কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়ানইঘাটের ভূমি দখলবাজের তালিকা প্রকাশ!

প্রকাশিত: ৫:১৯ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৫, ২০২০

কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়ানইঘাটের ভূমি দখলবাজের তালিকা প্রকাশ!

Manual2 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক :  অবৈধভাবে দখলে রাখা শীর্ষ ১০ জনের তালিকা তৈরি করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। তালিকার ১০ জনের মধ্যে ৫ জনই সিলেটের। সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়ানইঘাট উপজেলায় বনের বিস্তৃর্ণ জমি দখল করে রেখেছেন তারা।

Manual2 Ad Code

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে। এই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশের সংরক্ষিত বনভূমির মধ্যে এক লাখ ৩৮ হাজার ৬১৩ একর জবরদখলে রয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী স্থাপনাসহ প্রতিষ্ঠিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ৮২০ একরে। অবৈধ দখলদারের সংখ্যা ৮৮ হাজার ২১৫ জন। এই তালিকা প্রায় পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার।

বনের জমি শীর্ষ ১০ জবরদখলকারীর মধ্যে তিন নম্বরে রয়েছেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের মো. কামাল হোসেন। স্থানীয় ঢালার পাড়ের মুলুক মিয়ার ছেলে এই কামাল হোসেন মেঘারগাঁও মৌজার তিনটি দাগে ৫৬ একর জমি দখল করেছেন। তাকে উচ্ছেদের প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে কামাল হোসেনের দাবি, তার দখলে থাকা জমির পরিমাণ মাত্র এক একর ৫০ শতক।

Manual4 Ad Code

একই এলাকার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে হূপা মিয়ার নাম রয়েছে জবরদখলকারীর চার নম্বরে। একই মৌজায় দুই দাগে তিনি দখল করেছেন ৫৫ একর জমি। তার বিষয়েও উচ্ছেদের প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বন বিভাগের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সিলেটের গোয়াইনঘাটের সতি হাওর এলাকার আক্রাম আলীর ছেলে ইউসুব আলীর নাম রয়েছে তালিকার পাঁচ নম্বরে। তার দখলে রয়েছে ৫০ একর জমি। এই জমিতে তিনি কৃষিকাজের পাশাপাশি ঘরবাড়ি তুলে বসবাস করছেন। ইউসুব আলীর দাবি, তার মতো অনেকের দখলে বনের জমি রয়েছে। তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন বন বিভাগের তালিকায় কেন শুধু তার নাম?

বন মন্ত্রণালয়ের ওই প্রতিবেদনে ছয় নম্বরে রয়েছে সিলেটের গোয়াইনঘাটের বুধিরগাই এলাকার মো. শুকুর আলী। মৃত খাদিম আলীর ছেলে শুকুরের দখলে রয়েছে বুধিগাঁও হাওর মৌজার দুই দাগে ৫০ একর জমি। তিনি বলেন, বন বিভাগের সঙ্গে তার মামলা ২০১৫ সালেই শেষ হয়ে গেছে। তার সঙ্গে এক একর ৫৮ শতক জমি নিয়ে বন বিভাগের বিরোধ ছিল।

এই তালিকার দশ নম্বরে রয়েছেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের দিঘলবাক পাড়ের নরেশ বিশ্বাসের ছেলে কল্যাণ বিশ্বাস। তার জবরদখলে থাকা জমির পরিমাণ ৪৫ একর। তার বিরুদ্ধে উচ্ছেদ প্রস্তাব জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠিয়েছে বন বিভাগ। তার বিরুদ্ধে বন আইনেও মামলা করা হয়েছে।

শীর্ষ ১০ বন দখলকারীর মধ্যে এক নম্বরে রয়েছে কক্সবাজারের মাহমুদুল হক মাঝি। ২ নম্বরে আছেন জাতীয় সংসদে ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সাংসদ দবিরুল ইসলাম। এছাড়া সাত নম্বরে রয়েছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার পদুয়া ইউনিয়নের ভদন্ন শরনংকর থের। আট নম্বরে রয়েছেন টাঙ্গাইলের মধুপুরের সাধুপাড়ার প্রশান্ত মানকিন। অরণখোলা মৌজায় তার দখলে রয়েছে ৫০ একর জমি। নয় নম্বরে রয়েছেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার রোস্তমপাড়ার সিংরাজ গং।

Manual6 Ad Code

এদিকে সংসদীয় কমিটিতে দেওয়া পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধীন মোট সংরক্ষিত বনভূমির পরিমাণ ৩৩ লাখ ৪২ হাজার ৮১৫ দশমিক ১৪ একর। এর মধ্যে পার্বত্য এলাকা, সুন্দরবন, উপকূলীয় এলাকাসহ জরিপ হয়নি প্রায় ২৫ লাখ একরের। সংরক্ষিত বনভূমির রেকর্ডভুক্তির বিষয়ে বন বিভাগের কাছে আংশিক তথ্য রয়েছে।

Manual3 Ad Code

সংশ্নিষ্টরা জানান, বন বিভাগ থেকে বেদখল হওয়া জমির মূল্যমানও নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, বেদখল হওয়া ৭৯ হাজার ৯৪ দশমিক ১৯ একর জমির দাম ১০ হাজার ১৯৭ কোটি ১৭ লাখ ৩২ হাজার ৪৯০ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেদখল হয়েছে টাঙ্গাইল বন বিভাগের। এ ছাড়া কক্সবাজার উত্তর ও দক্ষিণ বন বিভাগ, দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ, পটুয়াখালী উপকূলীয় বন বিভাগ, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ ঢাকা ও মৌলভীবাজার, বান্দরবানের পাল্পউড প্লান্টেশন বিভাগ ও ফেনীর সামাজিক বন বিভাগ। দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে কোথাও সরকারি হার, কোথাও মৌজা মূল্য আবার কোথাও স্থানীয় বাজারদর আমলে নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

December 2020
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..