সিলেট ১০ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:১৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৮, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : শহীদুল ইসলামের শ্যালকের স্ত্রী রোজিনা আক্তার। স্বামীর মৃত্যুর পর শহীদুলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে রোজিনার। কিন্তু শহীদুলের আর্থিক অনটন ও স্ত্রী থাকায় মানিকগঞ্জে গিয়ে আকিজ টেক্সটাইলে চাকরি নেয় রোজিনা। সেখানে আবদুল মোমিন নামে একজনের সঙ্গে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। মোমিনের আলাদা সংসার থাকলেও রোজিনাকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর ভুয়া পরিচয় দিয়ে ভাড়া বাসায় ওঠেন। পাশাপাশি শহীদুলের সঙ্গেও সম্পর্ক চালিয়ে যেতে থাকেন রোজিনা।
অন্যদিকে শহীদুলও এলাকায় সবাইকে বলে বেড়াতেন রোজিনাকে বিয়ে করেছেন। রোজিনার সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন শহীদুল। বিষয়টি ভালো চোখে দেখতো না ভুয়া স্বামী মোমিন। শহীদুলের ঘন ঘন ফোন করার বিষয়ে জানতে চাইলে রোজিনা ‘সংসার’ টিকাতে ছলনার আশ্রয় নেন। মোমিনকে বলেন, শহীদুল তাকে প্রেমের প্রস্তাবসহ নানা রকম কুপ্রস্তাব দিতে ফোন দেয়। পাশাপাশি এলাকার মানুষকে বলে বেড়ায়, আমি নাকি ওর বিয়ে করা বউ। এভাবে চলতে থাকলে আমি এলাকাতে মুখ দেখাতে পারব না। পরে তারা দুজন শহীদুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। সে মোতাবেক শহীদুলকে বিয়ের প্রলোভনে ডেকে নিয়ে ভুয়া স্বামী মোমিনের সহযোগিতায় ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়।
নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের ৩ বছরের মাথায় রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর রাতে মাগুরা জেলার শ্রীপুরের নবগ্রাম মাঠে শহীদুলকে গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় গত ২২ নভেম্বর আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকা থেকে রোজিনাকে ও তার ভুয়া স্বামী মোমিনকে সোমবার রাতে নরসিংদীর মাধবদী ব্রাহিমপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রোজিনা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মোমিনও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেবেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিআইজি শেখ নাজমুল আলম বলেন, ২০১৭ সালের ২৩ ডিসেম্বর নিখোঁজ হন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার বাশ গ্রামের মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে শহীদুল ইসলাম (৪৭)। এ ঘটনায় ২০১৮ সালের ৫ মার্চ রোজিনা, তার বাবা জব্বার শেখ ও মা মতিরন নেসাকে আসামি করে আদালতে অপহরণ মামলা করা হয়।
পরে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশে তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তের এক পর্যায়ে রোজিনার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন রোজিনা। সেখানে উল্লেখ করেন, বিয়ে করার কথা বলে মাগুরার নবগ্রামে ডেকে আনেন শহীদুলকে। আত্মীয়ের বাসায় যাবেন বলে শহীদুলকে সেখানকার একটি বিলে নিয়ে যান। পরে মোমিনের সহযোগিতায় পুরনো একটি ছুরি দিয়ে গলা ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করেন।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd