সিলেট ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৪০ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৭, ২০২০
জুনেদ আহমদ :: সিলেটের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সাময়িক বরখাস্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
৭ দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে তাকে সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবুল কাশেমের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত শুনানি শেষে তাকে কারাগারে পাঠান বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সিলেটের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন।
রিমান্ডে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন এবং বলেছেন – যা করেছেন সবাই মিলে করেছি, আমি একা কিছু করিনি। মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) আদালতের এপিপি সৈয়দ শামীম এই তথ্য জানিয়েছেন। রায়হানকে হত্যাকাণ্ডের দায় আকবর নেননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আকবর বলেছেন, তিনি একা দায়ী নন। তিনিসহ এই মামলার আসামিরা সবাই মিলেই রায়হানকে পিটিয়ে আহত করেছেন। এরপর রায়হানকে হাসপাতালেও নিয়ে যান তারা। পরবর্তীতে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেছেন।
এদিকে রায়হানের চাচা যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মো. মাইনুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্বীকারোক্তি কিংবা নতুন করে রিমান্ড চায়নি পিবিআই। এজন্য আদালত আকবরকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন। তদন্ত কর্মকর্তা আবেদন না করলে আদালতের কি করার। আমরা আশা করেছিলাম তদন্ত কর্মকর্তা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি চাইবেন আর স্বীকারোক্তি না দিলে আবার রিমান্ড চাইবেন। কিন্তু তারা তা করেনি। বরং আকবরের চেহারা দেখে মনে হয়েছ তাকে রিমান্ডে সঠিক ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ না করে আরামেই রাখা হয়েছে।
রায়হানের চাচা মইনুল ইসলাম বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, আমরা পিবিআই’র উপর আস্তা হারিয়েছি। পুলিশের তদন্ত পুলিশ সঠক ভাবে করবে না। তাই আমরা বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।
এর আগে, ১০ নভেম্বর সিলেট চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে আকবরকে হাজির করা হয়। এসময় তদন্ত কর্মকর্তা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করলে বিচারক আবুল কাশেম তা মঞ্জুর করেন।জানা যায়, ৯ নভেম্বর সকালে কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী খাসিয়াদের সহযোগিতায় পুলিশ আকবরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা পুলিশ আকবরকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে।উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর অফিস থেকে বের হয়ে বন্দরবাজার এলাকায় যাওয়ার পর রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে যান এএসআই আশেক এলাহী। জানা গেছে, সেখানে টাকার দাবিতে নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন রায়হান। এজন্য রাতে পুলিশের ফোন থেকে সৎবাবাকে ফোনও করেন রায়হান। ১০ হাজার টাকা নিয়ে পরিবারের সদস্যরা রাতে ফাঁড়িতে এলেও ততক্ষণে গুরুতর আহত হওয়ায় তাদের ফেরত পাঠানো হয়। ওইদিন সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে রায়হানকে গুরুতর আহত অবস্থায় ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন এএসআই আশেক এলাহীসহ পুলিশ সদস্যরা। সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে হাসপাতালে মারা যান রায়হান। এই ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ এনে হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর মহানগর পুলিশের তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পেয়ে বন্দর বাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবরসহ চার পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত ও তিনজনকে প্রত্যাহার করে। বরখাস্তদের মধ্যে রয়েছেন–কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ ও টিটু দাস। প্রত্যাহার হওয়া তিন জন হলেন−এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেন। আর এ ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd