বিয়ে করে বিপাকে নাসির, জেল হতে পারে স্ত্রীর

প্রকাশিত: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১

বিয়ে করে বিপাকে নাসির, জেল হতে পারে স্ত্রীর

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার নাসির হোসেন বিয়ের রেশ যেতে না যেতেই বিপাকে পড়েছেন। কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মির সঙ্গে তাঁর বিবাহবন্ধনের ছবি অন্তর্জালে বেশ উষ্ণতা ছড়িয়েছে। কিন্তু সপ্তাহ না পেরোতেই নাসিরপত্নীর ‘সাবেক স্বামী’র দাবি, বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়াই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন নবযুগল। শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ৩৬ মিনিটে মুঠোফোনে তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান দাবি করেন, আইনগতভাবে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়াই নাসিরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন তামিমা। এ ব্যাপারে তামিমাকে ফোন করে কোনো সাড়া না পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাকিব।

Manual5 Ad Code

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর উত্তরার এক রেস্তোরাঁয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন নাসির। ১৭ ফেব্রুয়ারি ছিল এ যুগলের গায়েহলুদ। এর একদিন পর জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয় তাঁদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। সেই আনন্দের রেশে তাল কাটেন তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে নাসির ও রাকিবের কথোপকথনের অডিও ক্লিপ। ওই কথোপকথনে তামিমার প্রথম বিয়ের সত্যতা মেলে। নাসিরও স্বীকার করেন, সবকিছু জেনেই তামিমাকে বিয়ে করেছেন তিনি।

Manual3 Ad Code

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে মুঠোফোনে রাকিব হাসানকে কল করা হলে তিনি জানান, ডিভোর্স বা কোনো কিছু না জানিয়ে নাসিরকে বিয়ে করেছেন তাঁর স্ত্রী তামিমা। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে শুনলাম নাসির আমার ওয়াইফের হাজব্যান্ড হয়ে গেছে। আমার বউয়ের সঙ্গে ডিভোর্স ছাড়া সে তামিমাকে বিয়ে করেছে। সে (তামিমা) আমাকে এখনো কোনো কাগজ পাঠায়নি। হঠাৎ করে আমি শুনতেছি যে সে বিয়ে করে ফেলেছে। আমার এক বন্ধু বলতেছে, দেখেন তো রাকিব ভাই, তামিমা আপু তো নাসিরকে বিয়ে করে ফেলেছে। আমি নিজেও অবাক হয়েছি। পরে আমি তামিমাকে ফোন দিয়েছি, এসএমএস করেছি, সে কিছুর জবাব দেয়নি। পরে আমি উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেছি।’

জিডি করার পর নাসির ফোন দিয়েছেন রাকিবকে। ওই ফোনের রেকর্ড এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল। এ ব্যাপারে রাকিবের ভাষ্য, ‘খবরটি শোনার পর আমি তামিমার বাসায় লোক পাঠাই। কিন্তু তামিমার মা জানান, তিনি নাকি রাকিব নামের কাউকে চেনেন না। পরে তাঁর মা পর্দার আড়ালে গিয়ে নাসিরকে সব জানান। এরপর নাসির কাল দুপুরে আমাকে ফোন দিয়েছেন। তিনি আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, ‘আপনি কি চান না তামিমা সুখে থাকুক?’ আমি বুঝলাম না, আমার বউ তাঁর কাছে কেন সুখে থাকবে?’

‘আমি ২০১১ সালে তামিমাকে বিয়ে করেছি। তখন সে মাত্র এসএসসি পাস করে। এরপর আমি তাকে এইচএসসি ও অনার্স শেষ করাই। তার এই চাকরি পাওয়ার জন্যও আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। আমি জানি না সে এটা কীভাবে করল। এখন আমি এই আইনি লড়াইটা চালিয়ে যাব’, যোগ করেন তামিমার প্রথম স্বামী।

এ প্রসঙ্গে নাসিরের বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মেসেঞ্জারে খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি নাসিরের।

মুসলিম আইন অনুযায়ী, এ রকম বিয়ে বৈধ বলে গণ্য হবে না। এই বিয়ে বাতিল বা অবৈধ বিবাহ বলে গণ্য হবে। এ বিষয়ে বরগুনা জজকোর্টের অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল সাইদ বলেন, অন্য কারো সঙ্গে বিয়ে করতে চাইলে প্রথমে তাকে ডিভোর্স নিতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট সময় অতিক্রমের পর সেই নারী বিয়ে করতে পারবে। চাইলেই ডিভোর্সের পরদিনই বিয়ে করতে পারবে না। এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

বিধান অনুযায়ী, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় বলা আছে, পূর্বের বিয়ে থাকা অবস্থায় কোনো স্ত্রী একাধিক বিয়েতে আবদ্ধ হলে ৭ (সাত) বছর কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে, আর ৪৯৫ ধারায় বলা আছে যদি পূর্বের বিয়ে গোপন করে তাহলে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে। তবে ৪৯৪ ধারার একটা ব্যতিক্রম ছিল, যদি সাত বছর ধরে স্বামী নিরুদ্দেশ থাকে এবং জীবিত আছে এ রকম কোনো সন্ধান না পাওয়া যায় তাহলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে। শর্ত হলো, নতুন বিয়েতে পূর্বের বিয়ের সকল ঘটনা সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে।

Manual6 Ad Code

এদিকে স্বামীও যদি একই কাজ করেন তাহলে তার জন্যও এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে ও তার ভরণপোষণ না দেয়া একটি ফৌজদারি অপরাধ। মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-এর ৬ ধারামতে, দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি পরিষদের কাছে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না। আর তাই প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ বলে গণ্য হবে।

এ অবস্থায় প্রতিকার পেতে আপনি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দণ্ডবিধি আইন-১৮৬০-এর ৪৯৪-এর বিধানমতে মামলা করতে পারেন। এ সময় স্বামী দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা আদালতে দেখাতে হবে। আপনার স্বামীর অপরাধ প্রমাণিত হলে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। এ ছাড়া সন্তান থাকলে আপনি তার ভরণপোষণ পাবেন। এ ক্ষেত্রে পারিবারিক আদালতে ভরণপোষণ চেয়ে মামলা করতে পারেন।

Manual4 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2021
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728  

সর্বশেষ খবর

………………………..