সিলেট ২৩শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৭ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৩৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২০
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দেশজুড়েই স্থবির অবস্থা, যান চলাচলে বিধিনিষেধ। সন্ধ্যার পর থেকে লোক চলাচলেও মানা। কিন্তু জীবনের চাকা তো আর বিধিনিষেধ মানে না। একটি জীবনের আগমনী বার্তা করোনাকালের এই দুঃসময়ে উদিগ্ন করে তোলে তাদের। রোববার রাত তখন সাড়ে ১১টা। হঠাৎই প্রসবব্যথা উঠে মৌলভীভাজারের শ্রীমঙ্গল উ পজেলার উত্তরসুর এলাকা রঞ্জিত দাসের স্ত্রী শিল্পী রানী পালের। অবস্থা খারাপ হওয়ায় হাসপাতালে নেওয়া ছাড়া কোনো গতি নেই। এমনিতেই গভীর রাত,তার উপর করোনার এই দুঃসময়। কী করে তাকে নেওয়া হবে হাসপাতালে। কোনো পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন সন্তানসম্ভবা ওই নারীর স্বজনরা। একজন পরামর্শ দিলেন শ্রীমঙ্গল র্যাবের কমান্ডার মো. শামীম আনোয়ারকে ফোন দেওয়ার জন্য। তিনি নাকি বিপদে পড়া মানুষদের সহায়তা করেন। ফোন নম্বরও যোগাড় হয় শামীম আনোয়ারের। নাম্বারটি যোগাড় করে দেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের ছেলে রাজু। মধ্য রাতে কল যায় শামীম আনোয়ারের মোবাইল ফোনে।
রাত তখন ১২টা। এএসপি মো. শামীম আনোয়ার তখন টহলে। কল আসে তার মোবাইল ফোনে। বিস্তারিত শুনে তিনি গাড়ি নিয়ে ছুটে যান অসহায় ওই পরিবারের কাছে, উপস্থিত হন মানবতার দূত হয়ে। তিনি নিজেই ধরে গাড়িতে তুলেন শিল্পী রানী। হাসপাতালে পৌছার পর নিজেই কোলে করে ভেতরে নিয়ে যান তাকে। দ্রুত ব্যবস্থা করেন অপারেশনের। দুঃসময়ের রাতে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছেন শিল্পী রানী । মা ছেলে দুজনেই ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন শিল্পী রানীর স্বামী রঞ্জিত দাস। তিনি এএসপি শামীম আনোয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমরা ভাবতেই পারিনি এভাবে একটি ফোন কল পেয়ে তিনি ছুটে আসবেন।
এএসপি শামীম আনোয়র ঘটনাটির বর্ণনা দেন এভাবে, আমি তখন রাত্রিকালীন টহল ডিউটিতে। ফোন পেয়ে সেখানে পৌঁছে দেখি প্রসূতি মা-টি খুব সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে আছেন। ব্লিডিং হচ্ছে, প্রসব বেদনাও প্রচণ্ড, কিন্তু বাচ্চা প্রসব হচ্ছে না। গাড়িতে তুলে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। নিচতলা থেকে কোলে করে তিন তলার প্রসূতি ওয়ার্ড পর্যন্ত নিতে নিতে পুরো ইউনিফর্ম প্রসব বেদনার রক্তে ভিজে গিয়েছিলো যদিও, তবুও আমি খুশি। যাঁদের ট্যাক্সের টাকায় দুটো ডালভাত খাই, তাদের প্রয়োজনের মুহূর্তে রেসপন্স তো করতে পেরেছি।
খাগড়াছঢ়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার বড়বিল এলাকার ব্যবসায়ী আবদুল মান্নান ও বিলকিস দম্পতির সন্তান শামীম আনোয়ারের ঝুলিতে মানবতার সেবার এমন গল্প আরো জমা আছে। তর সে গল্পগুলো অনেকের জন্যই প্রেরণার উৎস।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd