ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত: ১:৫৩ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৪, ২০২০

ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

Manual2 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : টেকনাফ থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। চট্টগ্রামে এই মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

Manual5 Ad Code

রোববার (২৩ আগস্ট) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কার্যালয়ে বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে চার কোটি আট লাখ ২৬ হাজার ১৭৫ টাকা মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতি করে অর্থ আয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Manual6 Ad Code

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, বিকেল তিনটার দিকে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। প্রদীপ অন্য মামলায় গ্রেপ্তার আছেন, আর চুমকি পলাতক রয়েছেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণ দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করেছেন। ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন তারা। এর মধ্যে চুমকিকে তার বাবা নগরীর পাথরঘাটায় একটি বাড়ি দানপত্র রেজিস্ট্রি করে দেন।

কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে দুদক জানতে পারেন চুমকির বাবা তার দুই ভাই ও এক বোনের নামে কোনো বাড়ি দানপত্র করেননি। অথচ তার দুই ছেলের নামে উল্লেখযোগ্য কোনো সম্পদও নেই। এতে প্রতীয়মান হয়, ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তার ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ গোপন করার জন্য অসৎ উদ্দেশ্যে স্থানান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে তার শ্বশুরের নামে উক্ত বাড়িটি নির্মাণ করে রুপান্তরপূর্বক পরবর্তীতে তার স্ত্রী চুমকি কারণ এর নামে দানপত্র করে নিয়ে ভোগদখল করে আসছেন।

Manual4 Ad Code

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চুমকি কারণ একজন গৃহিণী। কিন্তু ৫টি পুকুরে মাছ চাষ করে দেড় কোটি টাকা আয় করেছেন বলে সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেন। তদন্তে ও ২০১৩-১৪ সালের আয়কর বিবরণী থেকে তার মৎস্য ব্যবসার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তাই মৎস্য ব্যবসা থেকে তিনি কোনো আয় করেননি বলে দুদকের তদন্তে উঠে এসেছে। দেড় কোটি টাকার মৎস্য খাত থেকে আয় গ্রহণযোগ্য নয়।

২০১৮ সালে প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত শুরু করে দুদক। ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল তাদের দুইজনকে সাত কার্য দিবসের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দেয় দুদক। ১২ মে দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ তারা পৃথক সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

প্রদীপ কুমার দাশ টেকনাফের আগে কক্সবাজারের মহেশখালী থানার ওসি, সিএমপির পতেঙ্গা, বায়েজিদ ও পাঁচলাইশ থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এসব জায়গায় কাজ করতে গিয়ে সমালোচনা ও নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। একাধিকবার স্ট্যান্ড রিলিজ ও সাময়িক বরখাস্তও হয়েছেন। কিন্তু প্রতিবারই অদৃশ্য ছায়ায় পার পেয়ে গেছেন প্রদীপ কুমার দাশ। মাদক ব্যবসায়ীদের ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে অসংখ্য হত্যার অভিযোগে রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এছাড়া নিরীহ লোকজনকে ‘বন্দুকযুদ্ধের’ মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার টাকা অর্জন ও ১৩ লাখ ১৩ হাজার ১৭৫ টাকার তথ্য গোপন করার অভিযোগে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি (সাময়িক বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..