সিলেট ২৮শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৭ই রজব, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৩৪ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ কখন স্বাভাবিক হবে তা বলতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। দেরির কারণ হিসেবে তেল সংগ্রহ করতে আসা মানুষের হুড়োহুড়ি-মারামারিকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট আখাউড়া রেলসেকশনের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও রেল স্টেশন অদূরে চানমারী এলাকা নামক স্থানে চট্রগ্রামের পাহাড়তলী থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী তেলবাহী ট্রেন (৯৫১ নম্বর ) লাইনচ্যুত হওয়ার পর তেলের ওয়াগান থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল পড়ে যায়। এতে এলাকাবাসী বাঁধিয়ে দিয়েছেন হুলস্থুল কাণ্ড। এই তেল সংগ্রহ করতে করছেন হুড়োহুড়ি-মারামারি।
এতে সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে ডিভিশনাল প্রকৌশলী মো.সুলতান আলী।
এছাড়াও হাইড্রোলিক টুলভ্যানের চালক মো.আজম আলী বলেছেন, মানুষের ভিড়ের কারণে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করতে কতক্ষণ সময় লাগবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা প্রত্যক্ষদর্শী জসিম উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডাউন নামার সময় তেলবাহী ট্রেনের সাতটি বগি উল্টে যায়। ট্রেনের স্পিড বেশি থাকায় কন্টোল করতে না পারায় তেল বোঝাই ট্রেন উল্টে যায়।
চানমারী গ্রামের রেবাকা বেগম , কুসুম বেগম ও সুমি বেগম বলেন, ওয়াগান থেকে তেল মাটিতে পড়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা এসব তেল সংগ্রহ করে নিয়ে যাচ্ছি। আমরাতো গরিব মানুষ। একই কথা জানালেন রফিক, কবির মিয়া ও সলিম উদ্দিন।
শ্রীমঙ্গল জিআরপি থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, দুর্ঘটনায় ট্রেনের পেছনে থাকা ১টি ইঞ্জিন, ১টি ব্রেক গার্ড এবং ৫টি কেরোসিন, ডিজেল বোঝাই তেলের ওয়াগানসহ মোট ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
কী কারণে এই দুর্ঘটনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডাউন নামতে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে ট্রেনের স্পিড ছিলো বেশি। যার ফলে এই দুর্ঘটনা।
কুলাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন হাইড্রোলিক টুলভ্যানের চালক মো.আজম আলী বলেন, আমরা খবর পেয়ে দুপুর দেড়টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করি। তবে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করতে কতক্ষণ সময় লাগবে তা ঠিক করে বলা যাচ্ছে না। তেল সংগ্রহকারী মানুষের ভীড়ের কারণে উদ্ধারকাজে বিলম্ব হচ্ছে।
এদিকে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাইনচ্যুত হয়ে উল্টে যাওয়া ট্রেনের ওয়াগান থেকে তেল সংগ্রহের জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা। কারও হাতে বালতি, কারও হাতে পাতিল, কারও হাতে জগ, আবার কারও হাতে প্লাস্টিকের বড় গামলা। সবাই এসব পাত্রে জ্বালানি তেল সংগ্রহ করে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছে। কার আগে কে তেল নিয়ে যাবে, তা নিয়ে যেন চলছে এক ধরনের প্রতিযোগিতা। রেলওয়ে নিরাপত্তাবাহিনী ও থানা পুলিশ বারবার চেষ্টা করেও তাদের নিবৃত্ত করতে পারেনি।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার মো.সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শনিবার সকাল ১১টা ৪০মিনিটের সময় শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও রেলস্টেশনের অদূরে চানমারী গ্রাম এলাকায় তেলবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সিলেট ডিভিশনের সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী দুলাল চন্দ্র দাশ বলেন, ইঞ্জিনসহ সাতটি ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়। কুলাউড়া ও আখাউড়া থেকে আসা উদ্ধারকারী ট্রেন ওয়াগনগুলো উদ্ধার কাজ চলছে।
মেঘনা পেট্রোলিয়াম করপোরেশন লিমিটেড সিলেট অঞ্চলের ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বলেন, এই তেলগুলো মেঘনা পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের। এখানে প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার লিটার অকটেন, কেরোসিন ও ডিজেল রয়েছে।
Sharing is caring!


………………………..

Design and developed by best-bd