ

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হস্ত ও কারুশিল্প ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আড়ং (ব্র্যাক)-এর ঢাকাস্থ একটি শো-রুমে দাঁড়িওয়ালা যুবককে চাকরি না দেওয়ার অভিযোগে সিলেটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার (১৫ মার্চ) বেলা ১১টায় নগরীর জেল রোডস্থ আড়ং শো-রুমের সামনে ‘সিলেটের সচেতন আলেম সমাজ’র ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করেন স্থানীয় আলেম ও ধর্মপ্রাণ জনতা।
দাঁড়ি থাকায় ঢাকার তেজগাঁও এলাকায় আড়ংয়ের একটি শো-রুমে চাকরি দেওয়া হয়নি- এমন অভিযোগ তুলে গত শুক্রবার একটি ভিডিও আপলোড করেন ইমরান হোসাইন লিমন নামের এক যুবক। ৮ মিনিটের সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরবর্তীতে ভাইরাল হয়ে পড়ে।
ভিডিওতে লিমন বলেন- তেজগাঁওস্থ আড়ংয়ের শো-রুমে তিনি সপ্তাহ খানেক আগে সিভি জমা দেন। শুক্রবার তাকে সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকা হয় এবং সাক্ষাৎকার গ্রহণকারীরা প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর পেয়ে খুশি হন। কিন্তু হঠাৎ করে লিমনকে মাস্ক খুলতে বলেন এবং মাস্ক খোলার পর তার মুখে দাড়ি থেকে চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেন।
এদিকে, ভিডিওটি ভাইরাল হবার পর ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় উঠে। সেই সাথে নগরীর জেল রোডস্থ আড়ং শো-রুমের সামনে সোমবার সকাল ১১টায় ‘সিলেটের সচেতন আলেম সমাজ’র ব্যানারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ডাক দেয়া হয়।
তবে এ কর্মসূচি পালনের ক্ষেত্রে পুলিশের কাছ থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি বলে রোববার রাতে আয়োজকদের কয়েকজন এ প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেন।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সোমবার সকাল ১১টায় জেল রোডস্থ আড়ং শো-রুমের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ঢাকার ঘটনার প্রতিবাদ জানান সিলেটের কয়েক শ আলেম, শিক্ষার্থী ও ধর্মপ্রাণ মুসলমান।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ইসলামকে অবমাননা করে পৃথিবীতে আবু জাহেল, নমরুদ, ফিরাউন ওরা কেউ টিকতে পারেনি। সময়ের পালাবদলে তাদেরকে ধ্বংস হতে হয়েছে। আমাদের প্রিয় নবী (স.) এর সুন্নাত দাড়ি নিয়ে তামাশা করায় আড়ংও ধ্বংস হবে যাবে। তাই অবিলম্বে আড়ং কর্তৃপক্ষকে দ্রুত এমন অবস্থান এবং মনোভাব থেকে সরে আসতে হবে। নতুবা দেশবাসীকে নিয়ে আড়ংয়ের সকল পণ্য বয়কটের ডাক দেয়া হবে।
অপরদিকে, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আড়ং কর্তৃপক্ষ একটি লিখিত বিবৃতি প্রদান করেছেন। আড়ংয়ের পক্ষ থেকে চিফ অপারেটিং অফিসার মােহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন- ‘সম্প্রতি আড়ং-এর একটি ইন্টার্ভিউ বাের্ডে উপস্থিত একজন চাকরি প্রার্থীর নেতিবাচক অভিজ্ঞতার ব্যাপারটি সত্যিই  অত্যন্ত দু:খজনক এবং এটি নি:সন্দেহে মূল্যবোধের পরিপন্থী। আড়ং কর্তৃপক্ষ বয়স, বর্ণ, ধর্ম, লিঙ্গ, অক্ষমতা বা জাতিগত উৎস নির্বিশষে সকলের জন্য মানবিক মর্যাদা এবং অন্তর্ভুক্তির অধিকারগুলাে সমুন্নত রাখে। আমাদের নিয়াগের সিদ্ধান্তে ধর্মীয় বিশ্বাস ও পালনকে কখনই বিবেচনা করা হয় না। আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৩৮০০ জনেরও বেশি কর্মী রয়েছে এবং সকল ধর্মের অনুসারীরা শ্ৰদ্ধার সাথে এবং প্রকাশ্যে তাদের নিজ নিজ ধর্মীয় বিশ্বাস আচার-অনুষ্ঠান পালন করেন।
আমাদের ভবিষ্যতের ইন্টারভিউ বোর্ডগুলোর পরিচালনায় আমাদের মূল মুল্যবোধের প্রতিফলন নিশ্চিত করতে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করবো এবং ইন্টারভিউ বাের্ড সংশ্লিষ্টদের শিষ্টাচারের বিষয়ে সংবেদনশীলতা আনতে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
এছাড়া সেই সকল চাকরি প্রার্থী- যারা মনে করেন আমাদের কোনো একটি ইন্টারভিউ বোর্ডে যে কোনো বিষয়ে তারা যথাযথভাবে পরিক্ষিত বা মূল্যায়িত হননি তারা আমাদের মানবসম্পদ বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের সঙ্গে যােগাযােগ করতে পারেন।’

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..