লোভাছড়া পাথর কোয়ারী পরিদর্শনে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা

প্রকাশিত: ৯:৩০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৬, ২০২০

লোভাছড়া পাথর কোয়ারী পরিদর্শনে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা

Manual5 Ad Code

কানাইঘাট প্রতিনিধি :: সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী লোভাছড়া পাথর কোয়ারীতে বর্তমানে অচলাবস্থা বিরাজ করায় সার্বিক অবস্থা মনিটরিং করছেন, সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কর্মকর্তারা। বৃহস্পতিবার দুুপুর ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত কোয়ারী এলাকা পরিদর্শন করেন, সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসাইন ও সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের (এডিসি) রেবিনিউ আসলাম উদ্দিন। এ সময় তাদের সাথে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অতিরিক্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেজবাহ উদ্দিন, কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম।
এ সময় তারা গত ২ দিন থেকে পরিবেশ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহযোগিতায় গত শুকনো মৌসুমে কোয়ারী থেকে উত্তোলনকৃত মজুদকৃত পাথরের স্তুপ মাপযোগ সহ সার্বিক বিষয় মনিটরিং করেন। পরিদর্শনকালে স্থানীয় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক এমরান হোসাইন ও রেভিনিউ কর্মকর্তা আসলাম উদ্দিন বলেন, প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে দেশের সমস্ত পাথর কোয়ারীগুলো থেকে পাথর উত্তোলন, পরিবহন ও বিপনন সহ ইজারা প্রক্রিয়া একেবারে বন্ধ রয়েছে। ভবিষ্যতেও কোন পাথর মহাল ইজারা দেওয়া হবে না মর্মে সরকারের সিদ্ধান্ত রয়েছে। লোভাছড়া পাথর কোয়ারী এলাকা আমরা পরিদর্শন করে সেখানে কি ধরনের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে এবং কোয়ারীর নির্দিষ্ট এলাকা সহ আশপাশ এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ কেমন রয়েছে তা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। কোয়ারীতে বর্তমানে কতটুকু মজুদকৃত পাথর রয়েছে তা মাপযোগ করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশ ও উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে কয়েকদিনের মধ্যে কোয়ারীতে কি ধরনের কার্যক্রম করা যায় তা আপনারা জানবেন। তবে সাধারন খেটে খাওয়া শ্রমিকরা যাতে করে কর্মহীন হয়ে না পড়েন এজন্য কোয়ারীতে যারা কাজ করে থাকেন তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানেরও চিন্তাভাবনা সরকারের রয়েছে বলেও তিনি আরো জানান।
এদিকে কোয়ারীর সাবেক ইজারাদার মস্তাক আহমদ পলাশ জানিয়েছেন, শুকনো মৌসুমে কোয়ারী থেকে উত্তোলনকৃত বেশির ভাগ পাথর তিনি ব্যবসায়ীদের কাছে রশিদ মূলে বিক্রি করেছেন। করোনা পরিস্থিতি বিরাজ থাকায় উত্তোলনকৃত মজুদকৃত পাথর নৌ-পথে পরিবহন ও বিপননে অচলাবস্থা দেখা দেয়। যার কারনে অনেক পাথর কোয়ারীর নির্দিষ্ট ইজারার মেয়াদ কালীন সময়ে বিক্রি করতে পারেননি। এ নিয়ে তিনি উচ্চ আদালতে মজুদকৃত পাথর পরিবহনের জন্য সময় চেয়ে রীটপিটিশন মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারপ্রতি তাকে ১৫ দিনের সময় দেন। রীটপিটিশন উচ্চ আদালতে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানী থাকাকালীন অবস্থায় কোয়ারীতে মজুদকৃত পাথরের ব্যাপারে প্রশাসনের কোন কার্যক্রম সমীচিন নয় বলে মনে করেন তিনি এবং কোয়ারীতে কোন কার্যক্রম না করার জন্য অনুরোধ জানান। এ সংক্রান্তে একটি লিখিত অভিযোগ সিলেটের জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি দিয়েছেন। এছাড়া পলাশ আরো বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা থাকার পরও কোয়ারী থেকে যারা মজুদকৃত পাথর পরিবহন করছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত আবেদন করেছেন এবং তদন্তক্রমে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য অনুরোধ জানান।
কোয়ারীর অনেক পাথর ব্যবসায়ী জানিয়েছেন কোয়ারীতে অচলাবস্থা বিরাজ করায় তারা গত শুকনো মৌসুমে কোয়ারীর সাবেক ইজারাদার মস্তাক আহমদ পলাশের কাছ থেকে বৈধ রশিদে পাথর ক্রয় করে বর্তমানে তাদের মজুদকৃত পাথর বিক্রির জন্য নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এতে করে তারা বড়ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এদিকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে পাথর কোয়ারী থেকে সব ধরনের পাথর পরিবহন ও বিপননের নিষেধাজ্ঞা জারী থাকায় এ ব্যাপারে পরবর্তীতে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন প্রয়োজন এ নিয়ে গত ৯ জুলাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বারিউল করিম খান খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো (বিএমডি)’র মহাপরিচালক বরাবরে একটি প্রতিবেদন পাঠান। খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মোঃ জাফর উল্লাহ লোভাছড়া পাথর কোয়ারীর সাবেক ইজাদার কর্তৃক হাইকোর্ট ডিভিশনের রীট পিটিশন নং-১২/২০২০ তারিখ-০৩-০৬-২০২০ইং জারীকৃত আদেশ কি অবস্থায় রয়েছে তার আইনগত দিক অবহিত করনের জন্য গত ১৫ জুলাই সলিসিটর (যুগ্ম সচিব), সলিসিটর অনুবিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগকে একটি চিঠি দিয়েছেন। এছাড়া চিঠির অনুলিপির কপি এ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়, হাইকোর্ট বিভাগ, সিনিয়র সচিব জ¦ালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সচিবালয়, সচিব ভারপ্রাপ্ত আইন ও বিচার বিভাগ এবং বিভাগীয় কমিশনার সিলেটকে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..