কানাইঘাটে গাছপালা উজাড়, বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গানো সহ নানা অভিযোগ

প্রকাশিত: ১:১১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৩, ২০২০

কানাইঘাটে গাছপালা উজাড়, বন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গানো সহ নানা অভিযোগ

Manual5 Ad Code

কানাইঘাট প্রতিনিধি :: সিলেটের কানাইঘাটে উপজেলায় সরকারী ফরস্ট্রের বাগানের গাছপালা উজাড় ও বন বিভাগের জায়গা দখল ও নির্বিচারে রাস্তাঘাটের গাছ-পালা কেটে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলা বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র মিস্ত্রী কানাইঘাটে যোগদান করার পর থেকে সরকারি রাস্তার গাছ-পালা কেটে নেওয়া সহ বনাঞ্চল উজাড় হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

Manual2 Ad Code

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র অবৈধ কর্মকান্ডের মাধ্যমে করাতকল মালিক ও কাঠ, ফার্নিচার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত উৎকোষ আদায় সহ বন বিভাগের জায়গা থেকে গাছপালা কর্তন ও বন অঞ্চলের জায়গায় প্রভাবশালীদের বেদখলের চলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয় বন্ধ হওয়া লোভাছড়া পাথর কোয়ারী খুলে দেওয়ার কথা বলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করিমের নাম ভাঙ্গিয়ে পাথর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা এ বিট কর্মকর্তা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।

Manual2 Ad Code

তাদেরকে উপজেলা বিট কর্মকর্তা জানিয়েছিলেন মাননীয় মন্ত্রীর সাথে তার ভাল সম্পর্ক রয়েছে। তিনি তাদেরকে লোভাছড়া পাথর কোয়ারী লিজ এনে দিতে পারবেন এমন আশ^াস দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বিট কর্মকর্তা উৎকোষ ছাড়া যেন তিনি কিছুই বুঝেন না এমনটাই অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গাছ কাটার করাতকল থেকে শুরু করে তার অনুকুলের সর্বত্র স্থানে তাকে উৎকোষ দিতে হয়। গত সোমবার সরেজমিনে পৌরসভাস্থ একটি করাতকলে আব্দুস ছুকহান নামের এক স্থানীয় যুবক জানান তিনি তার বাড়ি থেকে একটি গাছ নিয়ে এসেছিলেন। সেই গাছটি করাত কলে কাঠতে নানা অজুহাতের আইন দেখিয়ে কাটতে বাধাঁ দেন বিট কর্মকর্তা।

Manual2 Ad Code

পরে তাকে ১ হাজার টাকা উৎকোষ দিয়ে কাজটি করে নেন। সড়কের বাজারের রফিক উদ্দিন জানান তিনি বাংলা বাজার থেকে কিছু গাছ পিকআপে করে নিয়ে এসেছিলেন একই ভাবে বিট কর্মকর্তা তা আটকিয়ে দেন। পরে তিনিও ১ হাজার টাকা ঘুষ দিয়ে গাছগুলো ছেড়ে নেন। এভাবে অসংখ্য অভিযোগ উঠেছে বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। একই ভাবে তিনি মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে এলজিইডি’র রাস্তার পাশ সহ উজার করে ফেলছেন শত বছরের ঐতিহ্যবাহী বনাঞ্চল। জানা যায় উপজেলা বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্র তার বিশস্থ লোকদের দিয়ে প্রায় প্রতিদিনই এলজিইডি’র রাস্তার পাশের বড় বড় গাছগুলো কেটে নিচ্ছেন। গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায় উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপি’র সুরইঘাট গড়াখাই রাস্তার দু’পাশের অসংখ্য গাছ কেটে নেওয়া হয়েছে। গাছের মুড়োগুলো এখনো তার সাক্ষ্য বহন করছে। কোন কোন মুড়ো বালু দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

এ সময় স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে আব্দুল হাসিম ও আব্দুর রশিদ জানান তারা দেখেছেন গত রবিবার বন-কর্মকর্তার লোক নামে পরিচিত নিজাম উদ্দিন তার দলবল নিয়ে বড় বড় এই গাছগুলো কাটছে। অনেক শিশু কিশোর জানিয়েছেন গাছগুলো কেটে সুরইঘাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এভাবে প্রায় প্রতিদিন দু-চারটি করে দামী বেলজিয়ামের গাছগুলো কেটে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বন কর্মকর্তার লোক নামে পরিচিত নিজাম উদ্দিনের কাছে গাছ কাটার বিষয়টি জানতে চাইলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

এদিকে সুরমা ডাইকের লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউপির মন্দিরের ঘাট এলাকা থেকে বেআইনী ভাবে বিট কর্মকর্তা নির্দেশে অসংখ্য গাছপালা কেটে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পুর্ব ইউপি’র বন বিভাগের মালিকানাধীন ঢেওয়াটিলা ও সেগুন বাগান সহ তার আশপাশের হাজার হাজার একর জুড়ে বাগানগুলো উজাড় করা হচ্ছে। নানা অজুহাতে বন-কর্মকর্তা তা ধ্বংস করে ফেলেছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন কয়েক লক্ষ টাকার গাছ উজার করে ঐ সব টিলা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার পাথর উত্তোলন করে গত মৌসুমে বিক্রি করেছেন। ঐ এলাকার বন কর্মকর্তার লোক নামে পরিচিত ঢেওয়াটিলার দেলোয়ার সহ একটি চক্রো বন বিভাগের জায়গা বিট কর্মকর্তার যোগসাজশে দখল করে নিচ্ছে বলে স্থানীয় অনেকে জানিয়েছে। তারা ঢেওয়াটিলার মানিক নামের একজন ও উজান বারাপৈতের আনিছ সহ বহু লোকের বসত বাড়ি দখল করে নিয়েছেন। সচেতন মহল জানিয়েছেন কি ভাবে একজন বিট কর্মকর্তা কি ভাবে একজন মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে সরকারী বন অঞ্চল উজাড়, রাস্তা-ঘাট থেকে গাছ-পালা কেটে সহযোগিতা প্রদান সহ রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় উত্তীর্ণ হয়েছে তার বিরুদ্ধে দ্রুত তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন। এ ব্যাপারে উপজেলা বিট কর্মকর্তা সুরেশ চন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান সুরইঘাট গড়াখাই রাস্তার গাছ কাটা সহ সরকারী বনাঞ্চলের গাছপালা কেটে নেওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।

মন্ত্রী এডভোকেট শ ম রেজাউল করিম তার এলাকার লোক তার নাম ভাঙ্গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারের ব্যাপারে জানতে চাহিলে তিনি বলেন মন্ত্রীর নাম ভাঙ্গিয়ে কিছুই করেনি উল্লেখ করে বলেন যেহেতু রাজনৈতিক ভাবে দেশ চলছে সেহেতু তিনি লোভাছড়া কোয়ারীর লিজের জন্য তদবীর করছেন। টাকা পয়সার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন কোথায়ও তার মাধ্যমে বন অঞ্চল ধ্বংস করা হয়নি বরং তা নতুন করে গড়ে তুলার চেষ্টা করছেন তিনি।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2020
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..