সিলেট ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : পাওয়া গেছে মুন্নীর আসল পরিচয়। তার পূরো নাম মরিয়ম আকতার মুন্নী। অনুমান ২৯ বছর বয়েসী মুন্নী সিলেট নগরীর শিবগঞ্জ হাতিমবাগের জাকির হোসেনের মেয়ে। মুন্নী নিজেকে নগরীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ফিজা এন্ড কো’র মালিক ও একটি দৈনিক পত্রিকার প্রকাশক মোঃ নজরুল ইসলাম বাবুলের পুত্র আজহারুল ইসশাম মোমিনের স্ত্রী পরিচয় দিলেও এ ব্যাপারে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শনিবার (১৪ নভেম্বর) ইয়াবাসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় সেই মুন্নী।একটি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায়ও গ্রেফতার দেখানো হয়েছে তাকে। সঙ্গে আছেন তার ধর্ষক ভাই রাব্বীও। এই দুই মামলায় বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) তার জামিন হয়েছে কি না জানা যায়নি। এই মুন্নী হলেন সিলেটের আলোচিত সেই তিন্নী-মুন্নী জুটির মুন্নী।
এক সময় সিলেটের লন্ডনি যুবকদের কাছে তাদের পরিচিতি ছিল ব্যাপক। টাকাওয়ালা পরিবারের দিকে থাকতো চোখ। টাকার সেই চোখ এখনো বদলায়নি।
অপরাধ জগৎ থেকে ফিরতে পারেনি মুন্নী। এ কারণে এবার ইয়াবাসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গোয়েন্দা পুলিশ ধারণা করছে- মুন্নীর সঙ্গে সিলেটের ইয়াবা নেটওয়ার্কের সম্পর্ক রয়েছে। ইয়াবা বেচা-বিক্রিতে তার নেতৃত্বে থাকতে পারে চক্রও। সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া উইং-এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে মুন্নী আটকের কথা। একাধিক বিয়ে, পরপুরুষকে নিয়ে রোমান্সসহ নানা ঘটনায় সিলেটে আলোচিত মুন্নী।
নিজ এলাকাসহ নগরীর কয়েকটি বাসায় রয়েছে মরিয়ম আক্তার মুন্নীর যাতায়াত। একেক সময় সে একেক বাসায় বসবাস করে। কখনো গোপনে, কখনো আবার প্রকাশ্যে তার বসবাস। এসএমপি’র মিডিয়া উইং থেকে জানানো হয়- শনিবার সকালে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জানতে পারে নগরীর সোনারপাড়া ঊর্মি ৪৭/২ বাসায় অবস্থান করছে মুন্নী। এই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে মুন্নীকে গ্রেপ্তার করে। মুন্নী শাহপরান থানার একটি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার আসামি।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, মুন্নী সোনারপাড়া ওই বাসায় আশ্রিতা হিসেবে বসবাস করতো। এবং সিলেট শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ইয়াবা পাইকারি দরে এনে বিক্রি ও সেবন করতো। ওই বাসায় ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের একটি আস্তানাও গড়ে তুলেছিল। এর আগেও সে সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে বাসা ভাড়া নিয়ে ইয়াবা বিক্রি ও সেবনের আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছিল। এদিকে গ্রেপ্তারের পর মুন্নীকে সিলেটের শাহপরান থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করে। সিলেটের শাহপরান থানার ওসি আব্দুল কাইয়ূম জানিয়েছেন, মুন্নীর বিরুদ্ধে গত ৩রা অক্টোবর শাহপরান থানায় একটি অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। ওই মামলায় আসামি ছিল মুন্নীর ভাই রাব্বীও। মামলার পর ভাই রাব্বী তালুকদারকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলেও মুন্নী পলাতক ছিল। শনিবার মুন্নীকে গ্রেপ্তারের পর ধর্ষণ মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মুন্নীর বিরুদ্ধে মাদক বিক্রিসহ নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে বলে জানান ওসি। পুলিশ জানায়, গত ২৯শে সেপ্টেম্বর মুন্নীর ভাই রাব্বী তালুকদার একই এলাকায় বসবাস করা এক কিশোরীকে অপহরণ করে। এরপর তাকে নিয়ে যায় ঢাকার মানিকগঞ্জে। এ ঘটনায় ওই কিশোরীর মা শাহপরান থানায় এজাহার দাখিল করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ তখন এজাহারটিকে তদন্ত পর্যায়ে রেখেছিল। এরই মধ্যে ঢাকা থেকে বড় বোন মুন্নীর সোনারপাড়াস্থ বাসায় এসে আশ্রয় নিয়েছিলো রাব্বী ও ওই কিশোরী। পরে স্থানীয় মুরুব্বিরা বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেন। মুন্নীও তাতে সায় দেন। কিন্তু পরবর্তীতে মুরুব্বিদের রায় মানেননি মুন্নী। উল্টো পুলিশ দিয়ে সবাইকে শায়েস্তা করার হুমকি দেন বলে এলাকার লোকজন জানিয়েছেন। পরে এলাকাবাসীর পরামর্শে ১ অক্টোবর কিশোরীর ওসি আব্দুল কাইয়ূমের শরণাপন্ন হন। পরে শাহপরান থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই দিন রাতেই মুন্নীর বাসা থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে। গ্রেপ্তার করে আসামি রাব্বী তালুকদারকে এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে থানায় মামলা হয়। এরপর থেকে রাব্বী তালুকদার অপহরণ ও ধর্ষণের এই মামলায় কারাগারে রয়েছে। তবে ওই সময় পুলিশ মুন্নীকে খুঁজলেও পায়নি। এই ঘটনা ও মামলার প্রায় এক মাস পর ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয় মুন্নীকে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd