সংবাদ প্রকাশের পর তাহিরপুর সীমান্তের তৎপর বিজিবি, সোর্সদের দাপট

প্রকাশিত: ৮:০২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৭, ২০২০

সংবাদ প্রকাশের পর তাহিরপুর সীমান্তের তৎপর বিজিবি, সোর্সদের দাপট

Manual6 Ad Code

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করার কয়েকটি স্থানে তৎপর হয়েছে বিজিবি। জব্দ করেছে মদ,গাঁজা,কয়লা ও মোটর সাইকেল। কিন্তু বন্ধ হয়নি সোর্স পরিচয়ধারীদের চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বাণিজ্য। দাপটের সাথে চলছে তাদের কার্যক্রম।

Manual5 Ad Code

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে- সংবাদ প্রকাশের পর টেকেরঘাট সীমান্তে বিজিবি সদস্যরা তৎপর হয়েছে। সম্প্রতি বড়ছড়া শুল্কষ্টেশনের জয়বাংলা বাজার সংলগ্ন এলাকা থেকে বিভিন্ন প্রকার মাদক, বিড়ি ও ১টি মোটর সাইকেল ২জন লোক আটক করে। পরে অবৈধ মালামাল ও মোটর সাইকেল জব্দ করে ২জন লোককে ছেড়ে দিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানায়।

Manual6 Ad Code

এই সীমান্তের বুরুঙ্গাছড়া ও রজনীলাইন এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী ফিরোজ মিয়া ও কামাল মিয়ার নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাচাঁর হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া চাঁনপুর সীমান্ত দিয়ে দিয়ে পাঁচারের সময় বিপুল পরিমান মদ পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে বিজিবি। কিন্তু কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এই সীমান্তের চিন্তুছড়া,রাজাইছড়া,চাঁনপুর টিলাছড়া ও টেকেরঘাট বিজিবি ক্যাম্পের রজনী লাইন-শিবপুর ছড়া দিয়ে ভারত থেকে পাচাঁর করা হচ্ছে গরু। সেই সাথে পাচাঁর করা হচ্ছে মদ,গাঁজা ও নাসিরউদ্দিন বিড়ি।

এজন্য বিজিবি,পুলিশ, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান ও ২মেম্বারের নামে চাঁদা উত্তোলন করছে বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী চাঁনপুর গ্রামের একাধিক মাদক মামলার আসামী আবু বক্কর,তার ছেলে আলমগীর ও বড়গোফ বারেকটিলা গ্রামের রফিকুল মিয়াসহ আরো ১জন। আর বারেকটিলা,যাদুকাটা নদী,পুরান লাউড়,সাহিদাবাদ এলাকা দিয়ে একই ভাবে ৫-৬জন সোর্স পরিচয়ধারীরা অবৈধভাবে মদ,গাঁজা,বিড়ি,ইয়াবা,কয়লা ও গরু পাচাঁর করছে। তবে মাঝে মধ্যে আংশিক কয়লা ও মদসহ বিভিন্ন মালামাল পরিত্যক্ত অবস্থায় জব্দ করছে বিজিবি।

কিন্তু কখনোই চোরাচালানীদেরকে আটক করতে পারেনা। অন্যদিকে সংবাদ প্রকাশের আগে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পের ২টি পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে কয়লা ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাচাঁর করা হতো। আর সংবাদ প্রকাশের পর বর্তমানে ৪টি পয়েন্ট দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে কয়লা ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য পাচাঁর হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অবৈধ মালামাল পাচাঁরের ৪টি পয়েন্ট হল-বাঁশতলা তেতুলগাছ,১১৯৬পিলারের পূর্ব দিকে লালঘাট,তার সংলগ্ন মাঝের ঘাট ও বড়ঘাট।

সেই সাথে সোর্স পরিচয়ধারী শফিকুল ইসলাম ভৈরব,রমজান মিয়া ও আব্দুল আলী ভান্ডারীর চাঁদার পরিমানও বেড়েছে এবং এফএস জিকরুলের সাথে সোর্সদের যোগাযোগ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একই ভাবে জংগলবাড়ি ও লামাকাটা এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী লেংড়া জামালের নেতৃত্বে কয়লা ও মাদক পাচাঁর হচ্ছে। অপরদিকে বালিয়াঘাট সীমান্তের লালঘাট ও লাকমা,টেকেরঘাট এলাকা দিয়ে ভারতীয় কয়লা,কাঠ(ফালি),লাকড়ি ও মাছ ধরার বরশি পাচাঁর করে প্রতি শুক্রবার ও সোমবার বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত ড্রাম্পের বাজার ও নতুন বাজারে নিয়ে বিক্রি করাসহ নৌকা যোগে চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প এলাকা দিয়ে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা মালামাল পাঠাচ্ছে সোর্স পরিচয়ধারী কালাম মিয়া। তার বিরুদ্ধে ইয়াবা,কয়লা,মদ ও হুন্ডিসহ মোট ৭টি মামলা রয়েছে।

Manual7 Ad Code

এব্যাপারে বীরেন্দ্রনগর,বড়ছড়া ও চাঁরাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ীরা জানান,তাহিরপুর সীমান্তের চাঁরাগাঁও বিজিবি ক্যাম্পে যখন নায়েক সুবেদার আইয়ুব খান,মোনায়েম খান ও বালিয়াঘাট ক্যাম্পে হাবিলদার শাজাহান, টেকেরঘাট ক্যাম্পে সুবেদার রাশেদ খান ও বীরেন্দ্রনগর ক্যাম্পে সুবেদার হাজী মোজাম্মেল সাহেবদের মতো সৎ ও যোগ্য বিজিবি কর্মকর্তারা দায়িত্বে ছিলেন তখন সোর্স পরিচয়ধারীরা সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে কয়লা,পাথর ও মাদকদ্রব্যসহ গরু পাচাঁর করতে পারতো না। আর চোরাচালান হলেও নৌকা,ঠেলাগাড়ি ও মোটর সাইকেলসহ মদ, গাঁজা, ইয়াবা, গরু ও অস্ত্রসহ চোরাচালানীদেরকে গ্রেফতার করেছেন।

সেই সাথে ২৮ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বে থাকা বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলম যখন প্রথম সুনামগঞ্জে যোগদান করেন তখন তিনিও সীমান্ত এলাকার চোরাচালান প্রতিরোধের জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেন। তার নির্দেশে লক্ষলক্ষ টাকা মূল্যের অবৈধ চোরাই কয়লাসহ গরু,ঘোড়া,মদ,গাঁজাসহ চোরাচালানীদেরকে ও আটক করার প্রমান রয়েছে। এছাড়াও তিনি সোর্স পরিচয়ধারী কালাম মিয়াকে ইয়াবাসহ আটক করেন,সোর্স আব্দুল আলী ভান্ডারী ও আবু বক্করকে মাদকের মামলা দেওয়াসহ সোর্স দীপক মিয়াকে জাল টাকাসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হন। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুল আলম বদলে যেতে থাকেন। সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা পরিশ্রমী অফিসারদের অন্যত্র বদলী করাসহ ব্যাটালিয়নে নিয়ে রাখার কারণে সোর্স পরিচয়ধারীদের দৌড়াত্ব বেড়ে যায়। এবং বিজিবি অধিনায়কের বাসায় গিয়ে সোর্সরা যোগাযোগ করে বলে জানাগেছে। এসব বিষয়ে নিয়ে বারবার সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়কের বক্তব্য জানতে তার সরকারী মোবাইল (০১৭৬৯-৬০৩১৩০) নাম্বারে বারবার কল করার পর শুধু ব্যস্ত পাওয়া যায়,রহস্য জনক কারণে তিনি ফোন রিসিভ করেন না।

Manual2 Ad Code

পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর তিনি চোরাচালান প্রতিরোধের বিষয়ে কঠোর না হয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন জায়গা মৌখিক অভিযোগ করাসহ সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানীদেরকে দিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া জন্য থানায় ফোন করে অনুরোধ করেন বলে জানাগেছে। এব্যাপারে বিজিবির সিলেট সেক্টর কমান্ডারের সরকারী মোবাইল নাম্বারে কল করার পর ফোন রিসিভ করে নাম প্রকাশ না করে সেক্টর কমান্ডার পরিচয় দিয়ে বলেন-যারা সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানের সাথে জড়িত এবং সোর্স পরিচয় দিয়ে যারা চাঁদাবাজি করছে তাদের বিরুদ্ধে শীগ্রই আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সীমান্ত চোরাচালান ও চাঁদাবাজি বন্ধের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক সহযোগীতা কামনা করছেন ৩ শুল্কষ্টেশনের বৈধ ব্যবসায়ীরাসহ সর্বস্থরের জনসাধারণ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2020
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..