দেশের ইতিহাসে ফাঁসি কার্যকর হয়নি কোনো নারীর

প্রকাশিত: ৪:০৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২০

দেশের ইতিহাসে ফাঁসি কার্যকর হয়নি কোনো নারীর

Manual3 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : স্বাধীনতার পর প্রায় অর্ধশত বছর কেটে গেলেও দেশে এখন পর্যন্ত ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি।
কারা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন অভিযোগে দেড় শতাধিক নারীর ফাঁসির আদেশ হলেও আজ পর্যন্ত কারও ফাঁসি কার্যকর করা হয়নি। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘদিন কারাভোগ করে বিশেষ ক্ষমা পেয়ে বেরিয়ে গেছেন, কেউবা কারাগারেই স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছেন। কারও আবার উচ্চ আদালতে আপিল করে শাস্তি কমেছে।

সর্বশেষ বরগুনার আলোচিত শাহনেওয়াজ শরীফ ওরফে রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ রায় ঘোষণার পর সবার মনে তাই এ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Manual4 Ad Code

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, নারী আসামিদের ক্ষেত্রে আপিল বিভাগে যাওয়ার পর ফাঁসির রায় আর বহাল থাকে না। সাধারণ কারাবিধি অনুযায়ী ফাঁসি কার্যকরের ক্ষেত্রে তিনি বয়স্ক কিনা, তার শারীরিক অসুস্থতা আছে কিনা, আসামি গর্ভবতী কিনা এবং সর্বোপরি তিনি যদি নারী হন- এসব বিবেচনায় তার মৃত্যুদণ্ড হ্রাস ও স্থগিত করা হয়। ইতিহাস বলছে, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামিদের মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে সাজা কমিয়ে দেয়া হতো। এ বিষয়ে অলিখিত প্রথা ছিল।

Manual2 Ad Code

কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, সারাদেশে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসামি রয়েছেন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে। এখানকার কনডেম সেলে বর্তমানে প্রায় ৪৫০ জন ফাঁসির আসামি রয়েছেন।

Manual2 Ad Code

জানা গেছে, এর আগে ২০১৫ সালের নভেম্বরে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ঐশী রহমানকে ফাঁসির রায় দেয়া হয়। দেশের কারাগারগুলোতে ঐশীর রায় হওয়ার আগ পর্যন্ত ১২ জন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামি ছিল। সেই তালিকায় আজ যুক্ত হলো আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। দেশে বর্তমানে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারীর সংখ্যা ১৪ জন। এদের মধ্যে কেউ কেউ ১০-১৫ বছর ধরে কনডেম সেলের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন আগে তাদের ফাঁসির রায় হলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর হয়নি। দেশে আজ পর্যন্ত বহু পুরুষ আসামির ফাঁসি হলেও কোনো নারী আসামির ফাঁসি হয়েছে এমন তথ্য পাওয়া যায়নি।

Manual7 Ad Code

কারাগারের এক কর্মকর্তা জানান, ২০০৯ সালে সারা দেশের কারাগারগুলোতে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামি ছিল ৩০ জন। তাদের অনেকের উচ্চ আদালতে আপিল শুনানির পর ফাঁসির দণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ফলে দণ্ডপ্রাপ্তদের সংখ্যা কমেছে। বেশির ভাগ নারী ফাঁসির আসামিই রয়েছে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে।

কারা সূত্রে জানা গেছে, ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামিদের মধ্যে কেউ কেউ দীর্ঘ এক দশকের বেশি সময় ধরে কনডেম সেলের বাসিন্দা। তাদের ফাঁসির রায় দীর্ঘদিন আগে হলেও তা কার্যকর হয়নি। দণ্ডপ্রাপ্ত নারী আসামিদের মধ্যে সবাই হত্যার দায়ে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত। পরিবারের কোনো সদস্যকে হত্যার কারণেই এদের অধিকাংশকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। উচ্চ আদালতে আপিল শুনানির পর ফাঁসির দণ্ড থেকে দণ্ডপ্রাপ্ত অনেককেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়।

নিয়মানুযায়ী ফাঁসির আসামিরা সর্বশেষ সুযোগ হিসেবে রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে পারে। রাষ্ট্রপতি তাদের ক্ষমা না করলে ফাঁসি থেকে বাঁচার কোনো সুযোগ নেই। তবে আজ পর্যন্ত কোনো নারীর আবেদন রাষ্ট্রপতির কাছে গেছে এমন নজির নেই বলে জানা গেছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2020
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31  

সর্বশেষ খবর

………………………..