‘জিনের আসর’ করায় মেয়েকে পুকুরে ফেলে হত্যা করে মা

প্রকাশিত: ১০:৩০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০২০

‘জিনের আসর’ করায় মেয়েকে পুকুরে ফেলে হত্যা করে মা

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মা শান্তা আক্তারের (২২) ওপর ‘জিনের আসর’ করার কারণে নিজের ১৭ দিনের কন্যাসন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি।

শুক্রবার মোরেলগঞ্জ থানা পুলিশ শিশুর মা শান্তা আক্তারকে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করলে বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা বলেন। পরে আদালতের বিচারক শান্তা আক্তারকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

শনিবার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) ঠাকুর দাশ মণ্ডল বলেন, শুক্রবার পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শিশুর মা শান্তা আক্তার নিজেই বিছানা থেকে মেয়ে সানজিদাকে তুলে নিয়ে পুকুরে ফেলে দেন। তার ওপর ‘জিনের আসর’ করার কারণে তিনি এ কাজ করেছেন বলে স্বীকার করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও জানান, হত্যার শিকার শিশুটির বাবা সুজন ও মা শান্তা আক্তার দুইজনেরই আগে বিয়ে হয়েছিল। শান্তা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার বনগঞ্জ গ্রামের মো. ইউনুছ শেখের মেয়ে।

২০১৭ সালে নিজ এলাকার উজ্জল ভূঁইয়া নামের এক ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সেখানে শান্তার ২ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। কিন্তু এরই মাঝে ২০১৯ সালের দিকে শান্তার সঙ্গে মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামের সুজন খানের পরকীয়া সম্পর্ক হয়।

প্রেমের সূত্র ধরে শান্তা বিয়ের বিষয়টি গোপন করে সুজনের কাছে চলে আসে। তখন শান্তা আশ্রয় নেন সুজনের বোনজামাই এনামুলের ঢাকার বাসায়। সেখান থেকে বিয়ের পর সুজনের গ্রামের বাড়িতে আসেন শান্তা। তখন থেকেই শান্তা সুজনের পরিবারের কাছে তার পূর্বের বিয়ে ও সন্তানের কথা গোপন রাখে।

শিশু হত্যাকাণ্ডের মামলার সূত্র ধরে পুলিশ শান্তার বাবার পরিবার, পূর্বের স্বামী-সন্তান ও কয়েকজন আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলে। সুজনের পূর্বের স্ত্রী এবং শান্তা আক্তারের পূর্বের স্বামী ও সন্তানের বিভিন্ন পারিবারিক ঝামেলার কারণেই ১৭ দিনের সন্তানকে হত্যা করেছে বলে তারা নিশ্চিত হয়েছে।

আটক শান্তার বরাত দিয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনার রাতে ঘুমানোর পর তার শরীরে প্রচণ্ড জ্বালা শুরু হয়। নিজের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বের হয়ে বাড়ির সামনের খাল, বাগান ও পুকুরের পাড়ে দৌড়াদৌড়ি করেন। একপর্যায়ে ঘরের সামনের পুকুরের ঘাটে জামরুল গাছের নিচে ১৭ দিনের শিশুকে ফেলে দিয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েন শান্তা আক্তার। পরে রাত দেড়টার দিকে সন্তানের জন্য কান্নাকাটি শুরু করেন শান্তা আক্তার।

মামলার বাদী নিহত শিশুর দাদা আলী হোসেন বলেন, তার ছেলে সুজন খান নির্দোষ। আমি তার মুক্তি চাই।

সুজনের বোন রোজিনা বেগম বলেন, শান্তা তাদের বাড়িতে আসার পর বেশ কয়েকবার অস্বাভাবিক আচরণ করে বেহুঁশ হয়ে পড়তেন। আমরা তাকে স্থানীয় ওঝাঁ-কবিরাজও দেখিয়েছি। সে আমাদের বলেছিল তার সঙ্গে জিন রয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2020
S S M T W T F
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..