ছাতকের টেংরাটিলার দুর্ঘটনায় ৮ হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ১০:৪৩ অপরাহ্ণ, মে ৩, ২০২০

ছাতকের টেংরাটিলার দুর্ঘটনায় ৮ হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে বাংলাদেশ!

Manual5 Ad Code

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুনামগঞ্জের ছাতকের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্রে ২০০৫ সালের ৭ জানুয়ারি ও ২৪ জুন দুই দফা প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। বিশাল এই দুর্ঘটনার কারণে মজুদ গ্যাস পুড়ে যায়। ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় আশপাশের সম্পদের । বিস্ফোরণের ঘটনায় কানাডিয়ান বহুজাতিক তেল-গ্যাস কোম্পানি নাইকোর কাছে ৭৪৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে পেট্রোবাংলা। পরে বিষয়টি গড়ায় আন্তর্জাতিক মামলায়।

Manual8 Ad Code

নাইকোর বিরুদ্ধে করা মামলায় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। আর এ বিষয়ে দেওয়া রায়ে নাইকোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ব্রিটেনের লন্ডনে বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তিসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সালিসি আদালত (ইকসিড)

রবিবার (৩ মে) দুপুরে বিদ্যুৎ, জালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ নিজ বাসভবন থেকে ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব তথ্য দিয়েছেন।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ইকসিডের রায়ের ফলে নাইকোর দাবি করা পাওনা আর পরিশোধ করতে হবে না বাংলাদেশকে। এছাড়া ব্লক ৯ বা কুমিল্লার বাঙ্গুরায় নাইকোর সম্পত্তিও বাংলাদেশ নিয়ে নিতে পারবে।

Manual5 Ad Code

নসরুল হামিদ বলেন, ট্রাইবুনাল নাইকোকে অভিযুক্ত করে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছে। আশা করা হচ্ছে ক্ষতিপূরণ বাবদ বাংলাদেশ নাইকোর কাছ থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবে।

সংবাদ সম্মেলনে নসরুল হামিদ অভিযোগ করেন, নাইকোর সঙ্গে রাষ্ট্রীয় তেল গ্যাস কোম্পানি বাপেক্সের সঙ্গে চুক্তি করতে বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব ঘুষ নিয়েছিলেন। এ ঘুষ প্রক্রিয়ার সঙ্গে তারেক রহমান, তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ গিয়াস আল মামুন যুক্ত ছিলেন। বাপেক্সের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদায় জিয়ার সম্পর্ক রয়েছে।

সূত্র জানায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেই শুনানিতে আন্তর্জাতিক আদালতের এই রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ যে ক্ষতিপূরণ পাবে, তার চূড়ান্ত পরিমাণ নির্ধারণ হতে পারে।

প্রসঙ্গত, দরপত্র ছাড়াই ছাতকসহ কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ সরকারকে একটি প্রস্তাব দেয় নাইকো। জ্বালানি বিভাগ এ প্রস্তাব যাচাই-বাছাই করে তিনটি নির্দেশনা দেয়।

এতে বলা হয়, বাপেক্স এবং নাইকো যৌথভাবে সমীক্ষা করে প্রান্তিক গ্যাসক্ষেত্র নির্ধারণ করবে। এর পর উন্মুক্ত দরপত্র আহ্বান করা হবে। দরপত্রে কেউ নাইকোর চেয়েও আকর্ষণীয় প্রস্তাব দিলে তারাই গ্যাসক্ষেত্র ইজারা পাবে।

Manual7 Ad Code

এ ব্যাপারে বাপেক্স মত দেয়, ছাতককে প্রান্তিক গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণার সুযোগ নেই। কারণ সেখানে কোনো গ্যাসই তোলা হয়নি।

অন্যদিকে, তৎকালীন আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদের আইনি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান মওদুদ আহমদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট মত দেয়, ছাতককে প্রান্তিক গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে ঘোষণা করা যায়। সরকার এই মত আমলে নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়।

এরপর ছাতকের টেংরাটিলা গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নে ২০০৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নাইকোর সঙ্গে চুক্তি করে বাপেক্স। দুর্ঘটনার কারণে মজুদ গ্যাস পুড়ে যায়। আশপাশের সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ জন্য নাইকোর কাছে ৭৪৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে পেট্রোবাংলা, যা দিতে নাইকো অস্বীকৃতি জানায়। ক্ষতিপূরণ আদায়ে পেট্রোবাংলা নাইকোর বিরুদ্ধে ২০০৭ সালে স্থানীয় নিম্ন আদালতে মামলা করে।

নাইকো ২০১০ সালে ছাতক গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় তারা দায়ী নয় মর্মে ঘোষণা চেয়ে ইকসিডে একটি সালিসি মোকদ্দমা দায়ের করে। ২০১৬ সালে বাপেক্স আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে গঠিত একটি কমিটির মাধ্যমে একটি সমীক্ষা পরিচালনা করেন। এতে নাইকোর কাছে বাপেক্স ১১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশ সরকার ৮৯৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে ইকসিডে নালিশ করা হয়।

Manual8 Ad Code

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..