বিশ্বনাথে নববধূ নিখোঁজের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আপন ভাইসহ গ্রেফতার ২

প্রকাশিত: ১১:৩৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ২১, ২০২০

বিশ্বনাথে নববধূ নিখোঁজের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় আপন ভাইসহ গ্রেফতার ২

Manual8 Ad Code

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে পিতার বাসা থেকে কোহিনুর আক্তার আশা (২১) নামের এক নববধূ নিখোঁজের ঘটনায় থানায় দায়েরকৃত মামলায় আপন ছোট ভাইসহ সরকারি কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে থানাপুলিশ।

Manual5 Ad Code

গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে- ব্রাক্ষনবাড়িয়ার দেবীদ্বার উপজেলার গজারিয়া গ্রামের রাকিবুল ইসলামের স্ত্রী ও সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলা সমবায় অফিসের এমএলএস (বিশ্বনাথ উপজেলা সমবায় অফিসের সদ্য সাবেক এমএলএস) রোজিনা আক্তার (৩০) এবং একই জেলার আশুগঞ্জ থানার ভবানীপুর গ্রামের মৃত আলমগীর সরকারের পুত্র রাজিব সরকার (২৫)।

নিখোঁজ নববধূ কোহিনুরকে উদ্ধারের নামে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করার অফিযোগে সোমবার (২০ জুলাই) গ্রেফতারকৃতদের অভিযুক্ত করে থানায় মামলা দায়ের করেন নিখোঁজ কোহিনুরের পিতা ও বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজসেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী রমজান মিয়া। মামলা নং ১৫ (তাং ২০.০৭.২০ইং)। গত ৯ জুলাই সকালে বিশ্বনাথ উপজেলা সদরস্থ পিতার বাসা থেকে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত নববধূ কোহিনুরের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।

Manual6 Ad Code

স্থানীয় ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, ব্রাক্ষনবাড়ীয়ার সরাইল থানার পানিশ্বর গ্রামের রমজান মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলা সমাজসেবা অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত আছেন। সেই সুবাদে স্ত্রী-সন্তান (দুই কন্যা ও এক পুত্র)’কে নিয়ে তিনি উপজেলা সদরের জানাইয়া রোডস্থ তেরাবুন ভিলায় ভাড়াটিয়ে হিসেবে বসবাস করে আসছেন। প্রায় ৫ বছর পূর্বে তার আত্মীয় উমান প্রবাসী আলমগীর হোসেনের সঙ্গে রমজান মিয়ার বড় মেয়ে কোহিনুর আক্তার আশার বিয়ের ঠিক করা (এনগেজমেন্ট) হয়।

Manual2 Ad Code

গত ৫ জুন নিজ গ্রামের বাড়িতে কোহিনুর আক্তার আশা ও আলমগীর হোসেনের বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। বিয়ের পর স্বামী আলমগীরকে সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় বারের মতো ১৯ জুন বিশ্বনাথে পিতার বাবার বাসায় আসেন কোহিনুর। এরপর গত ৯ জুলাই সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ করে বাসা থেকে নিখোঁজ হন। তখন বাসার আশপাশ ও আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি ছাড়াও বিভিন্ন স্থানের খোঁজাখুঁজি করে মেয়ে কোহিনুরের কোন সন্ধ্যান না পেয়ে পরদিন ১০ জুলাই বিশ্বনাথ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেন রমজান আলী। ডায়রি নং ৩৪০।

নিখোঁজ নববধূ কোহিনুরের পিতা রমজান আলী ও মাতা সূচনা আক্তার রুবীর অভিযোগ, তাদের এলাকার মেয়ে রুজিনা আক্তার বিশ্বনাথ উপজেলা সমবায় অফিসে এমএলএস পদে কর্মরত থাকার সুবাদের তার (রোজিনা) সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে তাদের। রুজিনা বর্তমানে ছাতক উপজেলায় কর্মরত থাকলেও তিনি বিশ্বনাথে বসবাস করে আসছেন। কোহিনুর নিখোঁজের পর গত ১১ জুলাই সকালে তাদের বাসায় আসেন রুজিনা। এসময় কোহিনুর বিশ্বনাথেই রয়েছে বলে রুজিনা তাদেরকে জানায়। আর তাই কোহিনুরকে উদ্ধারের জন্য রুজিনা সিলেটে তার পরিচিত জয় নামের একজনের সহযোগিতা নেওয়ার জন্য তাদেরকে পরামর্শ দেন। রুজিনার পরামর্শেই কোহিনুরের পিতা ও মামা তার (রোজিনা) সঙ্গে সিলেট শহরে গিয়ে একটি রেষ্টুরেন্টে জয়ের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তখন কোহিনুরকে উদ্ধার করতে খরচপাতির কথা বলে কোহিনুরের পরিবারের কাছ থেকে ১৩ হাজার টাকা নেন রুজিনা। কথা ছিলো তিন দিনের মধ্যে কোহিনুরকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে ফেতর দেওয়ার। কিন্তু তিনদিন পর কোহিনুরের পরিবারকে রুজিনা জানান জয় এক মাসের জন্য কোথাও চলে গেছেন তাই তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব নয়।

Manual3 Ad Code

পরবর্তীতে নিখোঁজ কোহিনুরকে উদ্ধারের জন্য র‌্যাবের সহায়তা লাগবে জানিয়ে আরও ৫ লাখ টাকা দাবি করেন রোজিনা। কিন্তু এতে অপারগতা প্রকাশ করেন কোহিনুরের পরিবার। এরপর কোহিনুরের পিতা-মাতার বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য কোহিনুরের স্বামী আলমগীরকে বলে গ্রেফতারকৃত রোজিনা। তা না হলে অপহরণকারীরা তাকেও (কোহিনুরের স্বামী) তুলে নিয়ে যাবে বলেও হুমকি দেন রোজিনা। কোহিনুরের পিতা-মাতাসহ পরিবারের ধারণা তাদের মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পিছনে রোজিনার হাত রয়েছে।

পিতার বাসা থেকে নববধূ নিখোঁজের ঘটনায় মামলা দায়েরের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, এঘটনায় রোজিনা ও তার ভাই রাজিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর নিখোঁজ কোহিনুরকে উদ্ধারে পুলিশী তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..