সিলেট ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:৫৬ অপরাহ্ণ, মে ১২, ২০২০
সিলেট :: আজ বিশ্ব নার্স দিবস।দিবসটিতে সিলেটসহ সারাদেশের নার্সদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি শামীমা নাসরিন ও সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক।
এক শুভেচ্ছা বার্তায় নেতৃবৃন্দ বলেন – মানুষের ধর্ম কি? মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান—এই পরিচয়ে একেকজন হয়তো একের ধর্মের কথা বলবেন। কিন্তু কর্তবের বিচারে মানবজীবনের সবচেয়ে বড় ধর্ম বোধহয় ‘সেবা’। মানুষের সেবা, প্রাণীর সেবা করাই ‘বড় ধর্ম’। আর এই ধর্মের অগ্রণী সৈনিক হলেন নার্সগণ।
আজ ১২ মে। ১৮২০ সালের এই দিনেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন মহিয়সী নারী ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেল। আধুনিক নার্সিংয়ের প্রবর্তক এই নারীর সম্মানার্থেই প্রতি বছর ১২ মে ‘আন্তর্জাতিক নার্সিং ডে (বিশ্ব নার্স দিবস)’ পালন করা হয়।
‘মমতাময় সেবায়, আমরা সর্বদা আপনার পাশে আছি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এবার বিশ্ব নার্স দিবস পালন করা হচ্ছে। এই দিবসে বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল শাখার পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সকল নার্স, নার্সিং কর্মকর্তাসহ সবাইকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।
‘লেডি উইথ দ্য ল্যাম্প’ বলা হয় ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে। সহজভাবে বললে, আলোর মশাল হাতে সারাটা জীবন পথ চলেছেন এই অগ্রণী নারী। তাঁর ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এবার ২০২০ সালকে ‘আন্তর্জাতিক নার্স ও মিডওয়াইফ বর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা নিশ্চয়ই জানি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশে এ বছর ২০২০ সালকে ‘মুজিববর্ষ’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।
আমরা যদি মহান নেতা শেখ মুজিব আর মহিয়সী নারী নাইটিঙ্গেলের জীবনের দিকে তাকাই, তবে স্পষ্ট দেখতে পাই—তাঁরা দুজনই জীবনভর মানুষের কল্যাণে, মানুষের সেবায় কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু নিষ্পেষিত বাঙালি জাতির সেবা করেছেন, নাইটিঙ্গেল অসুস্থ মানুষের সেবাকে ব্রত হিসেবে নিয়েছেন। এ দুই মহান মানুষ ২০২০ সালে এসে সেবার ক্ষেত্রে একই বিন্দুতে দাঁড়িয়ে যেন বলছেন, ‘মানুষের সেবা করো, এর চেয়ে মহৎ কাজ আর হতেই পারে না।’
খুব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। করোনাভাইরাস আমাদেরকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে। এই সংকটময় সময়ে নার্সিং পেশার সাথে জড়িত সবার দায়িত্ব অনেক বেশি। সেবার মনোভাব নিয়ে সেই দায়িত্ব সুচারুভাবে পালন করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের নার্সিং পেশায় জড়িত সবাই। বর্তমান সরকারও এক্ষেত্রে নার্সদের পাশে দাঁড়িয়েছে। চলতি মাসেই দেশে ৫ হাজার ৫৪ জন নার্সকে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে তাদেরকে পদায়ন করা হয়েছে। সামনে আরো কয়েক হাজার নার্স নিয়োগ দেওয়া হবে। করোনার দুঃসময়ে নার্সদের জন্য এটা নিঃসন্দেহে আনন্দের সংবাদ।
এবার বিশ্ব নার্স দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেছেন, ‘নার্সিং সেবা খাতকে উন্নত করার গভীর ইচ্ছে ছিল আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের। তিনি একে সমাজে একটি মর্যাদাপূর্ণ পেশায় পরিণত করার চেষ্টা করেন।’ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, আন্তর্জাতিক নার্স ও মিডওয়াইফ বর্ষ নার্সিং এবং মিডওয়াইফারিদের সামাজিক অবস্থান বাড়িয়ে দিয়ে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করতে বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।’
আমরা যারা নার্সিং পেশায় জড়িত, তারা দেশের মমতাময়ী প্রধানমন্ত্রীর বাণীর সাথে সর্বোতভাবে একমত পোষণ করি। বঙ্গবন্ধু নার্সিং পেশাকে সমাজে মর্যাদাপূর্ণ পেশায় পরিণত করার যে স্বপ্ন নিয়ে কাজ করেছিলেন, তাঁরই কন্যা শেখ হাসিনার হাত ধরে সে স্বপ্ন বাস্তবায়িত হয়েছে। সমাজে এখন নার্সরা শ্রদ্ধার সাথে অবস্থান করছেন।
নার্সিং পেশার এই অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে—বিশ্ব নার্স দিবসে এমনটাই প্রত্যাশা। একইসাথে করোনাভাইরাস পরাজিত হয়ে একটি মহামারিহীন নতুন পৃথিবী আমরা শিগগিরই দেখতে পাবো, সেই প্রত্যাশাও সর্বাগ্রে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd